মিড ডে মিলের জন্য ভর্তুকি দিয়ে এলপিজি সিলিন্ডার দেওয়া যাবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে পেট্রোলিয়াম মন্ত্রক। শুক্রবার রাজ্যসভায় এ কথা জানিয়েছেন মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী শশী তারুর। নিরুপায় হয়ে তারা এখন অর্থ মন্ত্রকের দ্বারস্থ হচ্ছে বলে মন্ত্রক সূত্রের খবর।
এলপিজি সিলিন্ডারে ভর্তুকি বন্ধ হওয়ায় মিড ডে মিল প্রকল্পের যে সঙ্কট, তা মূলত শহরকেন্দ্রিক। কারণ শহরেই মিড ডে মিলের রান্নার জন্য এলপিজি সিলিন্ডার ব্যবহার করা হয়। গ্রামাঞ্চলে এখনও প্রধান জ্বালানি কাঠ বা কয়লা। মানবসম্পদ মন্ত্রকের হিসেব অনুযায়ী, শহরাঞ্চলেই বাড়তি দামে মিড ডে মিলের জন্য এলপিজি সিলিন্ডার কিনতে হলে অতিরিক্ত ৭০০ কোটি টাকা লাগবে (যদি ছ’টি সিলিন্ডারেই ভর্তুকি দেওয়া হয়)। পেট্রোলিয়াম মন্ত্রক তাদের আর্জি নাকচ করে দেওয়ায় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক এখন এই টাকার সংস্থান করতে অর্থ মন্ত্রকের দ্বারস্থ হচ্ছে। তাদের বক্তব্য, আগামী বাজেটে ওই অর্থের ব্যবস্থা করুক অর্থ মন্ত্রক। আর আপাতত চলতি আর্থিক বছরের শেষ ক’মাসের জন্যও অতিরিক্ত টাকা দিক।
ছ’টির বেশি এলপিজি সিলিন্ডারে ভর্তুকি বাতিলের যে সিদ্ধান্ত পেট্রোলিয়াম মন্ত্রক নিয়েছে, মিড ডে মিল প্রকল্পকে তার থেকে ছাড় দেওয়ার আবেদন জানিয়েছিল মানবসম্পদ উন্নয়ন দফতর। তা না করলে শহরাঞ্চলে প্রকল্পটি বন্ধ হওয়ার আশঙ্কাও করেছিল এই মন্ত্রক। আর এই প্রকল্প বন্ধ হলে গোটা স্কুলশিক্ষার উপরে বিরূপ প্রভাব পড়বে।
তখন মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী ছিলেন কপিল সিব্বল। মিড ডে মিল প্রকল্পের জন্য ভর্তুকিতে এলপিজি সরবরাহ করতে বাড়তি যে অর্থের প্রয়োজন হবে, আগামী বাজেটে তার সংস্থান করতে পেট্রোলিয়াম মন্ত্রককে পরামর্শও দেন সিব্বল। বর্তমান মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী এম এম পাল্লাম রাজু-ও সম্প্রতি আশ্বাস দিয়েছিলেন, “মিড ডে মিলের জ্বালানির খরচ সংক্রান্ত সমস্যা মেটানোর চেষ্টা করছি এবং আশা করছি এর সমাধান করা যাবে। তবে যে কোনও মূল্যে মিড-ডে মিলের খাবারের মান এবং পরিমাণ বজায় রাখা হবে।”
স্কুলশিক্ষা প্রসারের ক্ষেত্রে মিড ডে মিলের গুরুত্ব কেউই অস্বীকার করেন না। ওই প্রকল্প বন্ধ হয়ে গেলে স্কুলে পড়ুয়াদের আসাও কমে যাবে বলে শিক্ষাজগতের সঙ্গে যুক্ত অনেকেই মনে করেন। সেই প্রেক্ষিতে পেট্রোলিয়াম মন্ত্রকের সিদ্ধান্তের কড়া সমালোচনা করেছেন পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। তিনি বলেন, “কেন্দ্রে যে জনবিরোধী সরকার রয়েছে, এই সিদ্ধান্তই তার প্রমাণ। ওরা শিশুদের মুখের খাবারও কেড়ে নিতে চাইছে।” তবে ব্রাত্যবাবুর আশ্বাস, কোনও ভাবেই এই প্রকল্প যাতে বন্ধ না হয়, তা দেখবে রাজ্য সরকার।
রাজ্য সরকারের আশ্বাসেই স্কুলগুলি বাড়তি টাকা দিয়ে এলপিজি সিলিন্ডার কিনে চলেছে। টাকি বয়েজ গভর্নমেন্ট বয়েজ স্কুলের প্রধান শিক্ষক পরেশ নন্দ এ দিন বলেন, “সর্বশিক্ষা মিশন থেকে আমাদের বলা হয়েছে, বেশি টাকা দিয়ে গ্যাস কিনুন। সেই বিল আমাদের কাছে জমা দিলে টাকা পেয়ে যাবেন। গত মাসে বেশি টাকা দিয়েই গ্যাস কিনেছি। তার বিলও জমা দিয়েছি। এখন দেখা যাক!”
একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা দক্ষিণ কলকাতার ৪৮টি স্কুলে মিড ডে মিল দেয়। ওই সংস্থার সম্পাদক মধুমিতা মুখোপাধ্যায় বলেন, “প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ থেকে আমাদের বলা হয়েছে, কোনও অবস্থাতেই এই প্রকল্প বন্ধ করা যাবে না। প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ুয়া-পিছু ৩ টাকা ৩৩ পয়সা এবং ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ুয়া-পিছু সাড়ে ৪ টাকা দেয় সরকার। এলপিজি সিলিন্ডার কিনতেই যদি সব চলে যায়, তবে পড়ুয়ারা খাবে কী!”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.