পুর দফতর বণ্টনে ত্রিফলা বিতর্ক এড়ালেন মমতা
মেয়র-সহ মেয়র পারিষদদের মুখ্যমন্ত্রী মহাকরণে ডেকে পাঠিয়েছেন, মঙ্গলবার সকালে এ খবর ছড়ানোর পরেই নানা মহলে রটে যায়, এ বারে হয়তো কলকাতার মেয়র বদল করবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ত্রিফলা আলো নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী কঠোর ব্যবস্থা নিতে পারেন বলেও শোনা যায়। কিন্তু তার বদলে এক মাস আগে হাত থেকে কেড়ে নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ অ্যাসেসমেন্ট ও কর আদায় দফতর ফিরিয়ে দিয়ে মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ের উপর নিজের আস্থাই বোঝালেন মমতা। সেই সঙ্গে বহু বিতর্কিত আলো বিভাগের মেয়র পারিষদ মনজার ইকবালকে স্বপদে বহাল রাখলেন। আর ত্রিফলা-কাণ্ডের সময় পুরসভার অস্বস্তি বাড়ানো মেয়র পারিষদ তারক সিংহের ডানা ছেঁটে মুখ্যমন্ত্রী বুঝিয়ে দিলেন, ত্রিফলা আলো নিয়ে ওঠা অভিযোগগুলিকে তিনি গুরুত্বই দিচ্ছেন না।
কাজে গতি আনতেই মেয়র পারিষদদের দফতরে এই অদলবদল বলে সরকারি সূত্রের বক্তব্য। শোভনবাবু হারানো দফতর যেমন ফিরে পেয়েছেন, তেমনই তাঁর হাতে থাকা রাস্তা ও ইঞ্জিনিয়ারিং দফতর নিয়ে তা অতিরিক্ত হিসেবে দেওয়া হয়েছে স্বাস্থ্য দফতরের মেয়র পারিষদ অতীন ঘোষকে। এর ফলে পুরসভায় অতীনবাবুর গুরুত্ব অনেকটাই বাড়ল।
ত্রিফলা আলো নিয়ে পুরসভার অভ্যন্তরীণ তদন্তের পরে আলো বিভাগের ডিজি-কে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। টেন্ডার ছাড়া ত্রিফলা আলোর বরাত দেওয়া নিয়ে অভিযোগ উঠেছিল খোদ মেয়রের বিরুদ্ধেই। কিন্তু এ দিন মহাকরণের বৈঠকে মমতা ত্রিফলা আলোর বিষয়টিই তোলেননি। তবে ওই বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলে বিতর্ক বাড়ানো তারক সিংহের হাত থেকে এন্টালি ওয়ার্কশপ ও স্টোর্স দফতর দু’টি নিয়ে তা দেওয়া হয়েছে মেয়র পারিষদ (তথ্য) সামসুজ্জামান আনসারিকে। অতীন ঘোষের হাতে থাকা বস্তি বিভাগের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তারকবাবুকে।
শোভন তারক
কেন সরানো হল তারকবাবুকে?
পুরসভা সূত্রের খবর, পুরসভা যে দামে ত্রিফলা আলোর বাতিস্তম্ভ কিনেছে, এন্টালি ওয়ার্কশপ তার থেকেও কম দামে বাতিস্তম্ভ তৈরি করছে বলে দাবি করেছিলেন তারকবাবু। তুলনামূলক কম দামের সেই বাতিস্তম্ভ পুরসভার ওয়ার্কশপ থেকে কেনে কলকাতার লাগোয়া মহেশতলা পুরসভা। যার চেয়ারম্যান দুলাল দাস সম্পর্কে কলকাতার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ের শ্বশুর।
এন্টালি ওয়ার্কশপে কম দামে বাতিস্তম্ভ তৈরি হচ্ছে জানার পরেও কেন পুরসভা বাইরে থেকে বেশি দামে তা কিনল, তা নিয়ে সরব হয় কংগ্রেস এবং সিপিএম। পুরসভার বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্তের দাবিও ওঠে। টেন্ডার ছাড়া ত্রিফলা আলো কেনা নিয়ে এমনিতেই কোণঠাসা ছিলেন মেয়র। তারকবাবুর দাবির পরে বিষয়টি নিয়ে কনট্রোলার ও অডিটর জেনারেলের (সিএজি) দফতর হস্তক্ষেপ করে। সিএজি পুরসভার কাছে ত্রিফলা আলো সংক্রান্ত সব ফাইল চেয়ে পাঠায়। গড়িমসি করলেও পরে মহাকরণের নির্দেশে ওই সব ফাইল দেখাতে সম্মত হয় পুরসভা। পুরসভা সূত্রের খবর, তারকবাবু এন্টালি ওয়ার্কশপ নিয়ে কৃতিত্ব দাবি না করলে পুরসভার ভাবমূর্তি এতটা নষ্ট হত না বলে নালিশ গিয়েছিল মহাকরণে। তার জেরেই তারক সিংহের হাত থেকে ওই দফতর কেড়ে নেওয়া হল বলে পুরসভা সূত্রের খবর।
মহাকরণ সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে মেয়র পারিষদদের বৈঠক ১০ মিনিটের বেশি গড়ায়নি। বৈঠকের পরে দফতর রদবদলের কথা সাংবাদিকদের জানান মেয়র। মহাকরণে রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, মেয়র পারিষদদের কাজের পর্যালোচনা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। শহরকে আরও বেশি পরিষ্কার রাখতে মুখ্যমন্ত্রী পরামর্শও দিয়েছেন।
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.