জনসংস্কৃতির অমূল্য উপাদান
বটতলা
বটতলা কী কেন কবে কোথায় কত দিন, এ সব নিয়ে পণ্ডিত এবং পণ্ডিতম্মন্যদের মাথা ঘামানোর শেষ নেই। বটতলার ছাপাছাপি দুশো বছর ছুঁতে চলল, আর তার খুঁটিনাটি নিয়ে লেখালেখিও কম দিন হল না। বিশেষ করে গত কয়েক বছরে প্রচুর বটতলার বই নতুন করে ছাপা হয়েছে। বটতলার প্রকাশকরা ভাবতেও পারতেন না এমন কাগজ-ছাপা-বাঁধাইয়ে তাঁদের নিয়ে নানা রকম আলোচনাও বই আকারে বেরিয়েছে। এ বিষয়ে সব থেকে বড় আকারের সংকলনটি এ বার হাতে এল, অদ্রীশ বিশ্বাস ও অনিল আচার্য সম্পাদিত বাঙালির বটতলা (অনুষ্টুপ, ৭০০.০০)।
পরিকল্পনা দু’খণ্ডের, আপাতত বেরিয়েছে প্রথমটি। তার পাঁচশো পাতার কলেবরে কী নেই? যেমন দীর্ঘ সাক্ষাৎকারে প্রদীপ বসু: ‘এখন বোঝা যাচ্ছে, বটতলার যৌনতার ধারণা-সম্পর্কিত বইগুলো আসল বই ছিল, যা সাপ্রেস করা উচিত হয়নি’। এবং সুমন্ত বন্দ্যোপাধ্যায়: ‘পপুলার কালচার দিয়েই বিবেচনা ও তার নতুন নতুন সময়ের চিহ্নগুলো দিয়েই আজও বটতলাকে বুঝতে আমি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি।’ বটতলার বইয়ের বাজার, অন্যমুখ, ‘দোভাষী’ সাহিত্য, আদিরসের বই, ‘গুপ্তকথা’, ‘প্রহসন’, মদ্যপান ও বটতলা, বটতলার ছবি, পঞ্জিকা নিয়ে নতুন পুরনো আলোচনার সঙ্গে ‘বটতলার আখ্যাপত্র ও গ্রন্থস্বত্বের নির্মাণ’, সমাজসংস্কার ও বটতলায় ছাপা মেয়েরা, স্বর্ণবাই-বদ্মাএস জব্দ-এলোকেশী বেশ্যার মতো গুরুত্বপূর্ণ বটতলার বই নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা নবীন-প্রবীণ গবেষকের কলমে, সঙ্গে বিস্তর ছবি।
সম্পাদকদ্বয়ের কথায়, উচ্চবর্গের কালচারাল পলিটিক্সের ফলে ‘‘অধিকাংশ লাইব্রেরিতে বটতলা কেনা হয়নি, সংরক্ষণ হয়নি, কলেজ ইউনিভার্সিটিতে রাখা হয়নি, সরকারি প্রতিষ্ঠানে অফিসিয়ালি ঢোকেনি। এই ‘না’ হয়ে থাকার ফলে চর্চাটাও ‘না’ হয়ে গেছে।” বাঙালির জনসংস্কৃতি নির্মাণে বটতলার কী ভূমিকা ছিল, এ বই সেটাই খুঁজতে চেয়েছে। খোঁজার কোনও শেষ নেই, আগ্রহী পাঠক খোঁজার অনেক উপাদান হাতের কাছে পেয়ে গেলেন, এটাই আনন্দের। সঙ্গে প্রচ্ছদ ও ছবি, বই থেকে।

