|
|
|
|
নতুন দফতর নেবেন না সিঙ্গুরের শিক্ষক |
নিজস্ব প্রতিবেদন |
অপছন্দের দফতরে মন্ত্রিত্ব নিতে রাজি নন, শুক্রবার সাফ জানিয়ে দিলেন সিঙ্গুরের বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য। “আমাকে যে দফতর (পরিসংখ্যান ও প্রকল্প রূপায়ন) দেওয়া হয়েছে, তা নিতে আমি প্রস্তুত নই।” দলকে কি সেটা জানিয়েছিলেন? পাল্টা প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন ‘মাস্টারমশাই’, “কাকে জানাব? দলের কেউ তো আমার সঙ্গে যোগাযোগই করেনি।” কেন? মুখ্যমন্ত্রী নিজেই তো আপনাকে গতকাল (বৃহস্পতিবার) ফোন করেছিলেন। কী কথা হল তাঁর সঙ্গে? উত্তর এল, “সে ব্যাপারে কোনও কথা বলব না।” রাজনীতি থেকে অবসর নিচ্ছেন কি না, সে প্রশ্নও এড়িয়ে গেলেন তিনি। বললেন, “সময়ই অনেক সময় কথা বলে।”
কিন্তু সময় ভাল যাচ্ছে না মাস্টারমশাইয়ের। মমতা মন্ত্রিসভা গঠনের পরে পঞ্চায়েত দফতর পেয়েছিলেন চন্দ্রনাথ সিংহ। তাঁর
কাজ নিয়ে অসন্তোষ ছিল বলেই মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে ঠেলে দিয়েছিলেন ‘পরিসংখ্যান ও প্রকল্প রূপায়ন’ দফতরে, এমনই শোনা গিয়েছিল তখন। স্বভাবতই রবীন্দ্রনাথবাবুকে সেই একই দফতরের মন্ত্রী করায় তাঁর প্রতি অনাস্থার প্রকাশ দেখছেন অনেকে। রবীন্দ্রনাথবাবুর নতুন দায়িত্ব প্রসঙ্গে শুক্রবার রাজ্য মন্ত্রিসভার এক সদস্যের প্রতিক্রিয়া, ‘গ্যারেজ পোস্টিং’। রাজ্যের শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় অবশ্য বলেন, “ওঁকে এটা (পদত্যাগ) করতে বারণ করেছিলাম।”
কেন সরে যেতে হল রবীন্দ্রনাথবাবুকে, তা নিয়ে নানা মতামত পাওয়া যাচ্ছে। এক পক্ষের বক্তব্য, রবীনবাবুর কাজ নিয়ে ক্ষোভ ছিল। কলকাতার টাউন হলে গত ২৬ সেপ্টেম্বর ‘সবুজ বিপ্লব’ সংক্রান্ত বৈঠক হয় পাঁচ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও কৃষিমন্ত্রীর সঙ্গে। কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী শরদ পওয়ারও ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। ওই বৈঠকে রাজ্যের কৃষি-চিত্র ঠিকঠাক তুলে ধরতে পারেননি রবীন্দ্রনাথবাবু। মমতা-ই পরিস্থিতি সামলান। রাজ্যে বিভিন্ন কৃষি প্রকল্পে অগ্রগতির হার বেশ কম। সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগতেন তিনি, মোবাইল ব্যবহার না-করায় তাঁর সঙ্গে প্রয়োজনে যোগাযোগ করাও সমস্যা ছিল। অন্য পক্ষের বক্তব্য, এই অভিযোগ সর্বাংশে সত্য নয়। আদ্যোপান্ত সৎ ভাবমূর্তির ‘মাস্টারমশাই’ কোনও রকম আপস করেননি।
তৃণমূল সূত্রের খবর, সিঙ্গুর ও হরিপালে এক সময়ে যেমন প্রাক্তন দুই সিপিএম সাংসদ অনিল বসু ও রূপচাঁদ পালের গোষ্ঠীর মধ্যে আড়াআড়ি বিভাজন হয়েছিল, তৃণমূলেও একই ছবি ফুটে উঠেছে এখন। গোষ্ঠী কলহের কারণেই সম্প্রতি সিঙ্গুরের এক পঞ্চায়েত প্রধানকে পদত্যাগ করতে হয়। পদত্যাগী প্রধান দলের অন্দরে রবীন্দ্রনাথবাবুর ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত। গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জন্য হরিপাল কলেজে একাধিক বার সংঘর্ষের পরিস্থিতিও তৈরি হয়। রাজ্য নেতৃত্ব সেই কারণে স্থানীয় নেতাদের উপর রাশ টানতে চাইছিলেন। রাজ্য তৃণমূল নেতাদের কথায়, বেচারামবাবুকে সামনে রেখে সিঙ্গুর-হরিপাল-সহ বিভিন্ন জায়গায় আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে যেতে চাইছেন মমতা। তাই ছাত্র এ বার এল সামনে। সরে দাঁড়ালেন মাস্টারমশাই। |
|
|
|
|
|