স্বামীর বিপদ। এই ভুল সংবাদ দিয়ে লুঠের ঘটনা ঘটেছে দুই রেল শহর আদ্রা ও আনাড়ায়। দু’টি ক্ষেত্রেই দুষ্কৃতীরা গয়না, টাকা-সহ অন্যান্য সামগ্রী হাতিয়ে চম্পট দেয়। পুলিশ তদন্ত শুরু করলেও কেউ ধরা পড়েনি।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার দুপুরে আনাড়া রেলকলোনির বাসিন্দা পেশায় ট্রেনচালক শ্রীনিবাসনের বাড়িতে গিয়েছিলেন এক ব্যক্তি। তিনি ট্রেন চালকের পোশাক পরেছিলেন। ওই সময় কর্মস্থলে ছিলেন শ্রীনিবাসনবাবু। বাড়িতে ছিলেন তাঁর স্ত্রী ও দুই সন্তান। সেখানে গিয়ে ওই ব্যক্তি নিজেকে ট্রেন চালক ও শ্রীনিবাসনের সহকর্মী পরিচয় দিয়ে জানান, দুর্ঘটনায় পড়েছেন শ্রীনিবাসনবাবু। তাঁর চিকিৎসার জন্য টাকার প্রয়োজন। স্বামীর দুর্ঘটনার শুনে দেরি না করে ওই দুষ্কৃতীর হাতে গয়না, টাকা, এটিএম কার্ড তুলে দিয়েছিলেন ওই ট্রেন চালকের স্ত্রী। পরে বিকালের দিকে শ্রীনিবাসনবাবু বড়ি ফিরে আসার পরে তারা বুঝতে পারেন তাঁরা প্রতারিত হয়েছেন। পরে আনাড়া ফাঁড়িতে অভিযোগ দায়ের করেন ওই ট্রেনচালক।
অন্য দিকে, একই কায়দায় বৃহস্পতিবার দুপুরে এক দুষ্কৃতী সোনার গয়না হাতিয়েছে আদ্রার বাসিন্দা রেলকর্মী মহেশ্বর মুর্মুর বাড়ি থেকে। ঘটনার সময়ে মহেশ্বরবাবুও অফিসে ছিলেন। বাড়িতে ছিলেন তাঁর স্ত্রী। মহেশ্বরবাবু বলেন, “দুপুর ১২টা নাগাদ মোটরবাইকে করে এক ব্যক্তি আমার বাড়িতে গিয়ে নিজেকে আরপিএফের কর্মী ও বন্ধু পরিচয় দিয়ে স্ত্রীকে জানান আমার অফিসে গণ্ডগোল ঘটেছে এবং গ্রেফতার করেছে আরপিএফ। বাড়িতে তল্লাশিতে আসছে জানিয়ে ওই দুষ্কৃতী স্ত্রীকে দামি জিনিস লুকিয়ে ফেলার জন্য বলে।” মহেশ্বরবাবুর কথায়, “এই খবরে ভয় পেয়ে বিবেচনা না করে ঘরে থাকা গয়না জড়ো করে কাপড়ে বেঁধে ওই দুষ্কৃতীর সামনেই লুকিয়ে ফেলেছিলেন এবং এক পড়শিকে সঙ্গে নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে চলে এসেছিলেন আদ্রা আরপিফের থানাতে।” ঘটনা হল মহেশ্বরবাবুর স্ত্রী বাড়ি থেকে বেরনোর সময়ে বাড়িতে রেখে গিয়েছিলেন তাঁদের পরিচারিকা ও পড়শি এক যুবককে। কিন্তু ওই দুষ্কৃতী পুলিশ আসার ভয় দেখিয়ে পরিচারিকাকে বাড়ি থেকে বের করে দেয় এবং পড়শি যুবককে টাকা দিয়ে দোকান থেকে পুলিশের জন্য খাবার কিনে আনতে বলে। বাড়ি ফাঁকা হতেই গয়না নিয়ে চম্পট দেয় দুষ্কৃতী।
রঘুনাথপুরের এসডিপিও কুন্তল বন্দ্যোপাধ্যায় ইতিমধ্যেই ওই দুষ্কৃতীর সন্ধানে নিজে তল্লাশি শুরু করেছে। এসডিপিও বলেন, “অপরাধের পদ্ধতি দেখে ও প্রতারিত ব্যক্তিদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে বোঝা গিয়েছে একই ব্যক্তি ঘটনার সঙ্গে জড়িত। আমরা তদন্ত শুরু করেছি। কিছু তথ্যও পাওয়া গিয়েছে।” |