গঙ্গার দূষণ নিয়ন্ত্রণ, পনেরো বছরের পুরনো গাড়ি বাতিল করা, জনজীবন স্তব্ধ করে মিছিল-মিটিং কিংবা পানীয় জলের দূষণ— কোনও ব্যাপারেই প্রশাসন ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। পরিবেশকর্মীদের একাংশের দাবি, রাজ্যে পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণে যতটুকু কাজ হয়েছে, সবটাই আদালতের নির্দেশে। কিন্তু অভিযোগ, কলকাতা হাইকোর্টেও দীর্ঘদিন পরিবেশ সংক্রান্ত কোনও জনস্বার্থ মামলার শুনানি হচ্ছে না।
পরিবেশ সংক্রান্ত মামলার পাশাপাশি সব ধরনের জনস্বার্থ মামলার নিয়মিত শুনানির ব্যবস্থা করার আর্জি জানিয়ে হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি প্রতাপকুমার রায়কে চিঠি দিয়েছেন পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত। পরিবেশ ও অন্যান্য বিষয়ে এ রাজ্য থেকে হাইকোর্টে ও সুপ্রিম কোর্টে এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি জনস্বার্থ মামলা করেছেন সুভাষবাবু। ওই সব মামলায় তিনি নিজেই সওয়াল করেন।
সুভাষবাবু জানিয়েছেন, কলকাতা হাইকোর্টে একটিই ডিভিশন বেঞ্চে জনস্বার্থ মামলাগুলির শুনানি হয়। তা-ও নিয়মিত হয় না। ফলে প্রায় ৭০০ জনস্বার্থ মামলা ঝুলে রয়েছে। চিঠিতে সুভাষবাবু জানান, বহু মামলা আছে যেগুলির এক বছরের মধ্যে শুনানি হয়নি। চিঠিতে সুভাষবাবু আর্জি জানিয়ে বলেন, ‘‘জমে থাকা বিপুল সংখ্যক জনস্বার্থ মামলার বিষয়টি বিবেচনা করে অন্তত ৫টি ডিভিশন বেঞ্চ চিহ্নিত করা হোক যাঁরা সপ্তাহে দু’দিন করে মামলা শুনবেন।’’
কলকাতা তথা গোটা রাজ্যেই পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণে আদালতের রায়ই একমাত্র ভরসা বলে মন্তব্য করেন সুভাষবাবু। তাঁর দাবি, ময়দান থেকে বইমেলা সরানো, মিলনমেলার মতো স্থায়ী মেলা প্রাঙ্গন তৈরি, ভিক্টোরিয়ায় পার্কিং বন্ধ, ১৫ বছরের পুরনো বাণিজ্যিক গাড়ি বাতিল কিংবা গঙ্গা দূষণ রোধে যেটুকু ব্যবস্থা হয়েছে, সবই আদালতের রায়ে। আদালতের নির্দেশেই প্রশাসন বাধ্য হয়ে ব্যবস্থা নিয়েছে। সুভাষবাবু কথায়: “প্রশাসনের উপরে ভারসা হারিয়েই মানুষ আদালতের শরণাপন্ন হচ্ছে। সে দিকটা বিবেচনার জন্যই আদালতের কাছে এই আর্জি।” |