হাসপাতালে ভর্তি ঢেকলাপাড়ার শ্রমিকেরা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
প্রায় ১০ বছর ধরে বন্ধ ঢেকলাপাড়া চা বাগানের ১৬ জন শ্রমিককে গত শুক্রবার উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। অথচ মঙ্গলবার পর্যন্ত তাঁরা সুস্থ তো হননি, উল্টে সুষ্ঠু চিকিৎসা পরিষেবা মিলছে না বলে তাঁরা হাসপাতাল থেকে চলে যেতে চাইছেন। হাইড্রোসিল আক্রান্ত বালিরাম বরাইক এবং যক্ষায় আক্রান্ত বুধুয়া ওঁরাওকে চিকিৎসকরা ভয় দেখানোয় সোমবার তাঁরা হাসপাতালের ওয়ার্ড থেকে পালিয়ে এলাকায় ফিরে যান বলেও অভিযোগ উঠেছে। বর্তমানে ১৪ জন ভর্তি রয়েছেন। রাজ্য সরকারের তরফে সমস্ত রকম সাহায্যের আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল। অথচ চিকিৎসকের দেওয়া অনেক ওষুধই হাসপাতাল থেকে মিলছে না। ‘জন ওষধি’ নামে যে দোকান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ক্যাম্পাসে রয়েছে সেখানেও তা মিলছে না বলে অভিযোগ। তা ছাড়া রোগীদের রক্ত পরীক্ষা এবং অন্যান্য পরিষেবাও ঠিক মতো মিলছে না বলে অভিযোগ। এমনকী কনকনে ঠান্ডার মধ্যেও তাঁদের অনেকে হাসপাতালের তরফে কম্বল পাননি। তাতে বাড়ি থকে আনা পাতলা চাদর দিয়েই ঠান্ডার মধ্যে কোনও রকমে থাকতে হচ্ছে তাঁদের একাংশকে। রাজ্যের স্বাস্থ্য বিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান রুদ্রনাথ ভট্টাচার্যকেও রোগীর লোকেরা এদিন ফোনে অভিযোগ করেন। রুদ্রবাবু বলেন, “বুধবার হাসপাতালে গিয়ে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখব। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা হবে।” তিনি জানান, হাসপাতালের সুপারের সঙ্গে তিনি কথা বলেছেন। কয়েকজন রোগী হাসপাতালে থাকতে চাইছেন না বলে তাকে সুপার জানিয়েছেন। সুপার সব্যসাচী দাস বলেন, ‘‘হাসপাতালের স্বাস্থ্যকর্মী এবং চিকিৎসকদের সঙ্গে রোগী এবং তাঁর পরিবারের লোকদের সমন্বয়ের অভাব হচ্ছে। সমস্যা মেটাতে চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীদের সঙ্গে কথা বলছি।” । কেন কম্বল অনেকে পাননি তা খোঁজ নিয়ে তিনি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছেন বলেও জানান।
ঢেকলাপাড়া চা বাগানের বাসিন্দা সিনা ওঁরাও, বীরপাড়ার বাসিন্দা শ্যামলাল মোদীরা ওই অসুস্থ ব্যক্তিদের ঢেকলাপাড়া থেকে চিকিৎসার জন্য উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে এসেছিলেন। তাঁদের অক্ষেপ, সুষ্ঠু চিকিৎসা পরিষেবা না মেলায় রোগীরা এখানে থাকতে চাইছেন না। শীতের মধ্যেও তাঁদের কষ্ট পেতে হচ্ছে। শ্যামলালবাবু বলেন, “বলিরামবাবুর অস্ত্রোপচার হলে তিনি বাঁচবেন না বলে এক চিকিৎসক ভয় দেখানোয় তিনি হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যান। এই ধরনের ব্যবহার পাব আশা করিনি।” নেত্র বর্মন, গোপাল বরাইকরাও চলে যেতে চাইছিলেন। মঙ্গলবার তাঁদের ফের ভর্তি করানো হয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের একাংশের দাবি, যাঁরা ভর্তি রয়েছেন তাঁদের সবার পরিস্থিতি গুরুতর নয়। গুরুতর অসুস্থ ছাড়া বাকিদের ছুটি দেওয়া যায় কি না তা দেখা হচ্ছে। |