বনান্তরে
“জঙ্গল ছিল আমার চাকরির অঙ্গ। কিন্তু সেটা তথ্যমাত্র। তখন যেমন, আজ অবসরের পরেও ভালবাসার টানে জড়িয়ে আছে জঙ্গল,” বলছিলেন অজিতকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়। বলছিলেন পড়ানোর ফাঁকে ফাঁকে। পাড়ার ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের পড়ান তিনি এখন, উদ্দেশ্য প্রকৃতিকে ভালবাসতে শেখানো। শুধুই প্রকৃতি? “না, মানুষ সে ভালবাসার কেন্দ্রে। জঙ্গলকে বাঁচিয়ে রাখবে জঙ্গলের মানুষই, ভ্রমণবিলাসীরা নয়।” সেই কাজেই দীর্ঘকাল তাঁর চিন্তাভাবনা আর অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়েছেন অজিতবাবু। চিফ কনজারভেটর অব ফরেস্টস ছিলেন, অবসর নিয়েছেন বিশ্বব্যাঙ্কের অরণ্য-পরামর্শদাতা হিসেবে। কিন্তু এখনও, আরণ্যক-এর সত্যচরণের মতোই, অরণ্য তাঁর পিছু ছাড়েনি। শুধু দেখা নয়, নিজের অরণ্য বোঝার অভিজ্ঞতা নিয়ে লিখেছেন মনে বনে বনান্তরে, আনন্দ পাবলিশার্স থেকে সদ্য বেরিয়েছে সে বই। ২১ মার্চ আন্তর্জাতিক বন দিবস উপলক্ষে গোখেল মেমোরিয়াল স্কুলে তিনি বলবেন পরিবেশ আর অরণ্য নিয়ে।

স্মরণ
কলকাতার সঙ্গে তাঁর নাড়ির টান ছিল। সেই যোগসূত্র কখনও ছিন্ন হতে দেননি রবীন্দ্রশঙ্কর চৌধুরী। তাঁর প্রয়াণের পর ইন্ডিয়া গ্রিন রিয়্যালিটি তাঁকে স্মরণ করল এক অভিনব ক্যালেন্ডারে। প্রথম পাতায় ওয়াসিম কপূরের আঁকা শিল্পীর ছবি। তার পর পাতায় পাতায় বিভিন্ন মেজাজের রবিশঙ্কর। রয়েছে অরিজিৎ মৈত্রের সংগ্রহ থেকে বিভিন্ন লং প্লেয়িং রেকর্ডের কভার; তাঁর সুর করা চলচ্চিত্রের ছবি; তাঁর লেখা, তাঁকে নিয়ে লেখা বইয়ের প্রচ্ছদ, বিশিষ্ট জনের কিছু কথা। সরোদবাদক বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত সংক্ষিপ্ত ভূমিকা লিখেছেন। সব মিলিয়ে, ২০১৩ জুড়ে পণ্ডিতজিকে স্মরণ করার চমৎকার উপাদান।

ঘরের মেয়ে
চার বছর বয়সে ‘সঙ্গীত প্রভাকর’ মা-র কাছে গান শেখা শুরু নন্দিতা বসুর। কলকাতায় বড় হওয়া। পড়তেন লরেটোতে। বর্তমানে মুম্বইবাসী। পরে গান শিখেছেন রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী পিসিমা পূরবী মুখোপাধ্যায়ের কাছে। উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতে নাড়া বাঁধেন কালীপদ দাসের কাছে। ভাতখণ্ডে সঙ্গীত বিদ্যাপীঠ থেকে ‘সঙ্গীত বিশারদ’ নন্দিতা পরবর্তীতে পারদর্শী হয়ে ওঠেন ভজন ও গজলে। এ ক্ষেত্রে গুরু প্রথমে রবীন্দ্র জৈনের শিষ্য কমল গঙ্গোপাধ্যায়। পরে স্বয়ং অনুপ জালোটা। বেরিয়েছে অনুপ জালোটার সঙ্গে এক সঙ্গে সিডি অ্যালবাম। শুক্রবার কলামন্দিরে ‘রূপে ও রসে রবীন্দ্রনাথ’-এ গান শোনালেন ঘরের মেয়ে নন্দিতা, মিউজিক ২০০০-র পরিবেশনায়। প্রকাশ পাবে সিডি-ও।

