|
|
|
|
কাটোয়ায় অবরোধ |
গ্রাহকদের টাকা ফেরত দেবে ব্যাঙ্ক, উঠছে প্রশ্ন |
নিজস্ব সংবাদদাতা • বর্ধমান |
আমানতকারীদের গচ্ছিত টাকা সুদ-সহ ফেরত দেওয়ার কথা ঘোষণা করল টানা ১২ বছর বন্ধ থাকা বর্ধমানের প্রণবানন্দ সমবায় ব্যাঙ্ক। এই সিদ্ধান্ত নিয়ে অবশ্য নানা প্রশ্ন উঠেছে। যে পদ্ধতিতে টাকা ফেরত দেওয়া হবে বলে ওই ব্যাঙ্কের কর্তারা জানিয়েছেন, প্রশ্ন তা নিয়েই।
শনিবার বর্ধমানের সংস্কৃতি লোকমঞ্চে আয়োজিত সমবায় সপ্তাহ উদ্যাপন অনুষ্ঠানে ব্যাঙ্কের প্রাক্তন সিইও ভাস্কর মুখোপাধ্যায় বলেন, “ওই ব্যাঙ্কের জায়গায় নতুন করে প্রণবানন্দ সমবায় ঋণদান সমিতি খোলা হয়েছে। আগামী ৩১ ডিসেম্বর থেকে তারই প্রতিটি শাখা থেকে পুরনো ব্যাঙ্কের আমানতকারীদের সুদ-সহ টাকা ফেরত দেওয়া হবে।” শনিবারই ২৫ জন পুরনো আমানতকারীকে সুদ-সহ তাঁদের গচ্ছিত টাকার চেক দেওয়া হয়। তবে ভাস্করবাবু বলেন, “আইনি জটিলতার কারণে ওই চেক ৩১ ডিসেম্বরের আগে ভাঙানো যাবে না।” |
|
চেক-দান অনুষ্ঠান। —নিজস্ব চিত্র। |
এই ঘোষণার পরেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। বর্ধমান কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্কের প্রাক্তন সভাপতি তথা বর্তমান ডিরেক্টর চিত্তরঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “যত দূর জানি, ব্যাঙ্কে রাখা আমানত কোনও ঋণদান সমিতি ফেরত দিতে পারে না। এ ব্যাপারে ‘পোস্ট-ডেটেড’ চেকও দেওয়া যায় না। কী ভাবে ওই ঋণদান সমিতি ব্যাঙ্কের আমানত ফেরত দিচ্ছে, তা জেলা সমবায় দফতরের কাছে জানতে চাইব।”
বছর বারো আগে ওই ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতি, তছরুপ ও বেআইনি ভাবে কর্মী নিয়োগের বেশ কয়েকটি মামলা দায়ের হয় জেলার নানা থানায়। তার জেরে ব্যাঙ্কটি বন্ধ হয়ে যায়। গ্রেফতার হন সিইও ভাস্করবাবু-সহ ব্যাঙ্কের কয়েক জন কর্তা। বর্ধমানের বিশেষ আর্থিক অপরাধ সংক্রান্ত আদালতে এখনও কয়েকটি মামলার বিচার চলছে। ভাস্করবাবুর দাবি, ২০০৬-এর ৭ জুলাই রাজ্য সমবায় ট্রাইব্যুনাল ওই ব্যাঙ্কের লিক্যুইডেশনের আদেশ বাতিল করে দেয়। তার পরে গত বছর ২৫ ডিসেম্বর নতুন ভাবে চালু হয় ‘প্রণবানন্দ কো-অপারেটিভ ক্রেডিট সোসাইটি’। এই সমিতিই আগের ব্যাঙ্কে গচ্ছিত রাখা টাকা মেটাবে দাবি করে ভাস্করবাবু বলেন, “ব্যাঙ্কের পুরনো নথিপত্রের ভিত্তিতে ৩১ ডিসেম্বর থেকে আমানতকারীদের জমা রাখা টাকা ফেরত দেওয়া হবে।”
ঋণদান সমিতির তরফে বাড়ি বাড়ি গিয়ে আমানত সংগ্রহের একটি প্রকল্পের কথাও ঘোষণা করেন ভাস্করবাবু। চিত্তরঞ্জনবাবু অবশ্য বলেন, “বাজার থেকে টাকা তুলতে গেলে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের অনুমতি লাগে। ওই সমিতি কী ভাবে আমানত সংগ্রহ করছে, তা-ও জেলা সমবায় দফতরের কাছে জানতে চাইব।”
সুদ-সহ গচ্ছিত টাকার চেক পেয়ে সিঁদুলি ২ খনি আবাসনের বাসিন্দা কাজল দে বলেন, “ওই ব্যাঙ্কে ৪৪৭০ টাকা জমা রেখেছিলাম। ৭৫৮১ টাকার একটি চেক দেওয়া হয়েছে।” বরাকরের মিরা পাল, গুসকরার শিবনারায়ণ দাসেরা জানান, টাকা ফেরত পাওয়ার আশা ছেড়েই দিয়েছিলেন। তাই সুদ-সহ গচ্ছিত টাকার চেক পেয়ে তাঁরা খুশি। তবে সেই চেক ভাঙানো যাবে কি না, সে নিয়ে তাঁদের প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। |
|
|
|
|
|