ফিরে দেখা ২০১২ |
মনে থাকবে |
সুটিয়া গণধর্ষণ কাণ্ডের পরে প্রতিবাদী মঞ্চ গড়ে দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেমেছিলেন যাঁরা, তাঁদেরই সামনের সারিতে ছিলেন বরুণ বিশ্বাস। এলাকার মানুষের প্রতিবাদের ‘মুখ’ ছিলেন সাহসী, পরোপকারী এই যুবক। পেশায় কলকাতা মিত্র ইন্সটিটিউশন (মেন)-এর শিক্ষক বরুণ। কিন্তু পেশাগত পরিচয়ের বাইরেও বহু মানুষের আশা-ভরসা ছিলেন বনগাঁর সুটিয়া এলাকার এই তরুণ। তাঁর সাক্ষ্যের ভিত্তিতে গণধর্ষণ কাণ্ডের একাধিক অপরাধী সাজা পেয়েছে। ৫ জুলাই তাঁকে গোবরডাঙায় গুলি করে খুন করে দুষ্কৃতীরা। ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়। গণধর্ষণ কাণ্ডের অন্যতম সাজাপ্রাপ্ত আসামী সুশান্ত চৌধুরী জেলে বসেই খুনের ছক কষেছিল বলে জানতে পেরেছে পুলিশ।
|
শিক্ষায় নৈরাজ্য |
ভাঙর কলেজের অধ্যাপিকা দেবযানী দে-র দিকে জগ ছুঁড়ে মারলেন তৃণমূল বিধায়ক আরাবুল ইসলাম। ৪ এপ্রিল এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শিক্ষাক্ষেত্রে নৈরাজ্যের অভিযোগ তুলে সরব রাজ্যবাসী। যদিও এ হল হিমশৈলের চূড়াটুকু মাত্র। বছরভর শিক্ষাঙ্গনে ভাঙচুর, ঘেরাও, মারামারির সাক্ষী থাকল আমজনতা। মুখ পুড়ল নতুন সরকারের।
|
নিরাপদ নয় হোম |
গুড়াপের দুলাল স্মৃতি সংসদ হোমে অস্বাভাবিক মৃত্যু গুড়িয়া নামে মানসিক ভারসাম্যহীন এক যুবতীর। তদন্তে উঠে এল হোমের নারকীয় পরিবেশের কথা। জানা গেল, হোমের তথাকথিত সুরক্ষিত পরিবেশে মহিলাদের নিয়মিত ধর্ষণ করা হচ্ছে। এমনকী টাকার বিনিময়ে হোমের মেয়েদের নিয়ে চলছে দেহব্যবসা। এই ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে হোমের ম্যানেজার উদয়চাঁদ কুমার-সহ কয়েক জনকে। রাজ্য জুড়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। নড়াচড়া পড়েছে দীর্ঘ দিনের পরিচিত ব্যবস্থায়। কিন্তু তারপরেও প্রশ্ন থেকে গিয়েছে, মহিলারা হোমে এখনও কতটা নিরাপদ। |
আর কত দিন... |
সিঙ্গুর ছেড়ে আগেই গিয়েছে টাটারা। প্রকল্প এলাকার জমি ‘অনিচ্ছুক’ চাষিদের ফেরত দিতে নতুন সরকার যতই ‘বদ্ধপরিকর’ থাকুক, বিষয়টি এখনও বিশ বাঁও জলে। সুপ্রিম কোর্টে মামলা চলছে। কিন্তু ‘অনিচ্ছুক’ চাষি-খেতমজুরদের দিন আর চলছে না। ২০০৬ সাল থেকে লাগাতার আন্দোলনে ক্লান্ত, হতাশ তাঁদের অনেকেই। জমি গেলেও চেক নেননি যাঁরা, তাঁরাই এ বার ভাবতে শুরু করেছেন, টাকাটা নিয়ে নিলেই ভাল ছিল। এত দিন এই মনোভাব প্রকাশ্যে বলতে দ্বিধা ছিল যাঁদের, তাঁরাই এখন মুখ খুলতে শুরু করেছেন। সরকারি সাহায্যের চাল-টাকা দিয়েও এই অসন্তোষ আর ধামাচাপা দিয়ে রাখা যাচ্ছে না। ইতিমধ্যে সিঙ্গুরের বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যকে কৃষির বদলে অপেক্ষাকৃত কম গুরুত্বের দফতরে ঠেলে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। ক্ষুব্ধ বিধায়ক ইস্তফাপত্র পাঠিয়ে বসে আছেন।
|
রাতের মফস্সল |
রাজধানী দিল্লিই শুধু নয়। বামনগাছির ঘটনা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল, এ রাজ্যেও মহিলারা কতটা নিরাপত্তাহীন। অগস্ট মাসে বামনগাছিতে পানশালার এক ‘ব্যান্ড মাস্টারের’ বাড়িতেই ধর্ষিতা গায়িকা। গত কয়েক বছরে জেলা জুড়ে একের পর এক পানশালা গজিয়ে উঠেছে। গভীর রাত পর্যন্ত সেখানে যাবতীয় ফুর্তির আয়োজন পাকা। বামনগাছির ঘটনায় প্রশ্ন উঠল, পানশালার গায়িকা বা নর্তকীদের নিরাপত্তা কতটুকু। |