|
|
|
|
সাংসদের মন্তব্যে ঘোর দুশ্চিন্তায় কাজহারারা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • হলদিয়া ও নয়াদিল্লি |
এবিজি বিদায়ের সময় তিনি আশ্বাস দিয়েছিলেন, সংস্থার সব শ্রমিকের পেট ভরানোর ব্যবস্থা করবেন। কিন্তু মঙ্গলবার যা বললেন তমলুকের তৃণমূল সাংসদ শুভেন্দু অধিকারী, তাতে নিজেদের ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তাতেই পড়ে গেলেন সংস্থার কাজ হারানো প্রায় সাড়ে তিনশো শ্রমিক। শুভেন্দুর কথা থেকে স্পষ্ট, এবিজি যে ২৭৫ জন শ্রমিককে ছাঁটাই করেছিল, তাঁদের কথাই তিনি ভাবছেন। সংস্থা হলদিয়া ছেড়ে চলে যাওয়ার কারণে কাজ হারানো শ্রমিকদের কথা নয়।
হলদিয়ার সুতাহাটায় মঞ্চ গড়ে লাগাতার অবস্থান-বিক্ষোভ করছেন কাজহারা শ্রমিকরা। তাঁদের পাশে থাকার আশ্বাস দিলেও এই মঞ্চের ধারেকাছেও যাননি শুভেন্দু বা তৃণমূলের কেউ। এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে মঙ্গলবার শুভেন্দু বলেন, “বন্দর তো চিরঞ্জীবপুরে, সুতাহাটায় নয়।” আর তার পর থেকেই ঘোর অনিশ্চয়তায় পড়েছেন ওই সাড়ে তিনশো শ্রমিক। শেখ সিরাজ, নূর আলমেরা বলেন, “চিরঞ্জীবপুরে গেলেই তো শুভেন্দু অধিকারীর লোকেরা মারধর করছে। সেখানে অবস্থান করব কী ভাবে? আর সুতাহাটা কি হলদিয়ার মধ্যে নয়? ওঁর মন্তব্যেই বোঝা যাচ্ছে, উনি আমাদের অন্ধকারে ঠেলে দিচ্ছেন।”
শ্রমিকদের ঘিরে এই টানাপোড়েনের মধ্যেই হলদিয়া নিয়ে রাজ্য সরকারের নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ জোরদার হয়েছে। কেন্দ্রের তরফে মঙ্গলবার জানানো হয়েছে, শুধু বন্দর চেয়ারম্যান নন, হলদিয়ার পরিস্থিতি যে ক্রমশ হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে, সে ব্যাপারে রাজ্যকে চিঠি দিয়ে সতর্ক করেছিলেন খোদ জাহাজ মন্ত্রকের সচিব। গত ২৬ সেপ্টেম্বর রাজ্যের মুখ্যসচিবকে পাঠানো সেই চিঠিতে তিনি লেখেন, হলদিয়ায় যাতে সুষ্ঠু ভাবে কাজ হতে পারে রাজ্য তা নিশ্চিত করুক।
মহাকরণ অবশ্য এমন কোনও চিঠির কথা মনেই করতে পারছে না। রাজ্য সরকারের এক পদস্থ আমলা বলেন, “এমন কোনও চিঠি এলে তো জানতে পারতাম। আর আমাদের যা বক্তব্য তা তো আদালতকেই জানানো হয়েছে।”
বস্তুত, হলদিয়া নিয়ে রাজ্য সরকারের যেমন উদাসীন মনোভাব, কাজ হারানো শ্রমিকদের নিয়ে শুভেন্দুর মনোভাব প্রায় তেমনই। যদিও গত শুক্রবার হলদিয়ার রানিচকে তিনি জোর গলায় বলেছিলেন, “কাজ হারানো ৬৩০ জন শ্রমিকদের পেট ভরে দিতে পারব।” এ দিন কিন্তু শ্রমিকদের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “ঠিকাদার এজেন্সি নিয়ে কিছু বলব না। এটা বন্দর ও ওই বাণিজ্যিক সংস্থার অভ্যন্তরীণ ব্যাপার।”
সুতাহাটার নন্দরামপুরে কাজহারা শ্রমিকদের বিক্ষোভ নিয়ে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক বিমান বসুকে কটাক্ষ করে শুভেন্দু বলেন, “চিরঞ্জীবপুর থেকে সরে নন্দরামপুরে প্রাচীর ঘেরা জায়গায় শ্রমিক বসিয়ে নাটক করছেন কেন?” প্রাক্তন সিপিএম সাংসদ লক্ষ্মণ শেঠ বলেন, “অধিকাংশ শ্রমিকই নন্দরামপুরে থাকেন। তাই তাঁরা ওখানে অবস্থান করছেন। ওঁর মন্তব্যে পরিষ্কার উনি এলাকাভিত্তিক লোক নিয়োগের কথা বলছেন। এটা শ্রমিকদের অনিশ্চয়তায় ফেলে দেওয়া।” |
|
|
|
|
|