|
|
|
|
সিপিএমের বর্ধিত সভা |
তাড়াহুড়ো নয়, সতর্ক হয়ে চলার পরামর্শ বিমানের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
কোনও তাড়াহুড়ো নয়। এক সময়ের সিপিএমের ‘দুর্গ’ পশ্চিম মেদিনীপুর জেলাতেও সতর্ক হয়ে সাংগঠনিক কাজকর্ম চালানোর পরামর্শ দিলেন দলের রাজ্য সম্পাদক বিমান বসু।
রবিবার সিপিএমের বর্ধিত সভা ডাকা হয়েছিল মেদিনীপুর কলেজের বিবেকানন্দ হলে। যে সভায় জেলাকমিটির সদস্যদের পাশাপাশি জোনাল কমিটির সম্পাদক, গণ-সংগঠনের জেলা সম্পাদকেরাও উপস্থিত ছিলেন। বর্তমান পরিস্থিতিতে সাংগঠনিক কাজকর্ম কেমন চলছে, কোথায় কোথায় সমস্যা হচ্ছে, কোথায় পার্টিকর্মীদের উপর সন্ত্রাস চলছেসভায় তার বিবরণ দেন দলীয় নেতারা। অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করে এখনই সংগঠনের কাজে নামার কথা বলেন। এ সব কথা শোনার পরে বক্তব্য রাখেন বিমানবাবু। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সেই বক্তব্যেই বিমানবাবু জানিয়ে দেন, ‘এখনও তাড়াহুড়ো করার সময় আসেনি। সতর্ক হয়েই চলতে হবে।’ সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বিমানবাবু বলেন, “উদ্ভূত রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্বন্ধে সকলের সম-মূল্যায়ণ প্রয়োজন। তাই রাজ্যে যেমন বর্ধিত অধিবেশন হয়েছিল, তেমনই জেলায় জেলায়ও বর্ধিত সভা করা হচ্ছে। সন্ত্রাস রয়েছে। আবার কোথাও সরাসরি সন্ত্রাস না থাকলেও আতঙ্ক রয়েছে। তারই মধ্যে এগিয়ে চলতে হবে।” |
|
সভায় বিমান বসু ও দীপক সরকার। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল। |
সামনেই পঞ্চায়েত নির্বাচন। এখনও সিপিএমের বহু নেতা-কর্মী ঘরছাড়া। অনেকের নামেই অভিযোগও রয়েছে। তাঁরাও গা ঢাকা দিয়ে আছেন। আবার সন্ত্রাসের কারণে বহু নেতা-কর্মী বাড়ি ছেড়ে শহরে আশ্রয় নিয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে এলাকার সংগঠন কিভাবে চলবে, কিভাবেই বা পঞ্চায়েত নির্বাচনে শাসক দল তৃণমূলের মোকাবিলা করবে সে সম্বন্ধে জোনাল কমিটিগুলি দিশেহারা।
দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এই পরিস্থিতিতে রাজ্য সম্পাদক ও দলের জেলা সম্পাদক দীপক সরকার উভয়েই বক্তব্য রাখতে গিয়ে জানান, এখনই প্রকাশ্যে কিছু করা ঠিক হবে না। তা হলে দলীয় নেতা-কর্মীদের উপর রোষ আছড়ে পড়তে পারে। সরকারে না থাকায় পুলিশি সাহায্যও মিলবে না। সেক্ষেত্রে এখনও যাঁরা বামপন্থীদের উপরেই ভরসা করে রয়েছেন তাঁরাও ভীত হয়ে পড়বেন। তাই গোপনেই যোগাযোগ চালিয়ে যেতে হবে। সময় এলে তখন আবার প্রকাশ্যে সভা, সমাবেশ করা হবে। তারই সঙ্গে দলীয় নেতা-কর্মীদের আগের মতোই আবারও সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়, আচরণ যেন ঠিক থাকে। কোনও নেতার আচরণে সাধারণ মানুষ যেন আঘাত না পান। তা হলে মানুষের আস্থা ফিরে পাওয়া যাবে না। বিমানবাবু বলেন, “কোনও সময় বলিনি যে সব ভাল করেছি। কিছু ভুল হয়েছে। তাই বলে সব ভুল করেছি তা তো নয়। আবার অনেক ভাল কাজও করেছি। মানুষ সব বুঝতে পারছেন।”
এখনই পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে রাজি নন বিমানবাবু। বর্তমান পরিস্থিতিতে আদৌ সিপিএম বা বামফ্রন্ট সর্বত্র প্রার্থী দিতে পারবে না কি না সেই প্রশ্নের উত্তরে বিমানবাবু বলেন, “আগে তো নির্বাচন আসুক। তখনই বোঝা যাবে।” তারই সঙ্গে বিমানবাবু রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে রাজ্য সরকারের তীব্র সমালোচনাও করেছেন। বিমানবাবুর কটাক্ষ, “আইন-শৃঙ্খলার চরম অবনতি হয়েছে। মহিলাদের উপর নির্যাতনে রাজ্য প্রথম হয়েছে। মেডেল পেয়েছে! পুলিশের গুলি চালানোর ঘটনা এ বারও অস্বীকার করে যেতেন মুখ্যমন্ত্রী। যদি ছবিটা না থাকত।” |
|
|
|
|
|