|
|
|
|
উত্তরের চিঠি |
|
বালুরঘাটের সুনীল-স্মরণ |
|
অরাজনৈতিক শব্দটাই কোনও পক্ষ নেওয়ার সামিল। রাজনৈতিক ভাবে দুটো প্রেক্ষিত থাকতে পারে। এক সক্রিয়, দুই নিষ্ক্রিয়। কিন্তু অনুষ্ঠানে শুধুমাত্র রাজনৈতিক ব্যক্তি ব্রাত্য বলার মাঝে ডাবল স্ট্যান্ড আছে। কেননা ৪ নভেম্বর রবীন্দ্রসদনে সুনীলবাবুর স্মরণসভায় যে জনপ্লাবন চোখে পড়ল, তা নিঃশব্দে পুরুষ শব্দকে অতিক্রম করে গিয়েছে। একচিলতে ঘরে বসে কলম দিয়ে বিপুল মানুষকে রিলেট করার যার ক্যারিশমা, তিনি মহান পুরুষ। তাই তো বেঁচে থাকতেই কমিট করেছিলেন, প্রাণ থাকতে কোনও দিন পথে নামবেন না, নামেনওনি। তিনি কথা রেখেছেন। যখন নামলেন তখন আর ফেরা হল না! শেষদিন পর্যন্ত ভিজিল, মুখঢেকে বইপাড়া কলেজ স্ট্রিটের পথে নয়, কলম কাগজেই প্রতিবাদ জোরালো করে রেখেছিলেন মানুষটা। তিনি সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁরও কী কোনও রাজনৈতিক দর্শন ছিল? কখনও তা প্রকট হয়েছে পত্র-পত্রিকায়। সেই মতো ছিল তাঁর একান্ত ব্যক্তিগত এবং অনেকেরই ভ্রূ-কুঞ্চনের কারণ! সে মূল্যায়নের কাজটা সময় তার মতো করে নেবে। কিন্তু ৪ নভেম্বর তাঁর স্মরণসভায় সমাগত সকল মানুষই যে একশো শতাংশ অ্যাপলিটিক্যাল ছিলেন, তা ঠিক নয়। ভিড়েঠাসা রবীন্দ্রসদনে লাইনে দাঁড়ানো হাজার মানুষের অনেক মুখই সে দিন ছিল কোনও না কোনও বর্ণের সমর্থক। তাই গত ৬/১১/১২-র আনন্দবাজার পত্রিকায় শুধু বেছে বেছে রবীন দেবকে বিদ্ধ করা অযৌক্তিক নয়, অন্যায়। কেন না পারিবারিক সম্পর্ক, ভালবাসা, বন্ধুত্ব যখন একটা পর্যায়ে সম্পৃক্ত হয়ে আসে, তখন আয়োজকদের সতর্কবাণী, রক্তচক্ষু, সম্মানহানি বা কাগজে লিড হয়বার ভয়ই থাকে না। তাই মনের সাড়ায়, হৃদয়ের আহ্বানে হাজার হাজার জনস্রোতে একটি বিরল মুখ যদি মৃত্যুর পরও ‘কাছের মানুষ’-এর স্মৃতি তর্পণে উপস্থিত থাকেন, তাতে ‘রাজনীতির চোনা’ পড়ে না। কেন এই বিভাজন? কোন পরিস্থিতি দায়ী এই পরিবেশের আয়োজনে? রঙ, বর্ণ-গন্ধের অচির যাতায়াতে রুখে দাঁড়াল আমার বাংলা। বিভাজন সংস্কৃতির জন্য কাকপুচ্ছের আভরণ প্রাপ্য এ রাজ্যের। সেই পরিবেশ আমরা রাখতে পারলাম কই? যেখানে আট থেকে আশির সর্বময় লেখক নীললোহিত অন্তর্হিত হওয়ার পরও দলমতনির্বিশেষে সকলে চোখ বুজে মানুষটিকে স্মরণ করতে পারেআমরা আবারও ব্যর্থ। সুনীলবাবু