রসচর্চা
বিভূতিভূষণ মুখোপাধ্যায়কে ‘বরযাত্রী’ পড়ে উচ্ছ্বসিত হয়ে বলতে যাওয়ায় হিমানীশ গোস্বামীর উৎসাহে জল ঢেলে তিনি বলেছিলেন ‘আমার অন্য কোনও বই কি তোমার পড়া নেই?’ হিমানীশের মনে হয়েছিল, বাঙালি লেখকেরা হাস্যরসের স্রষ্টা হিসেবে পরিচিতি চান না। তাঁর বরাবরই মনে হত রসের কারবারিদের সম্মান দিতে বড়ই অনীহ এই বঙ্গসমাজ। ফলে তাঁদের গোস্বামী পরিবার থেকেই সম্মানিত করা উচিত রসস্রষ্টাদের। অতএব কুড়ি বছর অন্তরালে থাকা ওঙ্কার গুপ্তের হাতে তুলে দেওয়া হবে ‘হিমানীশ গোস্বামী রসচর্চা পুরস্কার’, প্রয়াণের পর হিমানীশেরই প্রথম জন্মদিনে, ১৮ মার্চ বাংলা আকাদেমি সভাঘরে, সন্ধে ৬টায়। তাঁর আর পিতা পরিমল গোস্বামীর লেখালেখির সময়কাল প্রায় শতবর্ষ ছুঁতে চলল, সে উপলক্ষে সে সন্ধ্যায় ‘পরিমল গোস্বামী স্মারক বক্তৃতা’ দেবেন সুধীর চক্রবর্তী, বিষয়: রবীন্দ্রসঙ্গীতের অভিমুখ। প্রকাশ পাবে পরিমল গোস্বামীর বনপথের পাঁচালী (সপ্তর্ষি)। উদ্যোগে হিমানীশ গোস্বামী স্মরণ সংসদ।

নিবেদন
কাজি অনিরুদ্ধের বাজনা শুনে ছোট্ট কাজি অরিন্দম গিটারকে ভালবাসতে শেখেন। বাবার কাছেই হাতেখড়ি। কিন্তু সে শিক্ষায় ছেদ পড়ল বাবার অকাল প্রয়াণে। অনেকটা একলব্যের মতোই রেকর্ডে বাবার নানা ধরনের বাজনা শুনে শুনে শিখতে লাগলেন অরিন্দম। পনেরো বছর বয়সে প্রথম রেকর্ড-প্রকাশ। তার পরে জয়যাত্রার শুরু। এইচএমভি (সারেগামা)-সহ নানা কোম্পানি থেকে হাওয়াইয়ান গিটারে তাঁর বাজানো বাংলা ও হিন্দি গানের সুর জনপ্রিয়তার চূড়ায় পৌঁছায়। দেশ-বিদেশ ছড়িয়েছে সে খ্যাতি। তবু আড়ালে থাকতেই চান শিল্পী। অনুষ্ঠানও বেশি করেন না। তেমনই একটি একক অনুষ্ঠান, দীর্ঘকাল পরে, রবীন্দ্রসদনে, ২৩ মার্চ বিকেল পাঁচটায়। অনুষ্ঠানটি কাজি অনিরুদ্ধের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি হিসেবে নিবেদিত।

উদ্যোগ
খেতে গিয়ে গলায় আটকাল, বা হঠাৎই একটি বাচ্চা অজ্ঞান হয়ে গেল। এ রকম বিপদ তো স্কুলে হয়েই থাকে। তখন কী করবেন, জানেন না অনেকেই। হাত কেটে গেলে হাতটা কি ঝুলিয়ে রাখতে হবে না কি উঁচু করে তুলে রাখা হবে, হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার আগে কী করবেন এ নিয়ে তৈরি হয় বিভ্রান্তি। সে জন্যই এগিয়ে এসেছে সল্টলেকের কলম্বিয়া এশিয়া হাসপাতাল। শহরের বেশ কিছু স্কুলে গিয়ে ওদের ডাক্তাররা শেখাবেন জরুরি অবস্থায় ঠিক কী করা উচিত। শেখানো হবে কার্ডিয়ো পালমোনারি রিসাসিটেশনও (সিপিআর)। প্রতিটি স্কুল থেকে কয়েক জনের স্বেচ্ছাসেবী দল তৈরি করা হবে। নিখরচায় তাঁদের নিয়মিত প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।

