চার মাসে ফিরে এল চুরি যাওয়া মোবাইল
মোবাইল হারালে পুলিশকে জানাতে গেলে হেনস্থার অভিযোগ নতুন কিছু নয়। তাই চার মাস আগে বাগডোগরায় সিটি অটোয় হারিয়ে যাওয়া একটি মোবাইল নদিয়া থেকে উদ্ধারের ঘটনায় চমকে গিয়েছে শিলিগুড়ির হাকিমপাড়ার চৌধুরী পরিবার। শুধু তা-ই নয়, খোয়া যাওয়া মোবাইলটি নানা হাত ঘুরে নদিয়ায় যাঁর কাছে পৌঁছেছিল, তিনি লোক মারফৎ বৃহস্পতিবার চৌধুরী বাড়িতে তা পৌঁছেও দিয়েছেন। গোটা ঘটনায় অভিভূত বর্ষীয়ান অজিত চৌধুরী ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে দুই থানায় গিয়ে ‘অসংখ্য ধন্যবাদ’ দিয়েছেন। আবেগাপ্লুত অজিতবাবু বলেছেন, “পুলিশ সম্পর্কে অনেক কথাই তো শুনি। সামান্য একটা মোবাইল হারানোর অভিযোগকে এভাবে গুরুত্ব দেওয়া হবে তা ভাবতেও পারিনি। একটা জিনিস ফের বুঝলাম পুলিশ ইচ্ছে করলে অনেক কিছুই করতে পারে। ওঁদের অসংখ্য ধন্যবাদ।”
ঘটনা ঘটেছিল ২০১১ সালের ২৫ নভেম্বর। অজিতবাবুর ছেলে পেশায় ইঞ্জিনিয়র অরুণবাবু বাগডোগরায় কর্মরত। তিনি শিলিগুড়ি থেকে সিটি অটোয় যাতায়ত করেন। ওই দিন বিকেলে অফিস থেকে ফেরার সময়ে তাঁর মোবাইলটি হারিয়ে যায়। প্রায় ২০ হাজার টাকার দামের মোবাইলটি হারানোর পরে বাগডোগরা থানায় গিয়ে অভিযোগ করেন। পুলিশ অভিযোগ নথিভুক্ত করে। পুলিশ প্রথমে দেখা যায়, সেটি শিলিগুড়ির বাগরাকোট এলাকায় ব্যবহার হচ্ছে। সেই সময়ে শিলিগুড়ি থানা নজরদারি শুরুর কদিনের মাথায় দেখা যায়, সেটি নদিয়া থেকে ব্যবহার করা হচ্ছে।
এর পরেই বাগডোগরার ওসি বাসুদেব সরকার থানার সাব ইন্সপেক্টর বিশ্বজিৎ বসুকে নিয়মিত নজরদারির দায়িত্ব দেন। প্রায় চার মাস নিয়মনিত নজরদারি চালালেও পুলিশ কখনও মোবাইল ব্যবহারকারীকে ফোন করেনি। বরং, ওই মোবাইল ব্যবহারকারীর সঙ্গে যাঁদের কথাবার্তা হচ্ছিল, তাঁদের সঙ্গে পুলিশ যোগাযোগ শুরু করে। কিছুদিন নজরদারির পরে পুলিশ মোবাইল ব্যবহারকারীর পরিচয় সম্পর্কে নিশ্চিত হয়। এর পরেই পুলিশের পক্ষ থেকে মোবাইল ব্যবহারকারীকে সরাসরি ফোন করে থানায় তলব করে। ইতিমধ্যে অন্য যাঁদের ফোন করে মোবাইল ব্যবহারকারীর পরিচয় পেয়েছিল, তাঁদের মাধ্যমেও চাপ দেওয়া হয়।
শেষ পর্যন্ত বুধবার নদিয়া থেকে মোবাইল প্রাপক থানায় ফোন করে জানিয়ে দেন, শিলিগুড়িতে কেউ কুড়িয়ে পাওয়ার পরে নানা হাত ঘুরে মোবাইলটি তাঁর কাছে পৌঁছয়। তিনি নিজের ভুল স্বীকার করে পুলিশের কাছে জানিয়ে দেন, মোবাইল ফোনটি নিজেই শিলিগুড়িতে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করবেন। পুলিশের তরফে অজিতবাবুর ঠিকানা জানিয়ে দেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার সকালে নদীয়া থেকে একজন শিলিগুড়িতে পৌঁছে অজিতবাবুর বাড়িতে গিয়ে মোবাইলটি ফিরিয়ে দিয়ে ক্ষমা চেয়ে নেন। সাধারণত, মোবাইল হারানোর অভিযোগ করতে গেলে অনেক ক্ষেত্রেই পুলিশ নানা জেরা করে থাকে। অনেকে আবার মোবাইল খোঁজার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ কাজ পুলিশের রয়েছে বলেও জানাতে দ্বিধা করেন না। কেউ আবার মোবাইল ভাল করে রাখার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। তবে কোনও প্রভাবশালী নেতা-কর্তা তদ্বির করলে পুলিশ বাড়তি উদ্যোগী হয়। এ ক্ষেত্রে তেমন কিছু হয়নি। তা হলে পুলিশ এতটা উদ্যোগী হল কেন? শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের এক পদস্থ কর্তা বলেন, “অভিযোগ পেলে তা গুরুত্ব সহকারে দেখা সব পুলিশকর্মীর দায়িত্ব। এ ক্ষেত্রে অফিসাররা সেই দায়িত্ব পালন করেছেন। এটাই পুলিশের কাজ। সকলে সেটা করতে পারেন না বলেই পুলিশের ভূমিকা নিয়ে এত বিতর্ক হয়।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.