এমনটা কখনও চাননি। তাঁর কাছে সকল মানুষই ছিলেন শুধু মানুষ। তাই তো সুনীলবাবুই ভুবনডাঙার কিশোরকে দিতে পেরেছিলেন বোতাম ছেঁড়া শার্ট। আমরা পারিনি! আর তাই এই উদার মানুষটিরই স্মরণসভায় রাজনৈতিক সন্ত্রস্ত মানুষগুলো রাজনীতিকে অচ্ছুত করে রাখলেন। অসম্মানের জন্য আমন্ত্রণপত্র তাঁদের হাতেও পৌঁছয়নি। সুনীলবাবু কখনও এমনটা চাননি। তবে কেন, কীসের এই মনোনয়ন। পলিটিক্যাল পার্সন হলে তাঁর স্মরণসভায় প্রবেশ নিষিদ্ধ, এই ঐতিহ্য পশ্চিমবঙ্গ কখনও দেখেনি। এই প্রথম দেখল! হয়তো বা জোনাল-লোকাল মেম্বারের ব্রাত্য থাকার বিজ্ঞাপন বেরুলে আরও মানুষ অ্যাবসেন্ট থাকতেন। যেমন অনেকেই অনুষ্ঠানের সীমাবদ্ধতা থাকায় যাননি। মনের সাথে দ্বিধা-দ্বন্দ্ব চলার পরও যাননি। কষ্ট হয়েছে, তবু আয়োজকদের ফতোয়াকে অবমাননার দৃষ্টান্ত তারা রাখতে চাননি। স্মরণসভার শ্রেণি বিভাজনে স্বর্ণপদকে ভূষিত হল ৪ নভেম্বর। তবে সে দিন রবীন্দ্রসদনে উপস্থিত মানুষগুলোর প্রকৃত ডেজিগনেশন কী ছিল, জানতে ইচ্ছে করে। কোন মনন, মুখশ্রী, কালার তাদের সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক নির্মাণে সাহায্য করেছিল, জানলে ভাল লাগত। তাই সে দিন সন্ধ্যায় বার বার মনে হয়েছিল, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের মৃত্যুর পরও ‘আমরা-ওরা’ ভাঙব বলে যারা বিজ্ঞাপন দিয়েছিলেন, তারাও সেই ‘আমরা’ হয়েই রবীন্দ্রসদনের চেয়ারে বসে সুনীলস্মরণের মাধ্যমে একটা বিচ্ছিন্ন শ্রেণি হয়ে থাকলেন ধূসর বর্ণের মাঝে। যাঁর মৃত্যুর শেষ যাত্রায় সকলে মিলে গিয়েছিলেন, মিশে গিয়েছিলেন বর্ণহীন ফুলের শ্রদ্ধায়তাদেরই আবার দূরে ঠেলে দিল ৪ নভেম্বরের রবীন্দ্রসদন।
সন্দীপন নন্দী, বালুরঘাট।
|
আমরা কত শোষিত হব |
বাড়ির রান্নার গ্যাস সিলিন্ডার বর্তমান দামে বছরে ৬টির বেশি পাওয়া যাবে না। কোনও পরিবারেই ৬টি গ্যাস সিলিন্ডারে বছর চলবে না। পরবর্তী সিলিন্ডার কিনতে হবে কমপক্ষে ৭৫০ টাকায়। প্রকৃত দাম সময়ের সঙ্গে কত বাড়বে বলা মুশকিল। তা সরকারের সিদ্ধান্ত। পেট্রোল, ডিজেলের দাম ক্রমান্বয়ে বেড়ে চলেছে, বাড়তেই থাকবে। আর এর উপর নির্ভর করে পরিবহণ খরচের জন্য নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম চাল, তেল, আটা, ডাল, চিনি ইত্যাদির দাম প্রতি দু’বছরে প্রায় দ্বিগুণ হচ্ছে। ২ বছর আগে যারা ব্যাগ-ভর্তি বাজার করত এখন তারা হাফ ব্যাগ বাজার করতে হিমশিম খাচ্ছে। আতিথেয়তায় বিস্কুট, কোল্ড ড্রিঙ্ক, মিষ্টি খাওয়ানো এখন চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। দেশের অর্থনীতি সাধারণ লোক বোঝে না। বুঝতে পারবেও না। দেশে জি ডি পি ৮.