মিছিলে পা মিলিয়ে তৃণমূলের কোপে শিল্পী সমীর আইচ
বিভিন্ন টিভি চ্যানেলের বিতর্কে তৃণমূল কংগ্রেস ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পক্ষে এত দিন জোর গলায় সওয়াল করে এসেছেন তিনি। এ বার সেই শাসক দলেরই কোপে পড়লেন চিত্রশিল্পী সমীর আইচ।
কড়েয়ার প্রতিবাদী তরুণের অপমৃত্যুর পরে রাজপথে মোমবাতি মিছিলে সামিল হয়েছিলেন সমীর। রাজ্য সরকারের সমালোচনা করে জানান, এ বার তাঁকেও পথে নামতে হল। সমীর বলেন, “রাজ্যে পুলিশের কোনও পরিবর্তন হয়নি। আমিনুল এক মাস ধরে কষ্ট পেলেও মুখ্যমন্ত্রী থেকে শুরু করে প্রশাসনের কেউ বিষয়টি আমল দেননি।” এই মন্তব্যের জন্য শাসক দলের তরফে তাঁকে সরাসরি কিছু বলা হয়নি, কিন্তু তৃণমূল-শিবির যে শিল্পীর এই ভূমিকা ভাল ভাবে নেয়নি, ২৪ ঘণ্টা পার হতে না হতেই বিলক্ষণ টের পেয়ে গিয়েছেন সমীর।
শনিবার শাসক দলের ডাকে অতিথি হিসেবে বার্নপুর মেলার অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন সমীর। কিন্তু তাঁর দাবি, সেখানে গিয়ে চূড়ান্ত ‘উপেক্ষা’র শিকার হয়ে তাঁকে কলকাতা ফিরতে হয়েছে। সমীরের কথায়, “আমিনুলের বিষয়ে আমি প্রতিবাদ করেছিলাম বলেই তৃণমূলের কোনও নেতা আমার সঙ্গে মঞ্চে থাকতে চাননি বলে শুনেছি। অপমানিত হয়ে কলকাতায় ফিরে আসার পরেও কেউ আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেননি।”

এই মিছিলের জন্যই বিরাগভাজন সমীর আইচ। —ফাইল চিত্র্র
বস্তুত, আমিনুল-কাণ্ডে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে অভিযোগ খণ্ডাতে এখন চেষ্টার কসুর করছে না সরকার। আমিনুলের অপমৃত্যুর জেরে কড়েয়া থানার অভিযুক্ত তিন পুলিশকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। তবু ওই ঘটনার প্রতিবাদী এক শিল্পীকে নিয়ে তৃণমূল নেতাদের অস্বস্তির জেরে আমিনুল-কাণ্ডে সুবিচার দিতে শাসক দলের আন্তরিকতা নিয়েই প্রশ্ন উঠছে। সমীর রবিবার বলেন, “জীবনে কখনও এত অপমানিত হইনি। আমিনুলের ঘটনায় রাস্তায় নেমেছিলাম বলেই এটা আমার সঙ্গে করা হল।” এ রাজ্যে পালাবদলের আগে থেকেই পরিবর্তনপন্থী হিসেবে একেবারে প্রথম সারিতে ছিলেন সমীর। সেই সূত্রেই তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পরে শাসক দলের নানা অনুষ্ঠানে তিনি নিয়মিত ডাক পেতেন। সেই তৃণমূলের কাছ থেকে এমন ‘আঘাত’ পেয়ে এ দিন সমীরের ঘোষণা, “তৃণমূলের ডাকে আর কোনও অনুষ্ঠানে যাব না!”
ঠিক কী ঘটেছিল সমীরের সঙ্গে?
শনিবার মেলার উদ্বোধনের জন্য বিকেল তিনটেয় সেখানে যাওয়ার কথা ছিল সমীরের। উদ্বোধক হিসেবে কার্ডে তাঁর নামও ছাপা হয়েছিল। প্রধান অতিথি ছিলেন রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী মলয় ঘটক। নির্দিষ্ট সময়ের খানিক আগেই পৌঁছন সমীর। কিন্তু সমীরের অভিযোগ, উদ্যোক্তারা তাঁকে এড়িয়ে চলতে শুরু করেন। সমীরের কথায়, “আমি দু’ঘণ্টা অপেক্ষা করলেও কেউ দেখা করতে আসেননি।”
সমীরবাবু জানিয়েছেন, তাঁকে জানানো হয় কৃষিমন্ত্রী মলয়বাবু ও আসানসোলের মেয়র তথা তৃণমূল বিধায়ক তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্য অপেক্ষা করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে তাঁকে বার বার বোঝানো হচ্ছিল, অনুষ্ঠান শুরু হতে কিন্তু অনেক দেরি হবে। স্থানীয় কয়েক জনের সঙ্গে কথা বলেই সমীর জানতে পারেন, তাঁর সঙ্গে মঞ্চে উঠতে চাইছেন না তৃণমূল নেতারা। তাঁর কথায়, “আমাকে বলা হচ্ছিল, সন্ধ্যা ৬টা-৭টায় অনুষ্ঠান শুরু হতে পারে। তখন উপায় নেই দেখেই কলকাতায় ফেরার সিদ্ধান্ত নিই।” এই ঘটনার জন্য তৃণমূলের কোনও স্থানীয় নেতা তাঁর কাছে সামান্য দুঃখপ্রকাশও না করায় ‘আহত’ সমীর।
কী বলছেন, বার্নপুরে তৃণমূলের স্থানীয় নেতৃত্ব? মেলা কমিটির সম্পাদক তৃণমূল নেতা প্রবোধ রায় বিষয়টি তাঁর জানা নেই বলে এড়িয়ে যেতে চেয়েছেন। আমন্ত্রণপত্রে সমীরবাবুর নাম ছাপা হয়েছে। মেয়রের সাংবাদিক-সম্মেলনেও ঘোষণা করা হয়েছিল, সমীরবাবু মেলা উদ্বোধন করবেন। প্রবোধবাবু এ দিন বলেন, “সমীরবাবু আসছেন, তা জানতাম না! কী হয়েছে, বলতে পারব না।” আসানসোলের মেয়র তাপসবাবু বলেন, “দোহাই, আমাকে বিতর্কে জড়াবেন না!”
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.