তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে রাজ্যের বাসিন্দাদের উপরে অত্যাচার চালানোর অভিযোগ তুললেন বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু। রবিবার বিকালে শিলিগুড়ি সংলগ্ন ফাঁসিদেওয়ার রাঙাপানিতে সারা ভারত কৃষক সভার ২৫তম দার্জিলিং জেলা সম্মেলনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে ওই অভিযোগ তোলেন তিনি। তাঁর দাবি, তৃণমূলের হামলায় গত দেড় বছরে ৮৮ জন বাম কর্মী-সমর্থকের মৃত্যু হয়েছে। কৃষকদের হাত থেকে ন’হাজার একর জমি দখল করে নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, “রাজ্যে অত্যাচার চালানো হচ্ছে। ব্যক্তি স্বাধীনতা কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। মানুষের অধিকার কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। এর বিরুদ্ধে শ্রমিক-কৃষককে লড়তে হবে। অত্যাচারিরা কোনও দেশে ইতিহাস তৈরি করেননি। মানুষের সংগ্রাম ইতিহাস তৈরি করেছে।” তিনি বলেন, “এই সংগ্রামটা আপনারাই করবেন।” তিনি শ্রমিক-কৃষককে একসঙ্গে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নামার আহ্বান জানান। তাঁর দাবি, গত দেড় বছরে রাজ্যে ৭৭ জন কৃষক ঋণের কবলে পড়ে অবসাদের শিকার হয়ে আত্মহত্যা করেছেন। বন্ধ হয়ে থাকা ঢেকলাপাড়া চা বাগানে অনেকে শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। সম্প্রতি দলমোড় চা বাগান বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সেখানে গত সাত দিনে ৩ দিন আত্মহত্যা করেছেন বলে বিমানবাবুর দাবি। তিনি বলেন, “বামপন্থী কৌপিন পড়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা হচ্ছে। |
বামপন্থী কথা বলে, স্লোগান ব্যবহার করা হচ্ছে। অথচ কাজের কাজ কিছু হচ্ছে না। তৃণমূল সরকার বড়লোকের স্বার্থে কাজ করছে। কংগ্রেস ও বিজেপির নীতির সঙ্গে তাদের কোনও বিরোধ নেই।” ধর্ম ও জাতির নামে বিভেদ তৈরির চেষ্টা চলছে বলে তিনি অভিযোগ করেন। উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থায় বেহাল দশার অভিযোগ তুলে তিনি রাজ্য সরকারের সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, “এনবিএসটিসির অবসরপ্রাপ্ত কর্মীরা এখন পেনশন পাচ্ছেন না। অনেকের কাজ নাকচ করে দেওয়া হয়েছে। বাম সরকারের সময়ে এটা ছিল না।” মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের সমালোচনা করেন তিনি। তিনি জানান, কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে প্রতি মাসে গরিব পরিবার পিছু ২ টাকা ধরে ৩৫ কেজি চাল দেওয়ার দাবিতে সই স্বাক্ষর সংগ্রহ অভিযান শুরু করেছে সিপিএম। তিনি জনসভায় উপস্থিত সমর্থকদের উদ্দেশে বলেন, “একটা ভিন্নতর রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে এবারে কৃষক সভার সম্মেলনে হচ্ছে। এখন আর মাথার উপরে বাম সরকারের ছাতা নেই। জেলায় জেলায় কর্মী সমর্থকদের উপরে হামলা হচ্ছে। আপনারা এই অবস্থায় ভয়ে সিঁটিয়ে যাবেন না। গণতন্ত্র পুণরুদ্ধারে আপনাদের লড়তে হবে।” মুখ্যমন্ত্রী একের পর এক শিলান্যাস এবং প্রতিশ্রুতি নিয়েও কটাক্ষ করেন বিমানবাবু। তিনি বলেন, “এটা নতুন কিছু নয়। রেলমন্ত্রী থাকার সময় থেকে তিনি এটা করে আসছেন। প্রতিভা পাতিল রাষ্ট্রমন্ত্রী থাকার সময় তাঁকে দিয়ে রেল প্রকল্পের শিলান্যাস করানো হয়। পরে জানা যায় প্রকল্পের জন্য জমি চিহ্নিত করা হয়নি।” পাহাড়ের সমস্যার সমাধান সম্পূর্ণ ভাবে হয়নি বলে এদিন দাবি করেন বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান। |