৫/৯.৫ আমরা বুঝি না। বছরের পর বছর পেরিয়ে যায় দেশের অর্থনীতি চাঙ্গা করতে। জিনিসপত্রের দাম সর্বক্ষেত্রে বেড়েই চলে। গরিব, সাধারণ মানুষ পেট পুরে খেতে পারে না। ছেলেমেয়েদের প্রাইভেট প্রাথমিক স্কুলে পড়াতে পারে না। উচ্চশিক্ষা দিতে পারে না। কেননা বর্তমানে যে কোনও উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে প্রচুর টাকা প্রয়োজন। চিকিৎসাও করাতে পারে না। কারণ যে কোনও নার্সিংহোমে ৩০-৪০-৫০ হাজার টাকার নীচে বিল হয় না। মরলেও বিল চোকাতে হয়। সরকারি হাসপাতালে হয় ‘রেফার’ চলবে নতুবা সঠিক চিকিৎসার অভাবে ধুকে ধুকে মরতে হবে। দেশের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে কিছু মিন্ত্রী লক্ষ কোটি, হাজার কোটি, শত কোটি টাকা, বোফর্স কেলেঙ্কারি, কমনওয়েলথ গেমস কেলেঙ্কারি, ২জি স্পেকট্রাম কেলেঙ্কারি, কয়লা খাদান বণ্টনআরও কত কেলেঙ্কারির টাকা এবং সেই সঙ্গে বিদেশের নানা ব্যাঙ্কে গচ্ছিত কালো টাকাগুলো বের করতে পারলে তো সেই লক্ষ্যপূরণ অনায়াসে সম্ভব হয়ে যাবে এবং গরিব মানুষদের জন্য বা দেশের বহুমুখী উন্নয়নকল্পে বহু প্রকল্পই রূপায়ণ করা সম্ভব হবে। দুঃখের বিষয় আজ পর্যন্ত কোনও কেলেঙ্কারিরই সুরাহা শুনলাম না। জনসাধারণের টাকা লুট করে এক শ্রেণির মন্ত্রী, শিল্পপতি, জনপ্রতিনিধি বা শাসকবর্গ রাজার হালে জীবনযাপন করছেন। এক শ্রেণির নিম্ন মধ্যবিত্ত মানুষ, অর্থাৎ দেশের বড় অংশের মানুষ যার ভোটে শাসকগণ নির্বাচিত হচ্ছেন, যাদের তারা শাসন করছেন, তাঁদের উপরে জোর করে চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে দেশদারিদ্রতার ভার। অশিক্ষিত, অর্ধশিক্ষিত, গরিব, জীবন সংগ্রামী, সংগ্রামের ভারে ভারাক্রান্ত মানুষ তা অনুভব করলেও বিশ্লেষণ করতে চায় না। প্রতিবাদের ভাষা খুঁজে পায় না বা তাঁদের কথা কোনও কাজে আসে না। এ ভাবেই তাঁদের জীবনাবসান হয়ে যায়। এ সবের প্রতিবাদ বা প্রতিকার কি নেই? দেশ কি এ ভাবেই চলবে? পরবর্তী প্রজন্ম বাঁচবে কী করে?