পুতুল নাটক
ফুলের মতো নিষ্পাপ শিশু পারিপার্শ্বিকের চাপে পরিণত হয় দৈত্যে। এ নিয়েই পুতুল নাটক ‘দত্যিদানা’ তৈরি করেছেন সুরেশ দত্ত। ডলস থিয়েটারের সুদীপ গুপ্তের ভাবনায় নতুন রূপে শকুন্তলা, ‘পদ্মগাথা’য়। এ সব দিয়েই পালিত হবে ২১ মার্চের বিশ্ব পুতুল নাটক দিবস। আন্তর্জাতিক সংগঠন ইউনিমা’র ভারতীয় শাখা দেশ জুড়ে পালন করে দিনটি, পুতুল নাচ জনপ্রিয় করতে। ও দিকে ধূমকেতু পাপেট থিয়েটার সারা বছর লোকশিক্ষার কাজ করে পুতুল নাচের মাধ্যমে। ১৯-২১ মার্চ ওঁদের আয়োজন বালিগঞ্জ শিক্ষাসদন হলে। প্রথম দিন দত্যিদানা। ২১ মার্চ মধূসুদন মঞ্চে পদ্মগাথা, সন্ধে ছ’টায়। উপস্থিত থাকবেন মনোজ মিত্র ও অনুপ মতিলাল। এ বারের ‘সূত্রধার’ সম্মান জানানো হবে পুতুল নাচ শিল্পী প্রফুল্ল কর্মকারকে।

শিকড়
লোকসংস্কৃতি ও লোকশিল্পীদের জন্য প্রায় এক দশক ধরে কাজ করছে এইম (আর্ট ইলিউমিনেটস ম্যানকাইন্ড)। ওদের মেলা ‘কারিগরি হাট’ যথেষ্ট সাড়া জাগিয়েছে। দক্ষিণাপনে রয়েছে নিজস্ব বিপণি। এ বারে ওরা উদ্যোগী ‘রুটস’ নামে নিজস্ব প্রকাশনায়। প্রথমে পাঁচটি বই: দীপক বিশ্বাসের কাঁসাশিল্প, লীনা চাকির লোকগান, দিব্যজ্যোতি মজুমদারের ভারতের আদিবাসী লোককথা, বিধান বিশ্বাসের আলপনার অঙ্গনে এবং শুভ জোয়ারদারের বঙ্গদেশের পুতুল নাট্যকলা, বুধবার বিকেল ৩টেয় প্রকাশ অনুষ্ঠান জীবনানন্দ সভাগৃহে। থাকবেন পল্লব সেনগুপ্ত ও সুহৃদকুমার ভৌমিক। দ্বিতীয় পর্বে দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও দুই মেদিনীপুরের শিল্পীদের পুতুলনাচ। ভ্রমরা দীর্ঘকাল বাংলার লোকগানের চর্চায় রত। তাদের উপস্থাপনায় মৈমনসিংহ গীতিকা অবলম্বনে ‘মলুয়া’ গীতিনাট্য রবীন্দ্রসদনে ১৯ মার্চ সন্ধে সাড়ে ছ’টায়। অখিলবন্ধু ঘোষের স্মৃতিকে জাগিয়ে রেখেছে তাঁরই নামাঙ্কিত স্মৃতি সংসদ, আশুতোষ মেমোরিয়াল হলে ২০ মার্চ সন্ধে ছ’টায় তাদের অনুষ্ঠান ‘সারাটি জীবন কী যে পেলাম’।

