এগারো বছর আগে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে হামলার দুঃসহ স্মৃতি তাড়া করে ফেরে এখনও। তখন থেকেই রাগ হিন্দু-মুসলিমদের উপর। বৃহস্পতিবার রাতে কুইন্স স্টেশনে সুনন্দ সেনকে একঝলক দেখেই মুসলিম মনে হয়েছিল। চূড়ান্ত ঘৃণা থেকে তাঁকে চলন্ত ট্রেনের সামনে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়েছিলেন- জেরায় এমনটাই জানালেন সুনন্দ সেন হত্যায় অভিযুক্ত এরিকা মেনেনডেজ।
বৃহস্পতিবার রাত আটটা নাগাদ লোউরি স্ট্রিট সাবওয়ে স্টেশনে ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করছিলেন প্রবাসী বাঙালি সুনন্দ সেন। ট্রেন ঢোকার ঠিক মুখে তাঁকে পিছন থেকে ঠেলে ফেলে দেন এক অজ্ঞাতপরিচয় মহিলা। কিছু বুঝে ওঠার আগেই ট্রেনের চাকার তলায় তালগোল পাকিয়ে যায় সুনন্দর দেহ। ভিড়ের মধ্যে মিশে পালিয়ে যায় আততায়ী। শেষ পর্যন্ত স্টেশনের ভিডিও ফুটেজ দেখে অভিযুক্তের স্কেচ আঁকায় পুলিশ। সন্দেহভাজনের ছবি দেখানো হতে থাকে চ্যানেলে চ্যানেলে। ছবি দেখে এক ব্যক্তি ফোন করেন পুলিশে। শনিবার সকালে ব্রুকলিন স্ট্রিটে গাড়ি ধরার জন্য অপেক্ষা করছিলেন বছর একত্রিশের এরিকা মেনেনডেজ। সে সময় রাস্তা থেকে তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
পুলিশ অফিসার পল ব্রাউন জানান, জেরায় অপরাধের কথা কবুল করেছেন ওই মহিলা। তাঁর বিরুদ্ধে ‘সেকেন্ড ডিগ্রি মার্ডার’ বা পূর্বপরিকল্পনা ছাড়া খুনের অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, এই কাণ্ডের আগে সুনন্দ সেনকে চিনতেনই না এরিকা। সুনন্দ যখন প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়ে ছিলেন, সিটে বসা এরিকা নিজের মনেই বিড়বিড় করছিলেন বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। আগে এ রকম কিছু তিনি করেছিলেন কি না, বা মানসিক ভাবে সুস্থ ছিলেন কি না, তা নিয়ে এখনও নিশ্চিত নয় পুলিশ। অপরাধ প্রমাণ হলে অভিযুক্তের ২৫ বছর পর্যন্ত কারাবাস হতে পারে বলে জানান কুইন্সের অ্যাটর্নি রিচার্ড ব্রাউন।
এ দিকে আগামী কাল আমেরিকাতেই শেষকৃত্য হবে সুনন্দ সেনের। তাঁর বাবা-মা মারা গিয়েছেন আগেই। পরিবারের আর কেউ না থাকায় বন্ধুরাই আয়োজন করছেন শেষকৃত্যের। আমেরিকায় ভারতের রাষ্ট্রদূত নিরুপমা রাও টুইটারে লিখেছেন, ভারতীয় দূতাবাসের তরফে তাঁর বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। |