খুলল প্রধান শিক্ষকের ঘর, ফের সচল স্কুল
প্রায় আড়াই মাস বন্ধ থাকার পরে প্রশাসনের মধ্যস্থতায় অচলাবস্থা কাটল কাটোয়ার চুড়পুনি গ্রামের স্কুলে। আর্থিক গরমিলে অভিযুক্ত ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক পুলিশের খাতায় ‘পলাতক’। একই অভিযোগে অভিযুক্ত স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির কর্মীও ‘বেপাত্তা’। ফলে এত দিন ধরে প্রধান শিক্ষকের ঘর তালাবন্ধ অবস্থা পড়েছিল রাজুয়া চুড়পুনি আমলা বিদ্যাপীঠে। আর্থিক গরমিলের তদন্তের কাজও ব্যাহত হচ্ছিল। মঙ্গলবার দুপুরে পুলিশ, ব্লক প্রশাসনের আধিকারিক, স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান এবং স্কুল পরিচালন সমিতির সভাপতি ও সম্পাদকের উপস্থিতিতে প্রধান শিক্ষকের ঘর খোলা হয়। পুলিশ জানায়, কিছু কাগজপত্র বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
ওই স্কুলের পরিচালন সমিতির সম্পাদক সামসুল আলম ৭ সেপ্টেম্বর কাটোয়া থানায় আর্থিক গোলমালের অভিযোগ করেন। প্রধান শিক্ষক বিশ্বনাথ বালা ছাড়াও এক করণিক, চতুর্থ শ্রেণির কর্মী-সহ কয়েক জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন তিনি। সে দিনই করণিককে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে তিনি জামিনে ছাড়া পান। পরিচালন সমিতির অভিযোগ, সিপিএম পরিচালিত পূর্বতন পরিচালন সমিতি একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ককে স্কুলের জায়গা ভাড়া দিয়েছে। সেই ভাড়ার হিসেবে গরমিল রয়েছে। পাশাপাশি, ওই ব্যাঙ্ক থেকে দু’দফায় কয়েক লক্ষ টাকা ঋণ নেওয়া হয়েছিল। তারও কোনও হিসেব নেই। জুলাইয়ে কংগ্রেস সমর্থিত অভিভাবক প্রতিনিধিরা পরিচালন সমিতির দায়িত্বে আসেন। প্রধান শিক্ষক তাঁদের কোনও হিসেব দেখাতে পারেননি বলে অভিযোগ।
স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, এমন অভিযোগ ওঠার পরে প্রধান শিক্ষক ‘পলাতক’ থাকায় তাঁর ঘর খুলতে পারছে না বর্তমান পরিচালন সমিতি। ফলে, স্কুলের ১৫ জন শিক্ষক অক্টোবরের বেতন পাননি। প্রধান শিক্ষকের ঘর তালাবন্ধ থাকায় তফসিলি জাতি, উপজাতি এবং অনগ্রসর শ্রেণির পড়ুয়ারা কোনও শংসাপত্র পাচ্ছিল না। এ ছাড়াও নানা সমস্যা হচ্ছিল।
স্কুল পরিচালন সমিতি আর্থিক গরমিলের অভিযোগে মহকুমাশাসককেও চিঠি পাঠায়। তা পাওয়ার পরে মহকুমাশাসক আর অর্জুন তদন্তভার দেন কাটোয়ার সহকারী স্কুল পরিদর্শক (মাধ্যমিক) মর্তুজা আলিকে। প্রধান শিক্ষকের ঘর তালাবন্ধ থাকায় প্রথমে তিনি স্কুলে গিয়েও কোনও নথিপত্র না পেয়ে ফিরে যান। একই ঘটনা ঘটে কাটোয়া থানার তদন্তকারী অফিসারের ক্ষেত্রেও। ফলে স্কুলের আর্থিক গরমিলের তদন্ত শুরু করা যাচ্ছিল না। পরিচালন সমিতির সভাপতি রতিলাল সাধু বলেন, “স্কুলের ঘটনা জানিয়ে প্রশাসন ও শিক্ষা দফতরকে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। প্রশাসনের উপস্থিতিতে মঙ্গলবার প্রধান শিক্ষকের ঘর খোলা হবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।” জেলা স্কুল পরিদর্শক (মাধ্যমিক) নিলীমা গিরিও প্রশাসনকে চিঠি দিয়ে এমন পরিস্থিতি কাটিয়ে তোলার অনুরোধ করেছিলেন।
অভিভাবকদের অভিযোগ, স্কুলে মিড-ডে মিলও নিয়ম মতো মিলছিল না। প্রধান শিক্ষক অনুপস্থিত থাকায় সম্প্রতি ভারপ্রাপ্ত শিক্ষকের দায়িত্বে এসেছেন মলয় দত্ত। তিনি বলেন, “শিক্ষকেরা যাতে দু’মাসের বেতন এক সঙ্গে পান, তার ব্যবস্থা করা হয়েছে।” তবে তাঁর দাবি, পরীক্ষা চলার কারণে সাময়িক ভাবে মিড-ডে মিল বন্ধ ছিল।
পুরো পরিস্থিতি সম্পর্কে সিপিএমের কাটোয়া ১ উত্তর লোকাল কমিটির সম্পাদক কমল ঠাকুরের দাবি, “মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসানো না হলে স্কুলে এ রকম অচলাবস্থা তৈরিই হত না।” কংগ্রেস যদিও তা মানতে নারাজ। দলের নেতা বিকাশ মুখোপাধ্যায়ের বক্তব্য, “আর্থিক গরমিলে যুক্ত না থাকলে প্রধান শিক্ষক না পালিয়ে নতুন সমিতিকে হিসেব দিতেন।” এ দিন ঘর খোলার সময়ে ছিলেন মতুর্জা আলি। তিনি বলেন, “মহকুমাশাসক যে তদন্তভার দিয়েছেন তার কাজ শুরু হয়েছে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.