ক্রমশ কমছে স্যালামান্ডার
পোশাকি নাম টাইলোটোট্রিটন ভেরুকোসাস। নেপালি ভাষায় বলা হয় সুনাগোরা। সরীসৃপ প্রজাতির এই প্রাণীটি স্যালামান্ডার নামেই পরিচিত। ১৭.৫২০ সেমি দীর্ঘ, চ্যাপ্টা মাথা, ধূসর বর্ণের টিকটিকির মতো দেখতে বিরল প্রজাতির প্রাণীটি ক্রমশ অবলুপ্তির পথে। সংরক্ষণের উদ্যোগ নিয়েছে ফেডারেশন অফ সোসাইটিস ফর এনভায়রনমেন্টাল প্রোটেকশন, দার্জিলিং শাখা (ফোসেপ)। দার্জিলিংয়ের পার্বত্য এলাকায় ৪০০০-৭০০০ ফুট উচ্চতায় মিরিক, জোড়পোখরি, রিংটং, পোখরিবং, সীতং এলাকায় জলাশয়ের মধ্যে (মে-অগস্ট মাস প্রজননের সময়) থাকে। বছরের অন্য সময় বড় বড় পাথরের খাঁজে, ঘাসের মধ্যে দেখা মেলে এই উভচর প্রাণীটির। এক সময় জোড়পোখরি এলাকায় দু’টি প্রাকৃতিক লেক ছিল। এখানে প্রাণীটির বাসস্থানের কথা অনেকেই জানতেন। শিক্ষামূলক ভ্রমণে বিভিন্ন স্কুল-কলেজের পড়ুয়ারাও এখানে স্যালামান্ডার পর্যবেক্ষণ করতে আসত। তাতেই সমস্যা বাড়ে। এমনকী স্থানীয় কচিকাচারাও ঢিল ছুড়ত স্যালামান্ডার মারতে। তৎকালীন গোর্খা হিল কাউন্সিল লেকের সৌন্দর্যায়ন করতে পাড় বাঁধাই, লেকের জলে মূর্তি স্থাপন এবং সংলগ্ন এলাকায় ট্যুরিস্ট লজ গড়ে তোলেন। আনাগোনা বাড়ে বাইরের মানুষের। ব্যাঙের লার্ভা, জলজ উদ্ভিদ, পোকামাকড় যা ছিল স্যালামান্ডারের খাদ্য-তালিকায়, তাতেও টান পড়ে।
উল্লেখযোগ্য ভাবে হ্রাস পেতে থাকে স্যালামান্ডারের সংখ্যা। যা দেখে চিন্তায় পড়েন ফোসেপ-এর সদস্যরা। স্যালামান্ডার বাঁচাতে এগিয়ে আসেন তাঁরা। বিগত সাত বছর ধরে এ বিষয়ে বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে আসছে পরিবেশ সংরক্ষণকারী সংস্থাটি। প্রতি বছর এপ্রিল-জুন মাসে প্রাণীটি বাঁচাতে মানেভঞ্জন, পোখরিবং, রিংটং, মিরিকের বিভিন্ন অঞ্চলে এলাকাবাসীদের মধ্যে প্রচারপত্র বিলি করা হয়। স্থানীয় মানুষ এবং ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে সভাসমিতি ও সেমিনারের আয়োজন করা হয়। ফোসেপের দার্জিলিং শাখার সম্পাদক ভরত প্রকাশ রাই জানান, আবহাওয়া এবং জলবায়ুর পরিবর্তনের পাশাপাশি প্যাঁচা, সাপ ও ইঁদুরের খাদ্য-তালিকায় স্যালামান্ডার থাকার কারণে এদের সংখ্যা দ্রুত কমে আসছিল। যোগ হয়েছিল পরিবেশের ভারসাম্য বজায় না রেখে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ ও জনসচেতনতার অভাব। কিন্তু ফোসেপ এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেবার ফলে খুব ধীরে ধীরে হলেও স্যালামান্ডারের সংখ্যা বাড়ছে। বিশেষ করে রিংটং, পোখরিবং ও মানেভঞ্জন এলাকায়।
লেখা ও ছবি: অনিতা দত্ত।

গঙ্গা-ভাঙনে ভাঙছে স্বপ্ন
উত্তরবঙ্গের দক্ষিণতম জেলা মালদহে নদী ভাঙন কবলিত জনপদ মানিকচকের গঙ্গা তীরবর্তী বেশ কিছু গ্রামে গেলে চোখে পড়বে দারিদ্রের ক্ষতচিহ্ন। গঙ্গার গ্রাসে ভিটে হারিয়ে অনেকেই সহায়সম্বলহীন। দু’বেলা অন্নসংস্থানে অনেকেই ভিন দেশে। যারা বাড়িতে আছে, তারাও সকাল হলেই বেরিয়ে পড়ে আমবাগানে ঠিকাচাষি বা কোতোয়ালিতে রাজমিস্ত্রির জোগানদারের কাজ করতে। এ সব পরিবারে শিশুদের স্কুলে যাওয়া যে ‘বিলাসিতা’ তা বলাই বাহুল্য। যারা ৫-৭ বছর বয়সী, তারা সারা দিন অভিভাবকদের অনুপস্থিতির জন্য বড়দের রক্ষাকবচের বাইরেই থেকে যায়। এদের কয়েক জনের দেখা পেলাম এই ভরা বর্ষায় উত্তাল গঙ্গার ভাঙনে তলিয়ে যেতে বসেছে এমন একটি খেজুর গাছে চড়তে। কেন এ বিপদসঙ্কুল প্রয়াস, প্রশ্ন করতে জানাল, খেলা। জিজ্ঞেস করলাম, স্কুলে যাস না? নিপাট নিরীহ জবাব, না। কথায় জানলাম, গঙ্গার ভাঙনে সব হারিয়ে দু’বেলা ভাতের অনিশ্চয়তাই ওদের সম্বল, স্কুলে যাওয়া ওদের কাছে স্বপ্ন! ফ্ল্যাশব্যাকে ভেসে উঠল বিজ্ঞাপনের ট্যাগলাইন‘শিক্ষা শিশুর অধিকার’, ‘সবার শিক্ষা, সবার উন্নতি’...। সম্বিৎ ফিরল জলে মাটি পড়ার শব্দে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.