জ্যোতির্ময় রায়। আলিপুরদুয়ার।
|
স্বাস্থ্যে মানবিক মুখ |
দক্ষিণ দিনাজপুরের রবীন হেমব্রম অস্ত্রোপচারের পর বাক্শক্তি ফিরে পাওয়ার খবর পড়ে (২৬.৭.১২) যারপর নাই বিস্মিত ও হতবাক হয়েছি। ডোমকল মহকুমা হাসপাতালের সেই চিকিৎসক তারিক আনোয়ার ওই হাসপাতালের অপর্যাপ্ত পরিকাঠামোয় দাঁড়িয়ে যে ভাবে সফল অস্ত্রোপচার করে রবীনবাবুর বাক্শক্তি ফিরিয়ে দিয়েছেন তার জন্য শুধু ধন্যবাদই যথেষ্ট নয়, তিনি যা করেছেন তা একজন রোগী বা তাঁর পরিবারের প্রত্যাশার চেয়ে অনেক গুণ বেশি। যা কি না মানবিকতার অন্যতম শ্রেষ্ঠ উদাহরণ হয়ে থাকল। এই চিকিৎসক এটা অন্তত বুঝিয়ে দিয়েছেন যে সরকারি হাসপাতালে পরিকাঠামোগত অভাব সত্ত্বেও কেবলমাত্র সদিচ্ছা, সহমর্মিতা তৎপরতা দিয়েই অনেক কিছু করা যায়। পাশাপাশি ওই দিনের সংবাদপত্রেই প্রকাশিত উলুবেড়িয়ার এক রোগীর ভাঙা হাড় জোড়া না-লাগার খবর পড়ে মনে হবেই যে, উলুবেড়িয়ার বে-সরকারির হাসপাতালের চিকিৎসায় কিছুটা হলেও গাফিলতি ছিল। না হলে এক ঘটনায় মহকুমা শাসক, রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা ও হাসপাতালের সুপারের বক্তব্যে এই ডাক্তারবাবুর কাজে প্রশংসা করা এবং তার থেকে নিজেরা উৎসাহিত হওয়া, প্রেরণা পাওয়ার ছবি ফুটে ওঠার পাশাপাশি চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগে ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে যাওয়ার মতো ঘটনাও দেখতে পাই। তাই আমাদের আশা, স্বপ্ন এই যে, ডাঃ তারিক আনোয়ারের মতো চিকিৎসক যেন মানবিক কাজে যুক্ত থেকে সফল হওয়ার যে আনন্দ তার মূল্য কিন্তু অপরিসীম। আর যদি ব্যর্থতাও আসে তা হলেও মনে এই তৃপ্তিটাও আসবে যে তিনি তার সর্বোৎকৃষ্ট সেবা দিয়ে চেষ্টা করেছেন, যেখানে কোনও ফাঁকি ছিল না। মৃদুলকুমার ঘোষ, মালদা।
|
আজও দিনহাটার স্টেডিয়াম হল না |
|
স্বপ্ন পূরণ হল না ক্রীড়াপ্রেমীদের। দুই যুগ পার হয়ে গেলেও অসম্পূর্ণ প্রস্তাবিত স্টেডিয়ামটি। দিনহাটার কাছাকাছি পুঁটিমারিতে স্টেডিয়ামের জন্য জায়গা নিয়ে শুরু হয় কাজ। প্রাচীর গাঁথা হলেও আজ সেগুলো ভেঙে পড়ছে। চরছে গবাদি পশু। অথচ কোচবিহার জেলার অন্যতম খেলাধুলোর শহর দিনহাটা। শহরের বুকে একমাত্র সংহতি ময়দানেই যাবতীয় খেলাধুলো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, মেলা হয়ে থাকে। ফলে স্টেডিয়ামের প্রয়োজনীয়তার কথা বলার অপেক্ষা রাখে না। সংশ্লিষ্ট স্টেডিয়াম কর্তৃপক্ষের কাছে তাই প্রশ্ন, কবে হবে আমাদের স্বপ্নের স্টেডিয়াম?
শুভাশিস দাশ, দিনহাটা। |
উত্তরের চিঠি পাঠান নাম এবং সম্পূর্ণ ঠিকানা উল্লেখ করে। |
|
|
|
|
|
|