‘ওডাফার পেনাল্টি আটকেই বুঝেছিলাম, পারব’
পারতেই হবে! পারবই।
বড় ম্যাচে জোড়া ইস্টবেঙ্গল নায়কের কিস্তিমাত এই তিন শব্দেই!
আর মাঠে তার জের! প্রথম জন ষোলো মাস আগের শোধ তুলে হাসতে হাসতে মাঠ ছাড়লেন। দ্বিতীয় জন রাতারাতি লাল-হলুদ জনতার চোখে ‘জিরো থেকে হিরো’ তাঁর মরিয়া প্রয়াসকে কাজে লাগিয়ে।
মোহালির গুরপ্রীত সিংহ এবং ক্যানবেরার অ্যান্ড্রু বরিসিচ।
শিল্ডের ডার্বি জিতে প্রবাসের ঘরে ফিরলেন ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদের আবেগের জোয়ারে ভাসতে ভাসতে।
২০ নভেম্বর, ২০১১। রবিবারের ম্যাচের আগে সেটাই নৈশালোকে শেষ মোহন-ইস্ট ম্যাচ। সে দিন পেনাল্টিতে লাল-হলুদ গোলকিপার গুরপ্রীত সিংহ সান্ধুকে হারিয়ে হাইভোল্টেজ হাসি মুখে স্টেডিয়াম ছেড়েছিলেন সবুজ-মেরুনের ওডাফা ওকোলি। ডাচ গোলকিপার ফান ডার সর-এর ভক্ত গুরপ্রীত সে দিন ওডাফার পেনাল্টি বাঁচাতে গিয়ে বাঁ দিকে ঝাঁপিয়ে ব্যর্থ হয়েছিলেন।



ভূপতিত ওডাফা। নীচে মোহন-অধিনায়কের মারা পেনাল্টি বাঁচাচ্ছেন গুরপ্রীত।
সে কথা মনে রেখে দিয়েছিলেন। এ দিন ওডাফা যখন পেনাল্টি মারতে যাচ্ছেন তখন সে কথাটাই পইপই করে ‘পঞ্জাব দা পুত্তর’কে মনে করিয়ে দিয়েছিলেন লাল-হলুদের গোলকিপার কোচ অতনু ভট্টাচার্য। তার কয়েক মিনিট পরেই ওডাফাকে বাঁ দিকে মারার জন্য প্রলুব্ধ করে ডান দিকে মারতে বাধ্য করা। আর টাইব্রেকারে গুরপ্রীতের দেশোয়ালি বলজিৎ জয়ের গোল করতেই রিজার্ভ বেঞ্চের দিকে দৌড়ে গিয়ে অতনুকে বলছিলেন, “আমার কাজ শেষ। আবার তোমার কাজ শুরু।”
ড্রেসিংরুমে ফিরে গুরপ্রীতের এই কথা নিয়েই তুমুল হাসাহাসি কোচ-কর্তাদের। ইস্টবেঙ্গলের অন্যতম শীর্ষ কর্তা দেবব্রত সরকার বলছিলেন, “ছেলেটা খুব সরল। ওর শেখার আগ্রহ ওকে অনেক দূর টেনে নিয়ে যাবে।” অতনু তখন টাইব্রেকারে ম্যাচ জিতিয়ে আসা গোলকিপারের মাথায় হাত বুলিয়ে বলছেন, “তোমাকে আরও দূর যেতে হবে।”

লাল-হলুদ উল্লাস। শিল্ড ফাইনালে উঠে।
আর নায়ক স্বয়ং! নিজেদের ড্রেসিংরুম থেকে বেরিয়ে মোহনবাগান ড্রেসিংরুমের দিকে ছোটার মধ্যেই তাঁর বাড়ির পাড়ায় আবির্ভাবে ধুন্ধুমার টেস্ট সেঞ্চুরি করা শিখর ধবনের ‘মুচ’-এর ভক্ত আনন্দবাজারকে বললেন, “সে দিন ওডাফা জিতেছিল। আজ আমি জিতলাম। ওর শট আটকেই নিজেকেই বললাম, সব শট আটকাতে হবে। আজ পারবই।” বলেটলে ধরলেন পিবি ১২ ১৩৯৫ নম্বরের কালো গাড়ির স্টিয়ারিং। গাড়ির ভিতরে তখন রবিন সিংহ, কেভিন লোবো, মননদীপরা। স্টেডিয়ামের এক কর্মীর হাতে গুজে দিলেন একশো টাকার নোট। গাড়ি থেকেই ফোন করলেন মোহালির বাড়িতে বাবা তেজিন্দর সিংহকে। তার পরে টিমমেটদের নিয়ে সটান নিউটাউনের বাড়িতে।
গুরপ্রীত যখন স্টেডিয়াম ছেড়ে বেরিয়ে যাচ্ছেন তখন এ দিন লাল-হলুদকে নাটকীয় ভাবে লড়াইয়ে ফিরিয়ে আনার কারিগর বরিসিচ ড্রেসিংরুম থেকে বেরিয়ে ফের ঢুকলেন মাঠে। তার পর পাঁচ মিনিটের প্রার্থনা। ততক্ষণে তাঁর কোচ মর্গ্যান বলে দিয়েছেন, “ও রকম বিশ্বমানের গোল করলে কোনও দল হারে না।” বরিসিচকে সে কথা মনে করাতেই হাসলেন। তার পর গ্যালারির দিকে তাকিয়ে অস্ট্রেলীয়ের বিস্ময়, “এত লোক! ওদের খুশি করতে পেরে ভাল লাগছে। ওদের জন্য আরও গোল করতে হবে। তা হলেই প্রথম দলে থাকতে পারব। পারতেই হবে।”

ছবি: শঙ্কর নাগ দাস




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.