গ্রামীণ স্বাস্থ্যের হাল ফেরাতে চিকিৎসক নিয়োগ পশ্চিমে
র্যাপ্ত সংখ্যক চিকিৎসকের অভাবে বেহাল স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে হাসপাতালএই দৃশ্য গোটা রাজ্যের। জঙ্গলমহলের জেলা পশ্চিম মেদিনীপুরে এই সঙ্কট আরও তীব্র। বেশ কিছু প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে অর্ধেক পদই শূন্য। সমস্যা সমাধানে নতুন চিকিৎসক নিয়োগে তাই তৎপর হল জেলা স্বাস্থ্য দফতর। জাতীয় গ্রামীণ স্বাস্থ্য মিশনে (এআরএইচএম) চুক্তির ভিত্তিতে মোট ৩০ জন চিকিৎসক নিয়োগ করা হবে জেলায়। পশ্চিম মেদিনীপুরের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সবিতেন্দ্র পাত্র বলেন, “আপাতত ৩০ জন চিকিৎসক নিয়োগের ব্যবস্থা হয়েছে। ফেব্রুয়ারির মধ্যে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার চেষ্টা চলছে।” তাঁর বক্তব্য, “জেলায় চিকিৎসকের সমস্যা রয়েছে। বেশ কয়েকটি পদ শূন্য। তবে এর মধ্যেই কাজ করতে হবে।”
পশ্চিম মেদিনীপুরের একটা বড় এলাকা জুড়ে রয়েছে জঙ্গলমহল। চিকিৎসকের অভাবে জঙ্গলমহলের বিভিন্ন প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র এবং ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রেও মাঝেমধ্যে সমস্যা দেখা দেয়। শুধু এই সব স্বাস্থ্য কেন্দ্রই নয়, খোদ খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালেও প্রয়োজনীয় সংখ্যক চিকিৎসক নেই। একজন ছুটি নিলেই সমস্যা শুরু হয়। পরিস্থিতি দেখে সম্প্রতি রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা বিশ্বরঞ্জন শতপথীর কাছে চিঠি পাঠিয়েছেন হাসপাতাল সুপার দেবাশিস পাল। যে চিঠিতে অন্তত দু’জন চিকিৎসক নিয়োগ করার আবেদন রাখা হয়েছে। এখানে চিকিৎসক থাকার কথা সব মিলিয়ে ৪০ জন। রয়েছেন ২৯ জন। এর মধ্যে জিডিএমও (জেনারেল ডিউটি মেডিক্যাল অফিসার) ৭ জন। তা-ও এক জনকে অন্য হাসপাতাল থেকে পাঠানো হয়েছে। অথচ, হাসপাতালে জিডিএমও’র পদ রয়েছে ১৩টি। অর্থাৎ, ৬টি পদ শূন্য। জেলার সার্বিক পরিস্থিতিটাও প্রায় একই। জেলায় ৩৮৭ জন চিকিৎসক থাকার কথা (মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ বাদে)। সেখানে রয়েছেন ২৭৯ জন। অর্থাৎ, ১০৮টি পদ শূন্য। একই পরিস্থিতি নার্স, ফার্মাসিস্ট, এমনকী চতুর্থ শ্রেণির কর্মীর ক্ষেত্রেও। নার্স থাকার কথা ৫৭৭ জন। সেখানে রয়েছেন ৫০১ জন। ফার্মাসিস্ট থাকার কথা ১৩৮ জন। রয়েছেন ১২৪ জন। অন্য দিকে, চতুর্থ শ্রেণির কর্মীর পদ রয়েছে ৯১৮টি। সেখানে কর্মী রয়েছেন ৬৫৭ জন। এই পরিস্থিতিতে সর্বত্র স্বাস্থ্য পরিষেবা সচল রাখতে স্বাস্থ্য কেন্দ্রের কর্মীদেরও সমস্যায় পড়তে হয়। পশ্চিম মেদিনীপুর ‘পিছিয়ে পড়া’ জেলা হিসেবে পরিচিত। এখানে স্বাস্থ্য পরিষেবা নিয়ে মাঝেমধ্যে নানা অভিযোগ ওঠে। গ্রামীণ স্বাস্থ্য ব্যবস্থাও ‘দুর্বল’ বলে অভিযোগ। এর ফলে রোগী ও তাঁর পরিবারের লোকজনদের নানা সমস্যায় পড়তে হয়। চিকিৎসকের শূন্যপদ পূরণ না হলে সব সমস্যা এড়ানো সম্ভব নয় বলেই মনে করছে বিভিন্ন মহল। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের অবশ্য বক্তব্য, সমস্যা দেখেই ৩০ জন চিকিৎসক নিয়োগের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র এবং ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে এঁদের নিয়োগ করা হবে। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিক মানছেন, “প্রয়োজনীয় সংখ্যক চিকিৎসক না থাকলে সমস্যা তো হবেই। সব কাজ সময়মতো করা যায় না। এক সময় ব্লকে ব্লকে ১৫ দিন অন্তর চিকিৎসা শিবির করার কথা ভাবা হয়েছিল। কয়েকটি এলাকায় শিবিরও হয়। তবে সর্বত্র নিয়মিত শিবির করা সম্ভব হচ্ছে না।” সেই সঙ্গে বেড়েছে কাজের চাপ। ইতিমধ্যে জেলার কয়েকটি প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র ব্লক স্তরে উন্নীত হয়েছে। শয্যা সংখ্যা বেড়েছে। তবে চিকিৎসক এবং কর্মীর সংখ্যা সেই তুলনায় বাড়েনি। বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষেরও অজানা নয়।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.