আশঙ্কায় নয়াগ্রামবাসী
ধান কাটার মরসুমে হাজির দলমার দল
ধান-কাটার মরসুমে নয়াগ্রামে এসে হাজির হল দলমার বুনো হাতির পাল।
ফি-বছর হাতির পাল নয়াগ্রামে কয়েকমাস দাপিয়ে বেড়ায়। ত্রস্ত থাকেন এলাকাবাসী। গতবার অবশ্য সব হিসেব নিকেশ উল্টে দিয়ে হাতিদের গতিপথে ‘পরিবর্তন’ হয়েছিল। গত বছর মাত্র দু’সপ্তাহ তপোবনের জঙ্গলে কাটিয়ে হাতিরা নয়াগ্রাম ছেড়ে ওড়িশায় চলে যায়। ফলে চিরাচরিত ফসল ও সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতি এড়ানো গিয়েছিল। এ বার হাতিরা কী করবে তা তারাই জানে। বন দফতরের বক্তব্য, হাতির মর্জি বোঝা ভার! খড়্গপুরের ডিএফও অঞ্জন গুহ বলেন, “প্রায় ১৪০টি হাতির পালে বেশ কয়েকটি শাবক রয়েছে। হাতিকে জোর করে খেদানোর চেষ্টা হলে হিতে বিপরীত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এলাকাবাসী ও পুলিশ-প্রশাসনের সাহায্য নিয়ে ক্ষয়ক্ষতি এড়িয়ে হাতিকে জঙ্গলমুখি করে রাখার চেষ্টা হচ্ছে।”
গত সোমবার চাঁদড়ার দিক থেকে কংসাবতী পেরিয়ে খড়্গপুর বন বিভাগের কলাইকুণ্ডা রেঞ্জের জটিয়া জঙ্গলে চলে আসে হাতির পাল। একদিন সেখানে বিশ্রাম নিয়ে মঙ্গলবার হাতির দলটি শঙ্করবনি হয়ে নয়াগ্রামে যাওয়ার ‘রুট’ ধরে। পথে ঝাড়গ্রামের সাঁকরাইল ব্লকের ছত্রি, রোহিনী ও আঁধারি অঞ্চলের ১০-১২টি গ্রামে পাকা ধান, আখ ও কপির খেতে ঢুকে ব্যাপক ক্ষতি করে তারা। বুধবার গভীর রাতে হাতির দলটি রোহিনী হয়ে সুবর্ণরেখা পেরিয়ে নয়াগ্রামের চাঁদাবিলা বনাঞ্চলের তপোবনের জঙ্গলে ঢুকে পড়ে। নয়াগ্রামে এখন মাঠভরা পাকা ধান। এলাকার অর্থকরী ফসল আখ। ফলে আশঙ্কায় এলাকাবাসী।
গ্রামবাসীরা জানাচ্ছেন, বুধবার মাঝ রাতে নয়াগ্রামে ঢুকেই অত্যুৎসাহী হাতিরা বিভিন্ন দলে ভাগ হয়ে আশেপাশের লোকালয়ে হানা দেয়। নয়াগ্রামের বড়খাকড়ি অঞ্চলের বিরিবেড়িয়া গ্রামে ঢুকে স্থানীয় ৭০ নম্বর অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের দরজার শেকল উপড়ে চাল ও ডালের বস্তা বার করে খেতে শুরু করে হাতিরা। স্থানীয় গ্রামবাসী বঙ্কিম রানা, দিলীপ বেরা, বীরবল কিস্কুরা জানালেন, পালের কয়েকটা হাতি গ্রামে ঢুকতেই আমরা হুলা (মশাল) জ্বালিয়ে পটকা ফাটিয়ে হাতির দলটিকে জঙ্গলের দিকে খেদিয়ে দিই। নইলে ওরা আরও ক্ষয়ক্ষতি চালাত।’’ বিরিবেড়িয়া অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের কর্মী বেবি বেরা ঘোষ বলেন, “প্রসূতি ও শিশুদের খাওয়ার জন্য কেন্দ্রে চাল, ডাল, সয়াবিন মজুত করা ছিল। হাতিরা এক বস্তা চাল খেয়ে ও ছড়িয়ে নষ্ট করেছে। সময়মতো হাতিগুলিকে গ্রামবাসী তাড়া করায় বাকি জিনিসপত্রগুলি হাতিরা নষ্ট করতে পারেনি।” পশ্চিম দেউলবাড় গ্রামেও বুধবার ভোররাতে হানা দিয়েছিল হাতির একটি দল। স্থানীয় এক মুদিদোকানে ভাঙচুর চালিয়ে আলু, চাল নষ্ট করে তারা। বেবিদেবীর স্বামী তথা স্থানীয় তৃণমূল নেতা সুধাংশু ঘোষ জানান, গত বছর নয়াগ্রামের পাথরডহরার জঙ্গলে একটি শাবক প্রসব করে এক হস্তিনী। দু’সপ্তাহ সেখানে কাটিয়ে হাতির দলটি গতবার ওড়িশার দিকে চলে যায়। এ বারও হাতির পাল কিছু দিন কাটিয়েই ফিরে যাবে বলে আশা করছেন এলাকাবাসী।
নতুন অতিথির আগমনে পালের হাতির সংখ্যা ১৪০ ছাড়িয়ে গিয়েছে ইতিমধ্যে। নয়াগ্রামবাসীর ঘুমহীন রাত কাটানোর সময় বুঝি এল!


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.