শিবির পর্যাপ্ত নয়, ধানের অভাবী বিক্রি চলছেই পূর্বে
ভাবী বিক্রি রুখতে এ বার আগেভাগেই শিবির করে ধান কেনা শুরু করে দিয়েছিল খাদ্য দফতর। ধান কেনার সহায়ক মূল্য বাড়ানোও হয়েছিল। কিন্তু প্রয়োজনীয় সংখ্যায় শিবির না-হওয়ায় অভাবী বিক্রি চলছেই পূর্ব মেদিনীপুরে।
গত নভেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে ধান কেনা শুরু হলেও এখনও পর্যন্ত জেলায় মাত্র ৪৪ হাজার মেট্রিক টন ধান কিনেছে সরকার। লক্ষ্যমাত্রা যেখানে ১ লক্ষ ৫৭ হাজার মেট্রিক টন। পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি মামুদ হোসেন এই সমস্যার কথা স্বীকার করে বলেন, ‘‘ধান কেনার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থের যোগান কম হওয়ায় কিনতে সমস্যা হচ্ছে। আরও অর্থের জন্য রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন করা হয়েছে।”
জেলা কৃষি ও খাদ্য দফতরের হিসাব অনুযায়ী, পূর্ব মেদিনীপুরে এ বার আমন ধানের চাষ হয়েছে প্রায় ২ লক্ষ ৬৩ হাজার ১৬৫ হেক্টর জমিতে। উৎপাদন হয়েছে প্রায় ৮ লক্ষ ৬০ হাজার ৭৩০ মেট্রিক টন। ময়নার বাকচা গ্রামের কৃষক শোভন ভঞ্জ বলেন, ‘‘আমার ৮ বস্তা ধান রয়েছে বিক্রির জন্য। বাজারে (৬০ কেজির) বস্তা পিছু ধানের দাম মাত্র ৫০০-৬০০ টাকা। তাই সরকারি সহায়ক মূল্যে ধান বিক্রির জন্য অপেক্ষা করে রয়েছি। কিন্তু আমাদের এলাকায় সরকারি ধান কেনার শিবিরই হয়নি। বোরো চাষের জন্য টাকা যোগাড় নিয়ে চিন্তায় রয়েছি।’’ ময়নার রামচক গ্রামের কৃষক বিকাশ দাস বলেন, ‘‘সরু ও মোটা মিলিয়ে ১২ বস্তা ধান বিক্রির জন্য রেখেছি। কিন্তু আমাদের এলাকায় সহায়ক মূল্যে ধান কেনার শিবিরই হয়নি।”
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বছরও চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি পূর্ব মেদিনীপুর জেলায়। গতবার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছিল ৯৩ হাজার ৭০০ মেট্রিক টন। আর সংগ্রহ হয়েছিল ৮২ হাজার ৩৩৫ মেট্রিক টন। জেলা খাদ্য দফতরের এক আধিকারিক জানান, গত বছর জেলায় ধান কেনার কাজ দেরিতে শুরু হওয়ায় কিছুটা সমস্যা হয়েছিল।. তাই চলতি বছর কৃষকরা মাঠ থেকে আমন ধান তোলার পরই ধান কেনার প্রস্তুতি নেওয়া হয়। রাজ্য সরকারের অধীনস্থ অত্যাবশ্যকীয় পণ্য সরবরাহ নিগম, বেনফেড, কনফেড, নাফেড, এনসিসিএফ প্রভৃতি সংস্থাকে সমবায়ের মাধ্যমে ধান কেনার দ্বায়িত্ব দেওয়া হয়। এ ছাড়াও জেলায় ছোট-বড় মিলিয়ে ৩৪টি চালকলকে শিবির করে ধান কেনার দ্বায়িত্ব দেওয়া হয়। সরকারি ভাবে গত ২৬ নভেম্বর থেকে জেলায় ধান কেনা শুরু হয়। কিন্তু জানুয়ারি শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত জেলায় ধান কেনা হয়েছে মাত্র ৪৪ হাজার মেট্রিক টনের মতো। ফলে ধান কেনার গতি ও সদিচ্ছা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
প্রয়োজনীয় সংখ্যায় শিবিরও হচ্ছে না বলে অভিযোগ। কৃষক ও খেতমজুর সংগঠনের জেলা সম্পাদক নন্দ পাত্রের অভিযোগ, ‘‘জেলার বিভিন্ন এলাকায় কৃষকরা সরকারের কাছে আমন ধান বিক্রির জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু ধান কেনার শিবির হচ্ছে না। ফলে বোরো ধান চাষের জন্য টাকা জোগাড় করতে হিমশিম খাচ্ছেন কৃষকেরা।”
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বছর জেলার ৭৬টি সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতির মাধ্যমে ধান কেনার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। এই বছর প্রায় ১৭০টি সমবায় সমিতির মাধ্যমে ধান কেনার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত মাত্র ৪৪টি সমবায় সমিতি ধান কেনার শিবির করেছে। অধিকাংশ সমবায় সমিতিই শিবির করেনি। সমবায় কর্তারাও অবশ্য এর জন্য আর্থিক সমস্যাকেই দায়ী করছেন।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.