রাস্তা আছে। তবে বৃষ্টি হলে তা দিয়ে চলার উপায় নেই। কাঁচা নদর্মা উপচে রাস্তায় জল জমে থাকে সারা বছর। নলকূপ থাকলেও তা যথেষ্ট নয়। এমনই অভিযোগ গলসি ১ ব্লকের মানকর গ্রাম পঞ্চায়েতের মাড়ো গ্রামের বাসিন্দাদের। তাঁদের ক্ষোভ, স্থানীয় পঞ্চায়েত বা প্রশাসন, কেউই গ্রামের উন্নয়নে নজর দেন না। বাধ্য হয়ে গ্রামবাসীরাই কিছু কিছু কাজ করে নিয়েছেন। পঞ্চায়েত প্রধান অবশ্য দ্রুত উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
মাড়ো গ্রামে বাসিন্দার সংখ্যা প্রায় চার হাজার। অধিকাংশই কৃষিকাজ করেন। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, গ্রামে উন্নয়নমূলক কোনও কাজই হয়নি। যা হয়েছে তা নেহাতই দায়সারা। তাঁদের ক্ষোভ, স্থানীয় পঞ্চায়েতের উদাসীনতার কারণেই গ্রামের এই হাল। তাঁদের অভিযোগ, রাস্তায় মোরাম বিছানো হয়েছিল। কিন্তু তা অপর্যাপ্ত। রাস্তা এবড়ো খেবড়ো। একটু বৃষ্টিতেই জল দাঁড়িয়ে যায়। মাড়ো গ্রামের গয়লা পাড়ার বাসিন্দা দিনু বাউরি, উদয় বাউরিদের দাবি, “বর্ষায় রাস্তার অবস্থা এতটাই খারাপ হয়ে যায় যে গরুর গাড়ি পর্যন্ত ঢোকে না। কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে আমরা কাঁধে করে গ্রামের বাইরে তাঁকে নিয়ে গিয়ে গাড়িতে চড়াই।” তাঁদের অভিযোগ, “রাস্তার পাশে কোনও পাকা নিকাশির ব্যবস্থা না থাকায় সারা বছর নর্দমার নোংরা জল উপচে পড়ে। মশা মাছির উপদ্রব বাড়ছে। গ্রামবাসীদের ক্ষোভ, পঞ্চায়েতের প্রায় প্রতিটি গ্রামেই সজলধারা প্রকল্পের মাধ্যমে বাড়ি বাড়ি জলের ব্যবস্থা করা হয়েছে। |
কোনটা রাস্তা আর কোনটা নর্দমা? —নিজস্ব চিত্র। |
কিন্তু মাড়ো গ্রামের বাসিন্দাদের কাছে আজও ভরসা কেবল কয়েকটি নলকূপ।
গ্রামে গিয়ে দেখা গেল, কোনও পাকা নিকাশির বালাই নেই। অনেক জায়গায় নর্দমার জল উপচে পড়েছে। রাস্তার হালও খারাপ। গ্রামবাসী হরপ্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায়, জয়দেব বন্দ্যোপাধ্যায়দের দাবি, “নিজেদের চেষ্টায় রাস্তায় মোরাম দিয়েছি। পাড়ায় কাঁচা নর্দমাও তৈরি করেছি।” তাঁরা আরও জানান, গ্রামে সপ্তাহে দু’দিন হাট বসে। আশপাশের বহু গ্রামের ক্রেতা-বিক্রেতারা এখানে আসেন। কিন্তু বর্ষার সময়ে তাঁরাও গ্রামে ঢুকতে ভয় পান। ফলে ব্যবসার ক্ষতি হয়।
স্থানীয় তৃণমূল নেতা বাপ্পাদিত্য রায়ের অভিযোগ, “বার বার পঞ্চায়েতকে গ্রামের দুর্দশার কথা লিখিত ভাবে জানানো হয়েছে। এক বার এক বিডিও এই গ্রামে এসে সরেজমিনে পরিস্থিতি দেখে গিয়েছিলেন। আশ্বাসও দিয়েছিলেন। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি।” অন্য এক তৃণমূল নেতা রাসু মেটের অভিযোগ, “গ্রামের সব থেকে খারাপ অবস্থা গয়লাপাড়ার রাস্তার। কাঁচা নর্দমাও নেই। সারা বছর ওই রাস্তায় নোংরা জল দাঁড়িয়ে থাকে।”
যদিও মানকর পঞ্চায়েত প্রধান সুরজিৎ বাউরি দাবি করেন, আগের থেকে অবস্থা এখন অনেকটা ভাল। তবে সব কাজ এখনও করা সম্ভব হয়নি। সুরজিৎবাবু বলেন, “খুব তাড়াতাড়ি রাস্তা কংক্রিটের করা হবে। রাস্তার পাশে পাকা নিকাশিও গড়ে দেওয়া হবে। সে ব্যাপারে পরিকল্পনা চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছে।” সজলধারা প্রকল্প প্রসঙ্গে তিনি জানান, প্রকল্পের জন্য অর্থিক অনুদান এসে গিয়েছে। দ্রুত তা রূপায়িত হবে। |