উত্তেজনা ঝাড়গ্রামে
লরির ধাক্কায় জখম, ভাঙচুর
করিক লোহা বোঝাই লরির ধাক্কায় চার সাইকেল আরোহীর জখম হওয়াকে কেন্দ্র করে সোমবার দুপুরে উত্তেজনা ছড়াল পুরনো ঝাড়গ্রাম এলাকার সাবিত্রী মন্দির মোড়ে। উত্তেজিত জনতা সাতটি লরিতে ভাঙচুর চালায়। ঘটনার জেরে ৫ নম্বর রাজ্য সড়কের লোধাশুলি-ঝাড়গ্রাম রুটে যানবাহন চলাচল ব্যাহত হয়। ঝাড়গ্রামের এসডিপিও সন্তোষ মণ্ডলের নেতৃত্বে পুলিশি হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়। সোমবার সকাল সাড়ে এগারোটা নাগাদ দু’টি সাইকেলে থাকা চার জন আরোহীকে ধাক্কা মারে একটি লরি। ছিটকে পড়া এক সাইকেল আরোহীর ডান পায়ের উপর দিয়ে লরিটি চলে যায়। শম্ভু চৌধুরী নামে ওই যুবককে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঝাড়গ্রাম জেলা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। শম্ভুর বাড়ি শহরের রঘুনাথপুরে। বাকি তিন জনকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয়। উত্তেজিত জনতা লরিটিকে আটক করেন। ওই সময়ে আরও গোটা ছয়েক আকরিক লোহা বোঝাই লরি এসে পড়লে সেগুলিকেও আটকে দেন এলাকাবাসী। উত্তেজিত জনতা লরিগুলিতে ভাঙচুর শুরু করে। ইতিমধ্যে এসে পৌঁছয় পুলিশ। আসেন ঝাড়গ্রামের ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট ইন্দ্রদেব ভট্টাচার্য। পুলিশ ও প্রশাসনিক স্তরে উপযুক্ত পদক্ষেপের আশ্বাস দেওয়ার পর পরিস্থিতি শান্ত হয়। দুপুর আড়াইটে নাগাদ লরিগুলিকে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। ভাঙচুরের জেরে চারটি লরির তেলট্যাঙ্ক ও ব্যাটারি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায়, ওই চারটি লরিকে অবশ্য ক্রেনের সাহায্যে নিয়ে যাওয়া হয়।
ভাঙচুর হওয়া সেই লরি।—নিজস্ব চিত্র।
রেলপথে আকরিক লোহা আসে ঝাড়গ্রাম শহরের কদমকানন এলাকার রেলওয়ে সাইডিং-এ। ঝাড়গ্রামের কয়েকটি স্পঞ্জ আয়রন কারখানার জন্য কাঁচামাল হিসেবে ওই আকরিক লোহা ব্যবহৃত হয়। রেলওয়ে সাইডিং থেকে লরিতে করে আকরিক লোহা নিয়ে যাওয়া হয় ওই কারখানাগুলিতে। অভিযোগ, অত্যন্ত বেপরোয়া ভাবে মালবাহী লরিগুলি যাতায়াত করে। পুরনো ঝাড়গ্রামের সাবিত্রী মন্দির মোড়ের কাছে ৫ নম্বর রাজ্য সড়কটির বাঁক রয়েছে। ওই এলাকায় এর আগে আকরিক লোহা বোঝাই লরি ও ডাম্পারের ধাক্কায় একাধিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। লরিগুলি বহন ক্ষমতার চেয়েও বেআইনি ভাবে বেশি মাল নিয়ে যায়। মালবাহী অনেক লরিরই বৈধ পারমিট নেই বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ। আগে প্রশাসনিক স্তরে সিদ্ধান্ত হয়েছিল, মালবাহী লরিগুলি বাইপাস রাস্তা দিয়ে যাবে। কিন্তু উপযুক্ত বাইপাস রাস্তা তৈরি না-হওয়ায় লরিগুলি রাজ্যসড়কের জনবহুল এলাকাটি দিয়েই যাতায়াত করে। এরপর প্রশাসনিক নির্দেশে বলা হয়েছিল, ব্যস্ত সময়ে লরিগুলি রাজ্যসড়কের ওই অংশে যাতায়াত করবে না। কিন্তু, সেই নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করেই লরিগুলি যাতায়াত করছে বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ।
ঝাড়গ্রাম ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক গোবিন্দ সোমানি বলেন, “রাস্তায় গাড়ি চললে দুর্ঘটনা ঘটতেই পারে। তার জন্য আইন আছে। কিন্তু এ দিন পুরনো ঝাড়গ্রাম এলাকার কিছু লোকজন উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে পর পর লরিগুলিতে হামলা চালায়। চালক-খালাসিদের মারধোর করা হয়।” গোবিন্দবাবুর বক্তব্য, “লরিগুলি যদি বেআইনি ভাবেই চলাচল করে তবে তা দেখার কথা প্রশাসনের। এলাকাবাসী কখনই আইন নিজের হাতে তুলে নিতে পারেন না।” ঝাড়গ্রামের মহকুমাশাসক বাসব বন্দ্যোপাধ্যায়ের আশ্বাস, “পুলিশ ও পুরসভা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সমস্যা সমাধানে উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হবে।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.