সম্পাদক সমীপেষু...
তিনি নিজেকে বলতেন কৃষকদের চিত্রকর
অগণিত নাগরিকের দারিদ্র ও অসাম্যের অপমানের আলোচনা প্রসঙ্গে অরিন্দম চক্রবর্তী ভিনসেন্ট ভ্যান গঘ-এর ‘দ্য পট্যাটো ইটারস’ (১৮৮৫) ছবিটির উল্লেখ করেছেন, ‘গ্রামগঞ্জে যারা শুধু আলুপোড়া খেয়ে বাঁচছে’, (১৫-১১)। প্রসঙ্গত, ১৮৮৫ সালের ২০ এপ্রিল ভাই থিওকে লেখা চিঠিতে শিল্পী জানিয়েছেন, কেন ছবিটি আঁকলেন‘আমি স্পষ্ট করে দেখাতে চেয়েছি, লণ্ঠনের আলোয় যে হাত দিয়ে মানুষগুলো আলু খাচ্ছে, সেই হাতেই তারা মাটি খুঁড়ে চাষ করছে। সুতরাং সেই কায়িক পরিশ্রম এবং কতটা সৎ ভাবে তারা তাদের খাদ্যের সংস্থান করেছে, সেই কথা ছবিতে ফুটে উঠেছে।...এটি সত্যিকারের একটি কৃষকদের ছবি।’
ভ্যান গঘ নিজেকে একজন কৃষকের চিত্রকর বলে চিঠিপত্রে উল্লেখ করেছেন, দরিদ্র চাষিদের শ্রমের জীবনকে মর্যাদার চোখে এঁকেছেন। চাষের কালচে মাটির রং-মাখা এই ছবিটি সেই মর্যাদার ছবি।
উৎসবও চলছে, অফিসও চলছে দশটা থেকে ছ’টা
‘ছুটি ব্রহ্মময়ী’ (১৫-১১) শীর্ষক সম্পাদকীয়র পরিপ্রেক্ষিতে আমার সাম্প্রতিক আমদাবাদ ভ্রমণের অভিজ্ঞতায় জানাই যে, আমরা যখন পশ্চিমবঙ্গে পুজোর ছুটি উপভোগ করছি, তখন গুজরাতে ঘরে ঘরে পাড়ায় পাড়ায় নবরাত্রি উৎসব পালিত হচ্ছে। কিন্তু ছুটি মাত্র একদিনই বিজয়া দশমীর দিন। মহালয়ার পরদিন থেকে নবরাত্রির সূচনা। রাত দশটার পর গান আর গরবা নাচ চলে রাত দুটো পর্যন্ত। এ রকম নয় রাত তো বটেই, দশমীও পেরিয়ে যায়। কেন্দ্রীয় ভাবে নবরাত্রি উৎসবও পালিত হয় গুজরাত বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশাল ময়দানে। সেখানে যুক্ত রাজ্য সরকার, বিশ্ববিদ্যালয় ও শিল্পমহল। হাজার হাজার তরুণ-তরুণী, আবালবৃদ্ধবণিতা। কিন্তু কী সুশৃঙ্খল! আর দিনের বেলায় যেখানে যত অফিস গাঁধীনগরে বা আমদাবাদে কর্মীদের সকাল ১০টা থেকে ৬টা পর্যন্ত পাওয়া যায়। এ আমার গল্প শোনা নয়, নিজের অভিজ্ঞতা।
তদন্ত যেন প্রহসনে পরিণত না হয়
কিছু দিন আগে প্রকাশিত এস এস কে এম হাসপাতালের শিশুচিকিৎসক ড. অরুণ সিংহের বিষয়ে দুর্নীতি ও দুর্ব্যবহারের অভিযোগে খুবই বিচলিত বোধ করছি। বিভিন্ন কারণে যে সব শিশু স্বাভাবিক ভাবে জন্মলাভ করতে পারে না, তাদের তিন বছর বয়স পর্যন্ত বিশেষ চিকিৎসার জন্য ড. সিংহ পুরুলিয়ার পর কলকাতার এস এস কে এম হাসপাতালে তৈরি করেন নবজাত শিশু বিভাগ ও নিউরো ডেভেলপমেন্ট ক্লিনিক। দুটোই শুধু আমাদের দেশে নয়, আন্তর্জাতিক চিকিৎসা মহলেও উচ্চপ্রশংসিত। যে-রাজ্যের সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসার হাল ভয়াবহ, যে রাজ্যের মানুষ ছোটখাটো কারণেও অন্য রাজ্যে ছোটেন চিকিৎসার জন্য, সেই রাজ্য সরকারি হাসপাতালের এই বিভাগটিকে নিয়ে অবশ্যই গর্ববোধ করতে পারে। এই বিভাগের পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন মেঝে, আধুনিক যন্ত্রপাতি, শিশুদের জন্য রঙিন খেলনা, দোলনা, স্লিপ, সব কিছুই বিরল ব্যতিক্রম।
ছেলের চিকিৎসা সূত্রে এই বিভাগে আমার যাতায়াত। সেখানে দেখেছি, ড. সিংহ খালি পায়ে বাড়ির গৃহকর্তার মতো শিশুদের ও তার পরিজনদের খুঁটিনাটি খোঁজখবর নিচ্ছেন। কোনও শিশুর অভিভাবকের মুখে তাঁর দুর্ব্যবহারের অভিযোগ কোনও দিন শুনিনি। ছেলের দুশ্চিন্তায় অস্থির আমি অসময়ে তাঁকে ফোন করেছি। কিন্তু কোনও দিন তাঁর গলায় আন্তরিকতার অভাব বোধ করিনি। যে মানুষটি সারা জীবন প্রাইভেট প্র্যাক্টিস করলেন না, শুধু সারা জীবন ধরে সরকারি হাসপাতালে আন্তর্জাতিক মানের স্বাস্থ্য পরিষেবা দেওয়ার মতো অসম্ভব কাজকে সম্ভব করে দেখালেন সেই মানুষটির বিষয়ে দুর্নীতির অভিযোগেও বিস্মিত হয়েছি।
এই অভিযোগ অবশ্যই তদন্তসাপেক্ষ। আমরা যারা তাঁর কাছে অশেষ ঋণী, কোনও দিন কিছুই দিতে পারিনিপ্রশাসনের কাছে চাইব, তাঁর প্রতি করা তদন্ত যেন প্রহসনে পরিণত না-হয়। যেন কারও ব্যক্তিগত প্রতিহিংসা বা কোনও বেসরকারি স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানের ঘৃণ্য চক্রান্তের শিকার না হন তাঁর মতো মানুষ।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.