|
|
|
|
এবিজি-র কাজহারারা এ বার কেন্দ্রের দ্বারস্থ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
তাঁদের পুনর্বহালের ব্যবস্থা করতে এবার কংগ্রেস নেতাদের দ্বারস্থ হলেন এবিজির কাজহারা শ্রমিকরা।
হলদিয়া-কাণ্ডে কংগ্রেস নেতারা তাঁদের পাশে গিয়ে দাঁড়িয়েছেন। কেন্দ্রে কংগ্রেসেরই সরকার। এই সূত্রেই কাজহারা শ্রমিকদের প্রত্যাশা কংগ্রেস নেতারাই উদ্যোগী হয়ে তাঁদের কাজে ফেরানোর ব্যবস্থা করবেন। রাজ্যে শিল্পায়নের দাবিতে বৃহস্পতিবার আইএনটিইউসি কলকাতায় মিছিল করে। রামলীলা ময়দান থেকে রানি রাসমণি অ্যাভেনিউ পর্যন্ত ওই মিছিলে এবিজির কর্মচ্যূত শ্রমিকদের একাংশ যোগ দিয়েছিলেন। মিছিল শেষ হওয়ার পরে তাঁরা কংগ্রেস নেতা ও আইনজীবী অরুণাভ ঘোষ, বিধায়ক দেবপ্রসাদ রায়-সহ কংগ্রেস নেতৃত্বের সঙ্গেও তাঁদের কাজে ফেরার বিষয়ে আলোচনা করেন। শেখ সিরাজের নেতৃত্বে ‘হলদিয়া বাঁচাও কমিটি’র সদস্যরা অরুণাভবাবুদের বলেন, “কেওপিটি-কে বলুন এবিজি-কে যেন হলদিয়া থেকে চলে যেতে না দেওয়া হয়।” কংগ্রেস নেতারা তাঁদের বোঝান, “এবিজি তো থাকতে চেয়েছিল। তারা থাকবে বলে নিরপত্তা রক্ষার ব্যবস্থা করার জন্য টাকাও জমা রেখেছিল। কিন্তু রাজ্য সরকার সেই নিরাপত্তা দিতে পারেনি।” শেখ সিরাজ তখন কংগ্রেস নেতাদের বলেন, “কেন্দ্রে তো আপনাদের সরকার। আপনারা কেন্দ্রকে বলুন হলদিয়ার ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করতে।” |
|
কংগ্রেসের মিছিল। বৃহস্পতিবার ধর্মতলায় দেবাশিস রায়ের তোলা ছবি। |
তাঁদের কর্মসংস্থান তো বটেই হলদিয়া বন্দরের উন্নয়নের ব্যাপারেও কেন্দ্রকে এ গিয়ে আসার জন্য কংগ্রেস নেতাদের উদ্যোগী হওয়ার জন্য তাঁরা অনুরোধ করেন। অরুণাভবাবুর কাছে শেখ সিরাজ অনুরোধ করে বলেন, “আপনার তো পোর্টের সাহেবদের সঙ্গে জানাশুনো আছে, ওঁদের বলুন আমাদের কাজের ব্যবস্থা করতে!”
কাজ হারানো শ্রমিকরা বন্দরে আবার যাতে কাজ ফিরে পান সে জন্য এ দিন মিছিলের পরে তাঁরা বিধান ভবনে রাজ্য আইএনটিইউসি ও প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্যের সঙ্গে দেখা করেও দাবি জানান। প্রদীপবাবু পরে বলেন, “হলদিয়ার সমস্যা মেটাতে আমি কেন্দ্রের শ্রম কমিশনারের সঙ্গেও আলোচনা করব। আগামী ১২ নভেম্বর দুপুরে আলোচনার সময় স্থির হয়েছে।” এ দিন মিছিল শেষে সভায় প্রদীপবাবু বলেন, “এবিজির বদলে হলদিয়ায় অন্য সংস্থাকে ঢোকানোর ষড়যন্ত্র হয়েছে। আমরা দাবি করছি কর্মচ্যূত সমস্ত শ্রমিককে পুর্নবহাল করতে হবে।” এই সভা থেকে প্রদীপবাবু ঘোষণা করেন, আগামী ২০ নভেম্বর কংগ্রেস ‘হলদিয়া চলো’ কর্মসূচি নিয়েছে। প্রদীপবাবু বলেন, “সে দিন হলদিয়া থেকে সারা দেশের শিল্পদ্যোগীদের উদ্দেশে বার্তা দেওয়া হবে- রাজ্যের তৃণমূল সরকার শিল্প-বিরোধী হতে পারে, কিন্তু কংগ্রেস শিল্পের আবাহন চায় বাংলায়।”
এবিজি-র কর্মচ্যূত শ্রমিকদের পুনর্বহাল বিষয়ে রাজ্য আইএনটিইউসি-র সাধারণ সম্পাদক কামারুজ্জমান জানান, বুধবারই তাঁরা সুতাহাটায় হলদিয়ার শেখ সিরাজ, নূর আলমদের অবস্থান মঞ্চে গিয়ে দেখা করেছিলেন। এ দিন কামারুজ্জমান বলেন, “হলদিয়ায় এবিজি-কর্মীদের যে ভাবে ছাটাই করা হয়েছে তা বেআইনি ও অনৈতিক। আমরা বন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানিয়েছি, ওই কর্মীদের পুর্নবহাল করতে হবে এবং সেটা কেপিটিরই দায়িত্ব।” এ দিন তাঁদের মিছিলে যোগ দিতে আসা হলদিয়ার শ্রমিকদের অনেকেই অভিযোগ করেন, “হলদিয়ায় পুলিশও আমাদের উপর অত্যাচার করছে।” কামারুজ্জমান বলেন, “যে পুলিশ অফিসারদের নেতৃত্বে শ্রমিকদের উপর সন্ত্রাস চলছে তাঁদের বিরুদ্ধে আমরা সিবিআই তদন্তের দাবিও জানিয়েছি।” হলদিয়ায় পুলিশের সন্ত্রাসের অভিযোগ নিয়ে রাসমণি অ্যাভেনিউর সভায় প্রদীপবাবু বলেন, “কে সেই মানুষ যিনি পুলিশকে নিয়ন্ত্রণ করছেন! তিনি যদি ফ্যাসিস্টও হন, তাঁকে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই কংগ্রেস ফ্যাসিস্টদের বিরুদ্ধে লড়তে ভয় পায় না।” |
|
|
|
|
|