থমকে বড়জোড়ার আইটি হাবও
টাকা এলেও শুরু হয়নি কিষাণমান্ডি
সাত মাস আগে দু’টি প্রকল্পের শিলান্যাস করে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একটির কাজ কিছুটা এগিয়েছে। অন্যটি থমকে রয়েছে।
বাঁকুড়া জেলায় চাষিদের ফসলের ন্যায্য দাম দেওয়ার জন্য রাজ্য সরকার তিনটি কিষাণমাণ্ডি তৈরির উদ্যোগ নেয়। গত ১৩ এপ্রিল বড়জোড়ায় অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী তিনটি কিষাণমান্ডির শিলান্যাসও করে যান। আজ সোমবার, ফের তিনি এই জেলায় আসছেন। কিন্তু কিষাণমান্ডি তৈরির কাজ সে অর্থে এগোয়নি বলেই অভিযোগ বিরোধীদের।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বড়জোড়া, ছাতনা ও কোতুলপুর ব্লকে তিনটি কিষাণমান্ডি গড়ার কথা। এ জন্য জমি পেতেও সমস্যায় পড়তে হয়নি প্রশাসনকে। তিনটি জায়গাতেই কৃষি দফতরের নিজস্ব ফার্মে কিষাণমান্ডি তৈরি করার জন্য জমি চিহ্নিত করা হয়েছে। কিন্তু পরিকাঠামো গড়ে তোলার কাজ এখনও সেভাবে শুরুই করা যায়নি। সম্প্রতি সেই কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ওয়েস্ট বেঙ্গল ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশনকে। কর্পোরেশনের চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার সোমেশ ভট্টাচার্য বলেন, “সদ্য কোতুলপুর ও বড়জোড়ায় কিষাণমান্ডি তৈরির দায়িত্ব আমাদের দেওয়া হয়েছে। আমাদের এক প্রতিনিধিকে বাঁকুড়ায় গিয়ে জায়গাটি খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে।” ফলে নির্মাণের এখনও ঢের বাকি।
বাঁকুড়ার নতুনগঞ্জে নিয়ন্ত্রিত বাজার সমিতির অফিসে
পড়ে রয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর শিলান্যাস করা কিষাণমান্ডির ফলক।
ছাতনার কিষাণমান্ডির কাজও তথৈবচ। বাঁকুড়া জেলার সহ অধিকর্তা (কৃষি বিপণন) পার্থসারথি কবিরাজ বলেন, “বড়জোড়ায় ও কোতুলপুর ব্লকের জয়রামবাটিতে কৃষি দফতরের নিজস্ব ফার্মে কিষাণমান্ডি গড়ার কথা। কাজও শুরু হয়েছে। ছাতনা ব্লকের শুশুনিয়ায় কৃষি দফতরের ফার্মেও কিষাণমান্ডি তৈরি করা হবে। সেখানেও দ্রুত কাজ শুরু করা হবে।” জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে কিষাণমান্ডি তৈরির জন্য প্রায় ১১ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।
কিষাণমান্ডি থেকে চাষিরা কী সুবিধা পাবেন? প্রশাসন সূত্রের খবর, চাষিরা কিষাণমান্ডিতে সরাসরি তাঁদের ফসল নিয়ে এসে দর যাচাই করে বিক্রি করতে পারবেন। ফলে চাষিদের অভাবী বিক্রিও বন্ধ হবে। কিষাণমান্ডিতে গুদামও থাকবে। প্রয়োজন হলে সেখানেও ফসল মজুত করে রাখা যাবে। কিষাণমান্ডি চালু হলে আখেরে চাষিদের লাভ হবে। কিন্তু এই প্রকল্পের কাজের গতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীরা। ফরওয়ার্ড ব্লকের অগ্রগামী কিষাণসভার বাঁকুড়া জেলা সাধারণ সম্পাদক মাণিক মুখোপাধ্যায় বলেন, “গড়মসি না করে দ্রুত কিষাণমান্ডির কাজ শেষ করলে তবেই চাষিদের কাজে লাগবে।”
আজ মুখ্যমন্ত্রী বাঁকুড়ায় আসছেন। তাঁর জন্যই সার্কিট হাউসের ভিতরে রাস্তায় পড়ছে মোরাম।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর জঙ্গলমহল সফরে এসে ২০১১ সালের ১৩ জুলাই সারেঙ্গায় ঘোষণা করেছিলেন, বাঁকুড়ায় তথ্য প্রযুক্তি (আইটি) হাব করা হবে। সেই ঘোষণার ঠিক ন’ মাস পরে বড়জোড়ায় এসে শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে সঙ্গে নিয়ে সেখানে তথ্য প্রযুক্তি হাবের শিলান্যাস করেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু সেই কাজও বিশেষ এগোয়নি। বড়জোড়ার ঘুটগড়িয়া মৌজায় তথ্য প্রযুক্তি হাবের জন্য ১ একর জমি চিহ্নিত করা হয়েছে। প্রশাসন সূত্রের খবর, ওয়েস্ট বেঙ্গল ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন লিমিটেড (ডব্লিউবিআইডিসি) সেই জমি সেপ্টেম্বর মাসে ওয়েস্ট বেঙ্গল ইলেকট্রনিক ইন্ডাস্ট্রি ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশনকে (ডব্লিউবিইআইডিসি) হস্তান্তর করে। কাজ কতদূর এগিয়েছে? আইটি হাব গড়ার জন্য মাটি পরীক্ষার কাজ শেষ। কিন্তু নির্মাণ কাজ এখনও শুরু হয়নি। প্রশাসনেরই একটি সূত্র জানাচ্ছে, শিলিগুড়ি ও দুর্গাপুর আইটি হাবে এখনও উল্লেখযোগ্য লগ্নি আসেনি। সেই প্রেক্ষিতে বড়জোড়া নিয়ে শিল্পপতিরা কতটা আগ্রহী হবেন, সন্দেহ রয়েছে।
সিপিএমের জেলা সম্পাদক অমিয় পাত্রের কটাক্ষ, “লোক দেখানো আশ্বাস দিয়ে আর চলবে না। মানুষকে আর কতদিন বোকা বানাবেন উনি (মুখ্যমন্ত্রী)? আশ্বাসই সার, কিছুই যে হবে না তা মানুষ টের পেয়েছে।” বড়জোড়ার বিধায়ক তৃণমূলের আশুতোষ মুখোপাধ্যায় বলেন, “আইটি হাব গড়ে তোলার কাজ চলছে। কোনও সংস্থা লগ্নিতে আগ্রহ দেখিয়েছে কি না জানি না। তবে ওই শিল্প হওয়ার পর এলাকার অর্থনৈতিক পট পরিবর্তন হয়ে যাবে।”

ছবি: অভিজিৎ সিংহ।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.