বোলপুরে শিক্ষিকা খুনের মামলায় মূল অভিযুক্ত মঙ্গল সাহানি ধরা পড়ল চেন্নাইয়ে। গত ১৫ অক্টোবর রাতে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসা করাতে আনার সময় সে পালিয়েছিল। শনিবার চেন্নাই সেন্ট্রাল রেল স্টেশন লাগোয়া এলাকা থেকে সিআইডি-র একটি দল তাকে ধরে। স্পেশাল আইজি (সিআইডি) বিনীত গোয়েল বলেন, “মোবাইল ফোন ট্র্যাক করে মঙ্গল চেন্নাইয়ে রয়েছে বলে জানা যায়। সিআইডি-র একটি দল এ দিন সকালে ওকে গ্রেফতার করে। বেশ কিছু দিন ধরে মঙ্গল চেন্নাইয়ে লুকিয়ে ছিল।”
গত ১৩ জানুয়ারি রাতে শান্তিনিকেতনে বাগানপাড়ার বাড়িতে খুন হন মহাদেবী বিড়লা গার্লস স্কুলের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষিকা রেণু সরকার (৭৮)। ঘটনায় জড়িত অভিযোগে পুলিশ বাড়ির কেয়ারটেকার উজ্জ্বল তপাদার ও এক
|
মঙ্গল সাহানি।—ফাইল চিত্র |
সঙ্গী-সহ মঙ্গলকে গ্রেফতার করে। আদতে বোলপুরের শুঁড়িপাড়ার বাসিন্দা মঙ্গল সাহানি আগে এলাকায় চুরি, ছিনতাইয়ের মতো নানা দুষ্কর্মে অভিযুক্ত হয়ে একাধিক বার গ্রেফতার হয়েছে। রেণু খুন মামলায় ধরা পড়ার পরে সিউড়ি সংশোধনাগারে থাকাকালীনই এক বার অসুস্থ বলে সিউড়ি হাসপাতালে ভর্তি হয় এবং সেখান থেকে পালানোর চেষ্টা করে। কিন্তু সে বার মঙ্গল সফল হয়নি। এর পরে প্রথমে তাকে বোলপুর উপ-সংশোধনাগারে এবং পরে বর্ধমান কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে রাখা হয়েছিল। বর্ধমানে থাকার সময়ে পেটে যন্ত্রণার কথা বলায় ১৫ অক্টোবর রাতে একটি ভাড়াগাড়িতে মঙ্গলকে বর্ধমান মেডিক্যালে নিয়ে যান দুই কারারক্ষী। সেখান থেকেই পালায় মঙ্গল। ঘটনায় ওই দুই কারারক্ষীকে সাসপেন্ডের পাশাপাশি শো-কজ করা হয় বর্ধমান সংশোধনাগারের সুপারকে। অন্য দিকে, চার্জশিট জমা পড়ে গেলেও মঙ্গলের অনুপস্থিতিতে বার বার বাধা পড়ে রেণু হত্যা মামলার অগ্রগতিতে।
দিন চারেক আগে মঙ্গলের ছবি, টেলিফোনে তার গলার স্বর এবং তার সঙ্গীদের বর্তমান অবস্থানের তথ্য বীরভূম জেলা পুলিশের কাছ থেকে জোগাড় করে সিআইডি। মঙ্গলকে ধরার পিছনে সেই সব সূত্রও কাজে লেগেছে বলে সিআইডি-র দাবি। আজ রবিবার, তাকে চেন্নাইয়ের আদালতে হাজির করিয়ে এ রাজ্যে ফেরত আনার জন্য ‘ট্রানজিট রিমান্ড’-এ চাওয়া হবে। বীরভূমের পুলিশ সুপার মুরলিধর শর্মা বলেন, “আমরা মঙ্গলকে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য হেফাজতে চাইব।”
নিহত শিক্ষিকার কন্যা অদিতি সরকার বলেন, “পুলিশ-প্রশাসনের উপরে আমাদের আস্থা ছিল। ব্যাপারটা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়েরও নজরে ছিল। তাঁর কাছে আমরা কৃতজ্ঞ। আশা করব, মঙ্গল আর পালাতে পারবে না।” |