|
|
|
|
ভরসা অস্থায়ী পাটাতন |
পাকা সেতুর দাবি কলমিজোড়ে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • ঘাটাল |
দীর্ঘ দিন ধরেই যাতায়াতের ভরসা ছিল একটা কাঠের সেতু। গাড়ি থেকে অ্যাম্বুল্যান্স থেকে সবই পারাপার হত তা দিয়ে। কিন্তু বছর দু’য়েক আগে বন্যায় ওই সেতু ভেসে যাওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। তারপর থেকে পঞ্চায়েত সমিতির উদ্যোগে সাময়িক ভাবে নৌকার উপর পাটাতন বেঁধে কোনও রকমে চলছে পারাপার। এমন হাল পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুরের কলমিজোড়ে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, পাটাতনগুলি ঠিক ভাবে আটকানো না থাকায় প্রায়শই দুর্ঘটনা ঘটছে। তাই এ বার কলমিজোড়ে কংসাবতী নদীর উপরে পাকা সেতুর দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।
পাকা সেতুর দাবিতে এলাকার মানুষ এতটাই সরব যে ‘কলমিজোড় ব্রিজ আন্দোলন’ নামে একটি কমিটিও তৈরি হয়ে গিয়েছে। প্রাথমিক ভাবে স্থানীয় বিডিও থেকে জেলা প্রশাসনের আধিকারিক, সভাধিপতি, এলাকার সাংসদ, বিধায়ক-সব জায়গাতেই লিখিত আবেদনও করেছে ওই কমিটি। কিন্তু এখনও কোনও সাড়া মেলেনি বলে অভিযোগ। |
|
কংসাবতী নদীতে ঝুঁকির পারাপার। —নিজস্ব চিত্র। |
কমিটির দাবি, দাবি না মিটলে এ বার বড়সড় আন্দোলনে নামবেন তারা। কমিটির সভাপতি তারাপদ পাত্র এবং সম্পাদক কমল গোস্বামী বলেন, “এলাকার প্রায় প্রতিটি গ্রামের বিভিন্ন স্তরের মানুষ কমিটির সঙ্গে যুক্ত। আমরা ফের লিখিত ভাবে সবাইকে আবেদন জানাব। কাজ না হলে এবার বড়সড় আন্দোলনে নামা হবে।”
দাসপুর ১ ব্লকের সড়বেড়িয়া ১ ও ২ এবং নন্দনপুর পঞ্চায়েত ও ডেবরা ব্লকের প্রায় আশিটি গ্রামের মানুষের যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম ওই সেতু। গড়ে প্রতিদিন ১৫-২০ হাজার মানুষ পারাপার করেন ওই রাস্তা দিয়ে। নদীর দুই পাড়ে প্রাথমিক স্কুল রয়েছে ৩৫টি, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্কুল রয়েছে ১৬টি ,শিশুশিক্ষা কেন্দ্র ৪২টি ও উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রও ৩টি। ফলে পড়াশোনা বা চিকিৎসা সবেতেই পারাপারের ভরসা ওই সেতু। দাসপুর ১ ব্লকের কলমিজোড়, সালালপুর, ফকিরবাজার, ব্রাক্ষণবসান, নবীন বাসুদেবপুর, কৃষ্ণপুর, নন্দনপুর, কাকদাঁড়ি, ধর্মসাগর, রামচন্দ্রপুর, ধর্মা, রবিদাসপুর, বালকরাউত, ফতেপুর, ধানখাল-সহ বিভিন্ন গ্রামের মানুষকে হাসপাতাল, সরকারি দফতর-সহ নানা প্রয়োজনীয় কাজে প্রায় রোজই যাতায়াত করতে হয়। এছাড়া ব্যবসায়ীরা মালপত্র নিয়ে বা কৃষকেরা সব্জি বিক্রি করতে দাসপুর ও ঘাটাল বাজারে আসেন এই পথে। বাসিন্দারা জানান, পুরনো কাঠের সেতুটি ছিল শক্তপোক্ত। তার উপর দিয়ে মারুতি, ট্যাক্সি থেকে অ্যাম্বুল্যান্স সবই যাতায়াত করত। ফলে সমস্যা ততটা ছিল না। কিন্তু এখন রাতবিরেতে বা দিনেদুপুরেও কেউ অসুস্থ হয়ে গেলে, বিশেষত প্রসূতিদের দুর্ভোগের শেষ নেই। হাসপাতালে নিয়ে যেতে হলে ঘুরপথে ১০-১৫ কিলোমিটার গিয়ে ডেবরা সংলগ্ন তেমোহানি ব্রিজের উপর দিয়ে যাতায়াত করা ছাড়া আর কোনও উপায় নেই নদীপাড়ের ওই সমস্ত গ্রামের হাজার হাজার মানুষের।
কলমিজোড় কংসাবতীর উপর স্থায়ী সেতু যে জরুরি তা স্বীকার করেছেন স্থানীয় পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ব্যোমকেশ সামন্ত থেকে বিডিও রোশনী সরকারও। বিডিও বলেন, “আমরা জেলা পরিষদের কাছে বিষয়টি জানিয়েছি।” জেলা পরিষদের সভাধিপতি অন্তরা ভট্টাচার্য বলেন, “বিষয়টি জানি। ওখানে একটা স্থায়ী ব্রিজের খুবই প্রয়োজন। টাকার অভাবে করা সম্ভব হয়নি, তবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।” |
|
|
|
|
|