স্বজন
থিয়েটারে অর্থানুকূল্যের বড়ই অভাব, দারিদ্র নিত্যসঙ্গী। কিন্তু থিয়েটারের লোকজনের মনে বৈভবের কোনও অভাব নেই, অকৃপণ ভাবে তাঁরা পাশে দাঁড়ান বিপন্ন মানুষের, এমনকী সৎ কাজে রত বিপন্ন সংগঠনেরও। বলছিলেন রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্ত, উপলক্ষ অ্যাকাডেমিতে ২০-২২ মার্চের নাট্যোৎসব। সামাজিক কর্মে নিবেদিত ব্যক্তি ও সংগঠনের সম্মানে এ নাট্যোৎসবে যুক্ত থাকছে নান্দীকার, বালিগঞ্জ স্বপ্নসূচনা ও দৃশ্যপট, তাদের তিনটি প্রযোজনা নিয়ে ‘মাধবী’, ‘বেলাশেষে কোলাহল’ ও ‘অয়দিপউস’। আয়োজনে ভবানীপুর স্বজন, এ-সংগঠনটি তৈরিই হয়েছিল থিয়েটারের নেপথ্যকর্মীদের সাহায্যার্থে, এ ছাড়াও আর্ত মানুষ বা সংগঠনেরও তারা স্বজন। সঙ্গে ‘মাধবী’-তে রুদ্রপ্রসাদ।

পথিকৃৎ
১৯৫৯-এ তাঁর প্রথম ছবি। প্রচলিত মূল্যবোধ থেকে সামাজিক বৈষম্য সব কিছুর বিরুদ্ধাচরণেই চেনা যেত তাঁকে: জাপানি নবতরঙ্গ সিনেমার পথিকৃৎ নাগিসা ওশিমা (১৯৩২-২০১৩)। তাঁর সৃষ্টি নিয়ে বলবেন সঞ্জয় মুখোপাধ্যায়, ১৯ মার্চ বিকেল সাড়ে পাঁচটায় নন্দনে, দেখানো হবে ওশিমার ‘ডেথ বাই হ্যাঙ্গিং’ আর ‘বয়’। ওখানেই ২২ মার্চ পঞ্চাশ বছর পূর্তি উপলক্ষে অজয় করের দু’টি ছবি, ‘বর্ণালী’ ও ‘সাত পাকে বাঁধা’। সুচিত্রা সেন অভিনীত শেষেরটি মুক্তি পেয়েছিল ’৬৩-র ২২ মার্চেই, শ্রী প্রাচী ইন্দিরা প্রেক্ষাগৃহে।

ছায়াময়
ছেলেবেলায় চাঁদের পাহাড় পড়তে পড়তে মনে মনেই ঢুকে যেতাম সেই রোমাঞ্চকর অভিযানে। শুধু কি চাঁদের পাহাড়! সত্যজিৎ-শীর্ষেন্দুর রোমাঞ্চকর সব গল্পেও।’ বলছিলেন গৌরব চক্রবর্তী। সেটাই এ বার বাস্তবে। তবে অভিনয়ে! লন্ডনের লাইব্রেরিতে কাজ করতে গিয়ে ইন্দ্রপ্রতাপ খুঁজে পেয়েছিলেন এমন কিছু, যাঁর সন্ধানে তিনি এসে পড়েন শিমুলগড় গ্রামে। গগন সাঁপুইয়ের বাড়িতে সে জিনিসের সন্ধান করতে গিয়ে চোর বলে ধরা পড়েন। চোরের ব্যাগে কী আছে, আর চোরের কপালেই বা কী আছে, এই নিয়েই মত্ত পুরো গ্রাম। ইন্দ্রপ্রতাপকে উদ্ধারে এগিয়ে আসে অশরীরী ‘ছায়াময়’। চোর-ভূত-গুপ্তধন এ সব নিয়েই শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের উপন্যাস অবলম্বনে হরনাথ চক্রবর্তীর নতুন ছবি ছায়াময়। মুখ্য চরিত্রে গৌরব। ‘বোলপুরের প্রচণ্ড গরমে সকাল থেকেই কালি মেখে বসে থাকতে হত। কষ্ট হলেও বেশ রোমাঞ্চ লাগত। আর সিনিয়র সব অভিনেতার সঙ্গে কাজ। সেটাও বড় পাওনা।’ বড় পর্দায় বাবার সঙ্গেও এটাই তাঁর প্রথম ছবি। ছবি করতে গিয়েই আলাপ শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে। ওঁর থেকে কোনও পরামর্শ? ‘না, আমি পরিচালকের নির্দেশকে অনুসরণ করে গিয়েছি। তবে শীর্ষেন্দুবাবু বললেন, আমার অভিনয় ওঁর ভাল লাগে। এর থেকে ভাল আর কী হতে পারে!’ ২২ মার্চ মুক্তি পাবে ছবিটি।

