চার বার টেন্ডারে সাড়া মেলেনি। প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনায় রাস্তা তৈরির কাজে আগ্রহ দেখাননি কোনও ঠিকাদার। ফলে অনুমোদনের পরও রাস্তা তৈরির কাজের ঠিকাদার না মেলায় গত একবছর ধরে থমকে আছে সাতটি রাস্তার কাজ। মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরের দুটি ব্লকে রাস্তাগুলি তৈরির কাজে কোনও ঠিকাদার সংস্থা আগ্রহ না দেখানোয় উদ্বিগ্ন জেলা পরিষদও। কারণ, ২০১০-১১ আর্থিক বছরে রাস্তাগুলি অনুমোদনের পর সেগুলির শিলান্যাসও হয়েছিল। বলা হয়েছিল, খুব শীঘ্রই রাস্তাগুলি তৈরির কাজ শুরু হয়ে যাবে। বছর গড়ালেও রাস্তা তৈরির কাজ শুরু হয়নি বলে বিপাকে পড়তে হচ্ছে জেলা পরিষদের কর্মকর্তাদের। এই পরিস্থিতিতে ওই রাস্তাগুলির কাজ সরকারি কোনও সংস্থাকে দিয়ে করানোর দাবি জানিয়ে পঞ্চায়েত মন্ত্রীর দ্বারস্থ হয়েছে জেলা পরিষদ। একই দাবি জানানো হয়েছে রাজ্যের মুখ্য সচিবকেও। মালদহ জেলা পরিষদের সভাধিপতি উজ্জল চৌধুরী বলেছেন, “বারবার টেন্ডার ডেকে হরিশ্চন্দ্রপুরে পিএমজিএসওয়াই প্রকল্পে রাস্তা তৈরির জন্য কোনও ঠিকাদার সংস্থা আবেদন করেনি। ফলে ভুগতে হচ্ছে সংশ্লিষ্ট এলাকার বাসিন্দাদের। সমস্যা মেটাতে তাই পঞ্চায়েত-মন্ত্রী সহ মুখ্য সচিবকে আর্জি জানানো হয়েছে।” ২০১০-১১ আর্থিক বর্ষে হরিশ্চন্দ্রপুর-১ ও ২ নম্বর ব্লকে প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা প্রকল্পে ৭টি রাস্তার অনুমোদন মেলে। ওই রাস্তাগুলি হল ১ ব্লকের তুলসিহাটা মস্তান মোড় থেকে মকদমপুর-১৬ কিমি, ভিঙ্গোল বটতলা থেকে কর্পূরগঞ্জ ৭ কিমি, ২ ব্লকের মিশ্রপাড়া থেকে মালসাবাদ-৮ কিমি, ডহরা থেকে কুশল-৩ কিলোমিটার, কনকনিয়া থেকে কাটিগাং-৩ কিলোমিটার, সাদলিচক খোকা মোড় থেকে ইসলামপুর বাঁধ-৬.৫ কিলোমিটার ও মহন্তপুর থেকে তালগাছি হয়ে ভৈরবপুর পর্যন্ত ৭ কিলোমিটার রাস্তা। দীর্ঘ দিন ধরে রাস্তা তৈরির দাবিতে আন্দোলনের জেরে প্রাধান্যের ভিত্তিতে ওই রাস্তাগুলি তৈরির উদ্যোগী হয়। কিন্তু প্রকল্পের কাজ শুরু হয়নি। আবার গ্রাম সড়ক যোজনায় পাকা হবে বলে পঞ্চায়েতগুলি তা সংস্কারও করছে না বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের। ফলে রাস্তাগুলি আরও বেহাল হয়ে পড়েছে। তবে সম্প্রতি ডহরা থেকে কুশল রাস্তার বরাত নিতে এক ঠিকাদার আগ্রহ দেখিয়েছেন বলে জেলা পরিষদ সূত্রে জানা গিয়েছে। জেলা পরিষদ জানায়, টেন্ডার প্রক্রিয়া শুরু হতেই পরিচিত ঠিকাদারদের সঙ্গে ব্যক্তিগত উদ্যোগে সংশ্লিষ্ট এলাকার সদস্যরা যোগাযোগও করেছিলেন। যাতে তারা বরাত চেয়ে আবেদন করেন। কিন্তু সাড়া মেলেনি। একাধিক ঠিকাদার সংস্থার তরফে জেলা পরিষদকে জানানো হয় যে, রাস্তাগুলির ডিপিআর (ডিটেল প্রজেক্ট রিপোর্ট) করা হয়েছে দুই থেকে ৩ বছর আগে। সেই হিসেবেই অর্থ বরাদ্দ হয়। এখন খরচ বেড়েছে। এ ছাড়াও রাস্তা তৈরির জন্য প্রধান উপাদান চিপস কিংবা পাথর। ওই পাথর বহনের যে খরচ বরাদ্দ ধরা হয়েছে তা রেলে নিয়ে আসা বাবদ। হরিশ্চন্দ্রপুরে যে রাস্তাগুলি হবে সেক্ষেত্রে রেলে পাথর বহন করে নিয়ে আসা সম্ভব নয়। ট্রাকে করে তা নিয়ে আসতে হবে ঝাড়খন্ড থেকে। সেই খরচও অনেক বেশি। ফলে তাদের ক্ষতির মুখে পড়তে হবে। |