|
|
|
|
সাহায্য নৌকাডুবিতে |
মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ, নিয়ম ভেঙে টাকা বিলোলেন অমিত |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
এক দিকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ। অন্য দিকে সরকারি নিয়ম। এই অবস্থায় মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মানাই শ্রেয় বলে মনে করলেন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ অনুযায়ী ‘নিয়ম ভেঙেই’ রবিবার তিনি পানিহাটির নৌকাডুবিতে মৃতদের মাথাপিছু এক লক্ষ টাকার চেক তুলে দিয়েছেন তাঁদের পরিবারের হাতে।
গত ১২ মে গভীর রাতে গঙ্গায় নৌকা ডুবে পানিহাটি-পঞ্চাননতলার ছ’জন বাসিন্দা মারা যান। পরের দিনই ঘটনাস্থলে যান অর্থমন্ত্রী। মৃতদের প্রত্যেকের পরিবারকে দু’লক্ষ টাকা সরকারি সাহায্যের প্রতিশ্রুতিও দেন তিনি। রবিবার পঞ্চাননতলায় একটি ক্লাবে সেই প্রতিশ্রুতি রাখতে গিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী সে-দিনই বলেছিলেন, যে-ভাবেই হোক টাকাটা দিতে হবে। নিয়মের ফাঁস যতই থাক, মানুষের জন্যই
তো মা-মাটি-মানুষের সরকার।
নিয়ম ভেঙেই বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর থেকে সংশ্লিষ্ট সব
পরিবারের হাতে আপাতত এক লক্ষ টাকার চেক তুলে দিলাম। লাল ফিতের ফাঁস কেটে বাকি টাকা অর্থ দফতর বা অন্য যেখান থেকেই হোক, যত দ্রুত সম্ভব দিয়ে দেব। কারণ, মুখ্যমন্ত্রীই দিতে বলেছেন।’’
অমিতবাবুর বক্তব্যের আগে স্থানীয় সাংসদ তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সৌগত রায়ও বলেন, ‘‘নৌকাডুবিতে মৃত্যু হলে সেটা বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের আওতায় আসে না। তবু আমাদের সরকার মানুষের পাশে থাকতে চায়। তাই নিয়ম ভেঙেই এই ব্যবস্থা।’’
কিন্তু যে-দুর্ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সরকারকে নিয়ম ভাঙতে হল, তা এড়ানোর জন্য এখনও পর্যন্ত কী কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে? দুর্ঘটনার রাতে যে-সব নৌকায় যাত্রী পারাপার করা হচ্ছিল, যাত্রী বহনের জন্য সেগুলির কোনও ছাড়পত্র নেই বলে তখনই প্রশাসনিক সূত্রে জানিয়ে দেওয়া হয়। এমনকী ওই সব নৌকা চালানোর বৈধতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছিল। ওই সব দাঁড় বাওয়া নৌকা সাধারণত মাছ ধরার কাজে ব্যবহার করা হয়। কিন্তু প্রথা মেনে দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে ওই ধরনের নৌকায় কোন্নগরের শকুন্তলা কালীপুজোয় যেতেন সুখচর এবং আশপাশের বাসিন্দারা। মাত্রাছাড়া ভিড়ের চাপে টালামাটাল নৌকা বিপজ্জজনক ভাবে চলাচল করত বলে প্রত্যক্ষদর্শীরাও প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করেন। এই ছবিটা নতুন নয় এবং ওই দুর্ঘটনার পরে সেটা বদলেও যায়নি। ছবিটা বদলানোর জন্য কোনও ব্যবস্থা হয়েছে কি?
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘‘সরকার এটা নিয়ে ভাবছে। ইতিমধ্যেই স্থানীয় প্রশাসনকে ব্যবস্থা নিতে বলেছি। এই ধরনের নৌকার নির্দিষ্ট সংখ্যা এবং কী কী সমস্যা আছে, তা জেনে সরকারি সাহায্যের ব্যবস্থা করা যেতে পারে। নৌকাগুলিতে লাইফ জ্যাকেট, আলো, মোটরের ব্যবস্থা করতে ঋণও দেওয়া যেতে পারে।’’ মন্ত্রীর পাশে দাঁড়িয়ে উত্তর ২৪ পরগনার জেলাশাসক সঞ্জয় বনশল বলেন, ‘‘নৌকার মাঝিদের জন্য অসামরিক প্রতিরক্ষা বিভাগ থেকে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করছি। পরিবহণ দফতরে কথা বলে ওই সব নৌকাকে লাইসেন্স দেওয়ার কথাও ভাবা হচ্ছে।’’ |
|
|
|
|
|