নরওয়েতে ঘোর বিপাকে ভারতীয় পরিবার
ছেলে শাসনের দায়ে জেল হতে পারে দম্পতির
ক্রমশই জটিল হয়ে উঠছে নরওয়ে-কাণ্ড। শোনা যাচ্ছে, সাত বছরের ছেলেকে শাসন করার ‘অপরাধে’ জেলে যেতে হতে পারে অন্ধ্রের দম্পতি চন্দ্রশেখর এবং অনুপমা বল্লভানেনির।
নরওয়ে পুলিশ জানায়, ওই দম্পতি যাতে ভারতে পালিয়ে যেতে না পারেন, তাই তাঁদের পুলিশি হেফাজতে রাখা হয়েছে। গোপন সূত্রের খবর, অনুপমার জন্য ১ বছর ৩ মাস এবং চন্দ্রশেখরের দেড় বছরের জেলের আর্জি জানিয়েছে সরকার পক্ষের আইনজীবী। নরওয়ে আইনের ২১৯ ধারা অনুযায়ী সাত বছরের শিশুসন্তানের সঙ্গে ‘খারাপ ব্যবহারের’ জন্য তাঁদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, আদালতে শুনানি চলছে, শোনা হচ্ছে অভিযুক্তদের বয়ানও। পরশু, ৩ ডিসেম্বর রায় ঘোষণা করবেন প্রধান বিচারপতি।
অন্ধ্রের দম্পতি চন্দ্রশেখর ও অনুপমা বল্লভানেনি।
বছর দেড়েক আগে ছেলে সাই শ্রীরামকে নিয়ে চাকরি সূত্রে নরওয়ে আসেন চন্দ্রশেখর ও অনুপমা। তাঁদের পরিবারের বক্তব্য, এ বছরের গোড়ায় সাই স্কুলের শিক্ষিকাকে বলে প্যান্টে প্রস্রাব করায় বাবা-মা তাকে বকাবকি করেছে। শিক্ষিকা সে কথা শিশু সুরক্ষা দফতরকে জানান। তার পর সাইকে নিজেদের হেফাজতে নেয় ওই দফতর। চন্দ্রশেখরের ভাইপো শৈলেন্দ্রর বক্তব্য অবশ্য, স্কুলবাসে ফেরার সময় সাই প্যান্টে প্রস্রাব করে ফেলায় চন্দ্রশেখরকে অভিযোগ জানানো হয়। তখন তিনি সাইকে বকার সময় ‘ভয়’ দেখান, যদি সে আবার এ রকম করে, তাকে ভারতে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে। শৈলেন্দ্রর আরও দাবি, চন্দ্রশেখর-অনুপমার বিরুদ্ধে যে মামলা করা হয়েছে, সে বিষয়ে তাঁর কাকা বিন্দুবিসর্গও জানতেন না। গ্রেফতারের খবরও তাঁদের জানানো হয়নি। ২৮ নভেম্বর অসলোয় চন্দ্রশেখরের এক প্রতিবেশী তাঁদের খবর দেন।
পরে মে মাস নাগাদ সাইকে বাবা-মায়ের কাছে ফিরিয়ে দেয় শিশু সুরক্ষা দফতর। এর পর জুলাই মাসে ছেলেকে নিয়ে ভারতে চলে আসেন চন্দ্রশেখর-অনুপমা। চলতি মাসে চন্দ্রশেখর ফের নরওয়ে গেলে ২৬ নভেম্বর স্থানীয় আদালতে হাজির হওয়ার জন্য নোটিস ধরানো হয় তাঁকে। সেই খবর শুনে নরওয়ে যান তাঁর স্ত্রীও। ২৬ তারিখ শুনানির পরে দু’জনকেই গ্রেফতার করা হয়।
চন্দ্রশেখরের পরিবারের তরফে জানানো হয়েছে, শুক্রবার চন্দ্রশেখরের সঙ্গে ভারতীয় দূতাবাসের এক উচ্চপদস্থ অফিসার দেখা করেছেন। সরকারের পক্ষ থেকে তাঁকে সব রকম সাহায্য করা হবে বলেও আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। যদিও বিদেশমন্ত্রী সলমন খুরশিদ আজ জানিয়েছেন, এ বিষয়ে ভারত সরকারের হস্তক্ষেপের এক্তিয়ার নেই। তাঁর কথায়, “এটা এমন একটা বিষয় যার সঙ্গে সরকারের কোনও সম্পর্ক নেই। এটা একান্ত ভাবেই একটি দেশের স্থানীয় আইন ও সেখানকার নাগরিকদের বিষয়।” সেই সঙ্গেই খুরশিদের মন্তব্য, “এ বিষয়ে যথাযথ যা ব্যবস্থা নেওয়ার, তা নরওয়ের ভারতীয় দূতাবাস নেবে।” বিদেশ মন্ত্রকের পক্ষ থেকে এমনটাও শোনা যাচ্ছে, “গত আট মাস ধরেই বিষয়টি তাদের নজরে ছিল। তাদের হস্তক্ষেপেই মে মাসে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ বাচ্চাটিকে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন।” যদিও এখন ওই দফতরই চন্দ্রশেখর-অনুপমার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনছে।
কয়েক মাসও হয়নি অনুরূপ-সাগরিকার অধ্যায় শেষ হয়েছে। নরওয়ে কর্তৃপক্ষের নির্দেশ মেনেই মা-বাবার থেকে দূরে তিন বছরের অভিজ্ঞান ও চার বছরের সাগরিকা আপাতত রয়েছে তাদের কাকার কাছে। সাইয়ের ভবিষ্যৎ কার হাতে, বলবে ভবিষ্যৎই।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.