শিল্পী
সালটা ১৯৪২। রিভার্স টমসন স্কুলের পুরস্কার বিতরণী উৎসবে সব ব্যবস্থা হলেও, উদ্বোধনী সংগীত গাইবার শিল্পী ঠিক হয়নি। ডাক পড়ল বালি এম ই ইস্কুল থেকে এসে নতুন ভর্তি হওয়া ছেলেটির। মাস্টারমশাই কালীধন মুখোপাধ্যায়ের আদেশ পালন করতে সংগীতশিক্ষক তিনকড়ি বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে গান শিখে উৎসবের দিন রবীন্দ্রনাথের ‘একটি নমস্কারে প্রভু’ সকলের সামনে প্রথম গাইলেন। সেই ছেলেটি সনৎ সিংহ। দেবেন্দ্রনাথ ও ননীবালা-র ছোট ছেলের জন্ম ২০ চৈত্র ১৩৩৬ বঙ্গাব্দ, বালির গোস্বামীপাড়ায়। দশম শ্রেণিতে পড়ার সময় জওহরলাল সরখেল-এর উৎসাহে ধনঞ্জয় ভট্টাচার্যের সান্নিধ্যে আসেন। পরে তিনিই উচ্চাঙ্গ সংগীতের জন্য চিন্ময় লাহিড়ীর কাছে নিয়ে যান। ১৯৪৫-এ আকাশবাণীর পরীক্ষায় পাশ করে বেতারে নিয়মিত শিল্পী। ধনঞ্জয়বাবুর দাদা প্রফুল্লবাবুর উৎসাহে ‘মেগাফোন কোম্পানি’ থেকে প্রথম বেসিক গানের ডিস্ক ‘মাটির বুকেতে নাহি প্রেম’ ও ‘জানি জানি হৃদয়ের ভালবাসা’। ১৯৫১-য় এইচএমভি থেকে ‘অহল্যা কন্যা’ ও ‘বেহুলা বউ’-এর রেকর্ড বেরোয়। ‘সাড়ে চুয়াত্তর’-এ মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায়, শ্যামল মিত্রের সঙ্গে গানের দৃশ্যে অভিনয়। আধুনিকের পাশাপাশি মানুষের মনে স্থায়ী জায়গা করে নিয়েছেন ছড়ার গানে ‘সরস্বতী বিদ্যেবতী’, ‘এক এক্কে এক’, ‘বাবুরাম সাপুড়ে’, ‘বলতে পারিস মা পুজোর ছুটির পরেই কেন পরীক্ষা আসে’ প্রভৃতি। ঝুমুর, ভাটিয়ালির মতো লোকগানও গেয়েছেন। দেশবিদেশে বহু অনুষ্ঠান করেছেন। বর্তমানে অসুস্থ শিল্পী বেলুড় শ্রমজীবী হাসপাতালে ভর্তি। চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করা ছাড়া মাসিক ১০,০০০ টাকা সরকারি অনুদান। পুরস্কার বলতে শুধু সঙ্গীত অ্যাকাডেমি। ওঁর নিশ্চয়ই আর একটু সম্মান প্রাপ্য।
   

Content on this page requires a newer version of Adobe Flash Player.

Get Adobe Flash player


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.