মথুরাপুরে ডাকাতি
পুলিশ বলতেই এসআইয়ের মাথায় পরপর চপারের কোপ
ন্ধকার, জনবিরল রাস্তায় সশস্ত্র ডাকাতদলের কবল থেকে কয়েক জনকে বাঁচাতে এগিয়ে গিয়েছিলেন কলকাতা পুলিশের এক সাব-ইনস্পেক্টর। ‘ভয় দেখাতে’ নিজের পুলিশ পরিচয় দিতেই অন্যদের ছেড়ে তার উপরে চড়াও হয় দুষ্কৃতীরা। অভিযোগ, ধারালো অস্ত্রের কোপ পড়ে তাঁর মাথায়, কাঁধে।
চলে বেধড়ক মারধর। শনিবার গভীর রাতে ঘটনাটি ঘটে দক্ষিণ ২৪ পরগনার মথুরাপুরে।
ঠাকুরঝি এলাকায় গ্রামের বাড়িতে ফিরছিলেন গড়িয়াহাট থানার অফিসার স্বরূপকুমার ঘোষ। রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ লক্ষ্মীকান্তপুর লোকালে মথুরাপুর স্টেশনে পৌঁছন তিনি। স্বরূপবাবু জানান, দু’টি সাইকেল ভ্যানে গ্রামে ফিরছিলেন ১৪-১৫ জন লোক। রায়দিঘি রোডের একাংশে রাস্তা খারাপ থাকায় ঘুরপথে ভ্যান নিয়ে যান চালকেরা। ঘটনাটা ঘটে সেখানেই।
সোমবার ভবানীপুর পুলিশ হাসপাতাল চত্বরে দাঁড়িয়ে স্বরূপবাবু বলেন, “পিচঢালা রাস্তাটি গিয়েছে খোলা মাঠের মধ্য দিয়ে। ওই রাতে প্রচণ্ড কুয়াশা ছিল। হঠাৎ দেখলাম, মাঠে ঝোপের আড়াল থেকে বেরিয়ে কয়েকটা লোক রাস্তায় উঠে পড়ল। সামনের ভ্যানটাকে আটকে যাত্রীদের টেনে নামাতে থাকল ওরা।” ডাকাত পড়েছে, বুঝতে দেরি হয়নি। আতঙ্কে চিৎকার-চেঁচামেচি জুড়ে দেন অনেকেই। মারধর শুরু করে দুষ্কৃতীরা। ‘লুঠপাট করছ করো, মারধর কোরো না’— এগিয়ে গিয়ে দুষ্কৃতীদের বলেন স্বরূপবাবু। তখনই তাঁকে ঘিরে ফেলে ডাকাতেরা। ওই পুলিশকর্মী বলেন, “ওরা আমাকে বলল, ‘তুই কে রে! বেশি কথা না-বলে চুপ করে থাক। নইলে কেটে এখানেই ফেলে দেব।’ ওদের হাতে চপার, দেশি বোমা ছিল।”
তিনি যে পুলিশ, তখনই জানিয়ে দেন স্বরূপবাবু। প্রথমে কিছুটা হতচকিয়ে যায় দুষ্কৃতীরা। অভিযোগ, তার পরেই সকলে মিলে হামলা করে তাঁর উপরে। মাথায় চপার দিয়ে তিন-চার বার কোপ মারা হয়। ধারালো অস্ত্রের আঘাত লাগে কাঁধেও। পকেট থেকে টাকা হাতিয়ে নেয় দুষ্কৃতীরা। স্বরূপবাবু জানান, আগের ট্রেনে মথুরাপুরে ফেরা কয়েক জনকে মাঠে বসিয়ে রেখেছিল ওরা। তাঁর সঙ্গে এক ট্রেনে আসা লোকেদেরও আটকে রাখার পরিকল্পনা ছিল। একসঙ্গে সকলের জিনিসপত্র লুঠ করে পালানোর ছক ছিল ডাকাতদের। কিন্তু তাঁকে ঘিরে মারধর শুরু করায় অন্যেরা সেই সুযোগে পালাতে থাকেন। তাঁদের কাছ থেকে খবর পেয়ে আশপাশের গ্রাম থেকে লোকজন জড়ো হয়ে যেতে পারে। সেই ভয়ে দ্রুত সেখান থেকে পালায় দুষ্কৃতীরা।
মোবাইল ফোন পকেটেই ছিল স্বরূপবাবুর। ডাকাতের হামলার কথা স্থানীয় থানায় জানান তিনি। ভ্যানচালক, অন্য কয়েক জন সহযাত্রী মিলে রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। স্বরূপবাবু বলেন, “কয়েক মাস আগে ওই জায়গাতেই ডাকাতি হয়েছিল বলে শুনেছিলাম। এ ভাবে যে আমিও ওদের খপ্পরে পড়ব, ভাবিনি।”
তবে আফসোস রয়েই গেল স্বরূপবাবুর। বললেন, “হাতে একটা অস্ত্র থাকলে কাউকেই ছাড়তাম না।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.