পাভলভ
মেঝেতেই ঠাঁই ৬২ জন মানসিক রোগীর
দালতের রায়ে রোগীকে ফেরানো নিষেধ। এ দিকে, হাসপাতালে রোগী রাখার জায়গা নেই। অগত্যা মেঝেতেই ঠাঁই। রাজ্যের অধিকাংশ সরকারি হাসপাতালে এটাই চেনা ছবি। কিন্তু পাভলভ মানসিক হাসপাতালের মহিলা ওয়ার্ডে এই ছবিটাই মারাত্মক আকার নিয়েছে। এই মুহূর্তে ১২৫ শয্যায় রয়েছেন ১৮৭ জন। বস্তুতপক্ষে ৬২ জন রোগী শীতের রাতে চাদর, কম্বল ছাড়াই মেঝেতে রাত কাটাচ্ছেন। পরিস্থিতি যে ক্রমশ ‘অমানবিক’ হয়ে উঠেছে, সে কথা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ স্বাস্থ্য ভবনেও একাধিক বার জানিয়েছেন। কিন্তু স্বাস্থ্যকর্তাদের বক্তব্য, তাঁরাও নিরুপায়। আদালতের নির্দেশে যদি পুলিশ রোগী নিয়ে আসে, তা হলে তাঁদের ভর্তি না করে উপায় নেই।
পাভলভ হাসপাতালের চিকিৎসকদের একটা বড় অংশ বিষয়টির প্রতিবাদ করেছেন। তাঁদের বক্তব্য, মেঝেতে শুয়ে বহু রোগিণী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। অনেকেরই জ্বর, সর্দি-কাশি হয়েছে। ঠান্ডা সহ্য করতে না পেরে অনেকে কান্নাকাটিও করছেন। এক চিকিৎসক বলেন, “হাসপাতালের তরফে বেশ কয়েকটি শয্যায় একাধিক রোগিণীকে রাখার চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু সে নিয়ে তুমুল অশান্তি শুরু হয়। একটি কম্বল দু’জনে ভাগাভাগি করে নিতেও রোগিণীরা রাজি হননি।” দিন কয়েক আগে রাতে মেঝেতে থাকা এক রোগিণী অন্য এক রোগিণীর শয্যায় আশ্রয় নিতে গিয়ে খাট থেকে পড়ে চোট পান বলেও হাসপাতাল সূত্রের খবর।
কী বলছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ? পাভলভের সুপার রাঘবেশ মজুমদার বলেন, “যা জানানোর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বলেছি। এ বার সিদ্ধান্তটা তাঁদের। ওয়ার্ডের পরিসর বাড়ানোর কথা ভাবা হচ্ছে। ওই চত্বরেই দ্বিতীয় মহিলা ওয়ার্ড খোলা নিয়েও আলোচনা চলছে।”
কিন্তু সেটা তো দীর্ঘমেয়াদী প্রক্রিয়া। অবিলম্বে কী ব্যবস্থা হবে? “সেটা আমারও জানা নেই,” বলে দায় এড়িয়েছেন সুপার। হাসপাতালের কর্মীরা জানিয়েছেন, শুধু শয্যা নয়, রোগিণীর সংখ্যা এত বেশি হওয়ায় ওয়ার্ডও নোংরা হচ্ছে। দুর্গন্ধে শৌচাগারে ঢোকাও দায়।
আপাতত একটি বেসরকারি সংস্থা পাভলভের রোগিণীদের পুনর্বাসনের কাজ করছে। প্রয়োজনের তুলনায় তা যে যথেষ্ট নয়, তা স্বীকার করেছেন স্বাস্থ্যকর্তারাই। অন্য কয়েকটি সংস্থা কাজ করতে চেয়ে স্বাস্থ্যকর্তাদের সঙ্গে একাধিক বার যোগাযোগ করেছে। সায় দেননি কর্তৃপক্ষ। ওই সংস্থাগুলির বক্তব্য, সুস্থ হয়ে ওঠা রোগিণীদের বিভিন্ন হোমে রেখে বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ দিয়ে তাঁদের বাড়ি ফেরানোর চেষ্টা করবেন তাঁরা। এতে হাসপাতালের উপরে চাপও কমবে। স্বাস্থ্যকর্তারা কেন এই প্রস্তাবে সায় দিচ্ছেন না? স্বাস্থ্য অধিকর্তা বিশ্বরঞ্জন শতপথী বলেন, “বিষয়টি নিয়ে ভাবনাচিন্তা চলছে। আচমকা এক কথায় কিছু করা যায় না।”স্বাস্থ্য দফতরের দায়িত্ব নিয়ে মানসিক স্বাস্থ্যের হাল ফেরাতে নানা উদ্যোগের কথা ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। হাসপাতালগুলির উপরে নিয়মিত নজরদারি বজায় রাখতে গড়া হয়েছিল পরিদর্শক দলও। কিন্তু এর সবই যে বিফলে গিয়েছে, তা স্পষ্ট হয়েছে পরিদর্শক দলের সদস্যদের একটা বড় অংশের কথাতেই। এক সদস্য বলেন, “কমিটি গড়ার পরে প্রথম দিকে দু’এক বার পরিদর্শন হয়েছিল। তার পর ফের যে কে সেই।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.