গোতির ইনিংসটাই যা আশা দেখাচ্ছে
তুন ব্যাটসম্যানের জন্য জীবন দুর্বিষহ। আর যে ব্যাটসম্যান ক্রিজে খানিকটা সময় কাটিয়ে ফেলেছে তার জন্য অনেক রান পড়ে আছে। ওয়াংখেড়ে টেস্টের উইকেটটা ছিল অনেকটা এ রকম। পূজারা সেটা ভারতের প্রথম ইনিংসে প্রমাণ করেছে। অশ্বিনও। আমার মতে যে দুর্দান্ত ব্যাট করেছে। অন্য দিকে কুক ওর প্রথম টেস্টের অসাধারণ ফর্ম ওয়াংখেড়েতেও নিয়ে এসেছিল। কিন্তু আমার চোখে দু’দলের ব্যাটিংয়ে আসল পার্থক্যটা যে গড়ে দিয়েছিল তার নাম কেভিন পিটারসেন।
ওয়াংখেড়েতে পিটারসেনের ব্যাট করার কৌশলটা ছিল অনন্য। বেশির ভাগই ব্যাকরণ বহির্ভূত শট খেলেছে। ধোনি যে কারণে ফিল্ড সাজাতে যথেষ্ট সমস্যায় পড়েছিল। ওয়াংখেড়েতে কেপির কিছু শট আমার নিঃশ্বাস প্রায় কেড়ে নিয়েছিল। পিটারসেনের মতো অসাধারণ ব্যাটিং যখন কেউ করে, তখন বোলারদের পক্ষে বেশি কিছু করার থাকে না। যদিও আমার মনে হয়, যে পিচে স্পিনারদের জন্য অনেক কিছু ছিল সেখানে ভারতীয় স্পিনাররা আরও অনেক ভাল বল করতে পারত।
আমার নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, প্রতিদ্বন্দীকে তাদের মাটিতে হারানোর চেয়ে বেশি তৃপ্তির আর কিছু হতে পারে না। বিশেষ করে তাদের পরিবেশকেই তাদের কাছে ব্যুমেরাং করে তুলতে পারা। আমি এখনও গর্বের সঙ্গে আমাদের ২০০২ ইংল্যান্ড সফরে হেডিংলে টেস্ট জয়ের কথা ভাবি। টিপিক্যাল ইংলিশ পরিবেশে ওরা রাহুল, সচিন, সৌরভের ব্যাটে দুমড়ে গিয়েছিল। তার পরে আমাদের বোলারদের দাপটে। হেডিংলেতে ইনিংসে জেতার পরে আমরা যেমন চাঙ্গা ছিলাম, এখন ইংল্যান্ড নিশ্চয়ই সে রকমই থাকবে। ভারতের কাছে এখন দুটো চ্যালেঞ্জ। নিজেদের দল হিসেবে ফের গুছিয়ে তোলা, আর মুম্বইয়ের ভুল থেকে শিক্ষা নেওয়া।
মুম্বই টেস্টে পিটারসেন কী প্রচণ্ড চাপে ছিল, খুব ভাল বুঝতে পারছি। প্রচুর বিতর্কের পরে ও সদ্য দলে ফিরেছে। তার ওপর আমদাবাদে ওঝা দু’ইনিংসেই ওকে একেবারে বেঁধে ফেলেছিল। পিটারসেন সেই ধরনের ব্যাটসম্যান যারা বিপক্ষ বোলিংয়ের ঘাড়ে চেপে বসতে পছন্দ করে। ভালবাসে নিজের শর্তে ব্যাট করতে। কিন্তু বোলারদের ওপর প্রাধান্য বিস্তার করতে গিয়ে ওর আউট হওয়ারও ঝুঁকি থাকে। আমদাবাদে দু’ইনিংসেই ওর আউট হওয়ার ধরনটা খানিকটা অদ্ভুত, মজারও। কিন্তু যখন ও পুরো ফর্মে থাকে, ওর ব্যাটিং দেখার অভিজ্ঞতাটা অসাধারণ।
পিটারসেন যেমন ব্যাটে, মুম্বইয়ে তেমনই বল হাতে অনবদ্য ছিল মন্টি পানেসর। আমদাবাদে ওকে না খেলিয়ে ইংল্যান্ড ভুল করেছিল। ভারতের বিরুদ্ধে, বিশেষ করে যেখানে ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা স্পিনটা এত ভাল খেলে, সেখানে বিপক্ষ এক স্পিনারের টেস্ট ম্যাচে ১১ উইকেট পানেসরের স্কিল আর দুর্ধর্ষ পারফরম্যান্সের বিরাট বিজ্ঞাপন। আমদাবাদে বিশাল হারের পরের টেস্টেই ইংল্যান্ডের এ ভাবে উঠে দাঁড়ানোর মধ্যে ওরা অসাধারণ লড়াকু চরিত্রের প্রমাণ দিয়েছে। নাটকীয় ভাবে সিরিজের দৃশ্যপট পাল্টে দেওয়ার জন্যই শুধু নয়। ইংল্যান্ডের জয়টা স্পেশ্যাল এ জন্যও যে, ওরা জিতেছে ভারতীয় পরিবেশে ভারতকে হারিয়ে। এবং এমন একটা কঠিন পিচে, যেটা প্রচুর পরিমাণে টেকনিক আর টেম্পারামেন্ট দাবি করে।
দ্বিতীয় ইনিংসে গম্ভীরের লড়াইটাও তাৎপর্যের। আমি সত্যিই বিশ্বাস করতে চাই, গোতির ভাল সময়ে ফেরার এই শুরু হল। বিশেষ করে যখন ওয়াংখেড়ের ধাক্কা সামলে সিরিজ জেতার জন্য ভারতের টপ অর্ডার থেকে গোলাগুলি ছোটাটা পরের দুটো টেস্টে ভীষণই দরকার।




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.