এলাকার ফরওয়ার্ড ব্লক সাংসদ নৃপেন রায় বটেই, জেলার বাসিন্দা রাজ্যের বনমন্ত্রী হিতেন বর্মনকেও কোচবিহারে রাসমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ করা হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। তৃণমূলের সঙ্গে জোট গড়ে কংগ্রেস কোচবিহার পুরসভার ক্ষমতায় রয়েছে। রাসমেলার অন্যতম আয়োজক পুরসভা। পুর কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ ওঠায় হইচই পড়েছে।
এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ বনমন্ত্রী হিতেনবাবু পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান তৃণমূলের আমিনা আহমেদকে ফোন করে উস্মা প্রকাশ করেছেন। বনমন্ত্রী বলেন, “রাজ্য মন্ত্রিসভায় আমি জেলার একমাত্র প্রতিনিধি। এতদসত্ত্বেও কোচবিহার পুরসভার তরফে মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ পত্র পাঠানো হয়নি। আয়োজকদের ন্যূনতম সৌজন্য বোধ নেই। বিষয়টা ভাইস চেয়ারম্যানকেও বলেছি।”
একই ভাবে রাসমেলার ২০০ বছর পূর্তির উদ্বোধন অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ পাননি বলে জানিয়েছেন কোচবিহারের ফরওয়ার্ড ব্লক সাংসদ নৃপেন রায়। ক্ষুব্ধ সাংসদ বলেন, “মেলার উদ্বোধন মঞ্চকে আয়োজকরা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করতে চান। সে জন্যই আমাদের মত বিরোধী দলের জনপ্রতিনিধিদের একটা কার্ড পর্যন্ত পাঠানো হয়নি। তবে পুরসভার জোট সঙ্গী দলের মন্ত্রী কেন পাননি সেটা বুঝতে পারছি না।” সিপিএমের কোচবিহার জেলা সম্পাদক তথা রাজ্যসভার সাংসদ তারিণী রায় আমন্ত্রণের পদ্ধতি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তারিণীবাবুর কথায়, “আমাকে পুরসভার তরফে কেউ ফোন করে আমন্ত্রণ জানাননি। লোক মারফত একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে মাত্র।” পুরসভা সূত্রেই জানা গিয়েছে, রাসমেলার ২০০ বছর পূর্তির উদ্বোধনের জন্য কংগ্রেস নেতৃত্ব প্রাথমিক ভাবে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দীপা দাশমুন্সিকে আমন্ত্রণ জানানোর কথা ভেবেছিলেন। তৃণমূলের তরফে দীপা দেবীর নাম নিয়ে আপত্তি জানানো হয়। জোটের বাধ্যবাধকতায় শেষ পর্যন্ত ওই পরিকল্পনা থেকে পিছু হটেন পুরসভার কংগ্রেস নেতৃত্ব। বিতর্ক এড়াতে কোচবিহারের জেলাশাসককে দিয়ে মেলার উদ্বোধন করানোর কথা ভাবা হয়। জেলার সভাধিপতি, দুই সাংসদ সহ বিধায়কদের আমন্ত্রণের সিদ্ধান্ত হয়।
এই ব্যাপারে পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান তৃণমূলের আমিনা আহমেদ বলেন, “বনমন্ত্রী সহ সমস্ত বিধায়ক ও সাংসদদের আমন্ত্রণ জানানোর সিদ্ধান্ত হয়। তার পরেও বনমন্ত্রী কেন আমন্ত্রণ না পাওয়ার অভিযোগ করছেন জানি না। খোঁজ নিয়ে দেখেছি আমন্ত্রণ পত্র পাঠানো হয়েছিল।” কোচবিহার পুরসভার চেয়ারম্যান তথা কংগ্রেস নেতা বীরেন কুন্ডু বলেন, “বিতর্ক এড়াতে জেলাশাসককে দিয়ে উদ্বোধন করানোর সিদ্ধান্ত হয়। সকলকে আমন্ত্রণপত্রও পাঠানো হয়েছে। বনমন্ত্রীর বাড়িতে ও জেলার পার্টি অফিস, দুই জায়গায় আমন্ত্রণপত্র পাঠানো হয়েছে।” |