এলাকা সাফাই নিশ্চিত করতে বেলুড়ের ‘বিধান’
জিনিসপত্রের দামে রাশ টানতে ক্রেতারা শুরু করেছিলেন ‘দমদম দাওয়াই’। সে কয়েক দশক আগের কথা। আজ তা প্রায় ইতিহাস এবং ‘দমদম দাওয়াই’ প্রায় প্রবাদের চেহারা নিয়েছে। এ বার অন্য চেহারায় তেমনই এক দাওয়াই ফিরে এল বেলুড়ে, যাকে বলা যেতেই পারে ‘বেলুড় বিধান’।
দমদমের মতো হাতে মারা পন্থা নয়। নিতান্তই গাঁধীগিরির রাস্তায় স্রেফ তুলে এনে বসিয়ে রাখা। এলাকায় জঞ্জাল সাফাই না হওয়ার প্রতিকার চাইতে এই পথই দেখিয়েছে বেলুড়।
ঘটনাটি মঙ্গলবারের। এলাকা সাফাইয়ের দাবিতে খোদ জঞ্জাল সাফাই দফতরের চেয়ারম্যান পারিষদ তথা এলাকার কাউন্সিলরকে বাড়ি থেকে তুলে এনে ক্লাবে বসিয়ে রাখেন স্থানীয়েরা। বাদ যাননি চেয়ারম্যানও। তাঁকেও ডেকে এনে বসিয়ে রাখা হয়। শেষে পরিস্থিতি সামাল দেয় পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, বালি পুরসভার ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের জঙ্গি সিংহ গলির বাসিন্দা দীপঙ্কর দাস (১৯) কয়েক দিন আগে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। তার পর থেকেই স্থানীয় বাসিন্দারা এলাকায় পুরসভার কাজকর্ম নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ শুরু করেছিলেন। এ দিন সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ তিন-চার জন পুরকর্মী ওই এলাকায় ব্লিচিং ছড়াতে গেলে তাঁদের ঘিরে ধরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন কয়েকশো স্থানীয় বাসিন্দা। জানতে চান, কেন এলাকা নিয়মিত সাফ করা হয় না। এর মধ্যেই চলে মারধর।
এর পরে সকাল ৯টা নাগাদ স্থানীয় আরএসপি কাউন্সিলর জগদীশ সিংহের বাড়িতে হানা দেয় এলাকার কয়েক জন যুবক। তাঁকে বাড়ি থেকে রিকশায় চাপিয়ে জঙ্গি সিংহ এলাকায় একটি ক্লাবে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই বেলা ১১টা পর্যন্ত বসিয়ে রাখা হয় তাঁকে। স্থানীয় বাসিন্দা অভিষেক গুপ্ত বলেন, “দীর্ঘ দিন ধরে এলাকা সাফাই হয় না। তার মধ্যে এক জন ডেঙ্গিতে মারা গেলেন। তার পরেই এলাকাবাসী ক্ষিপ্ত। তাই আজ কাউন্সিলরকে এনে আটকে রাখা হয়।”
যদিও জগদীশবাবু বাড়ি থেকে তুলে এনে ক্লাবে বসিয়ে রাখার কথা কার্যত মানতে চাননি। তিনি বলেন, “বাড়িতে এসে ওরা আমাকে এলাকায় যেতে বলেছিল। তাই গিয়েছিলাম। আর ওই এলাকায় মিটিং ছিল বলেই ক্লাবে বসেছিলাম।” তবে স্থানীয় বাসিন্দাদের কথাতেই সায় দিয়ে বালি পুরসভার বিরোধী তৃণমূলের দলনেতা রেয়াজ আহমেদ বলছেন, “জঞ্জাল সাফাই দফতরের দায়িত্বে থেকেও নিজের ওয়ার্ডের জঞ্জাল সাফাইয়ে নজর দিতেন না জগদীশবাবু। তাই বাসিন্দারা আজ ওঁকে তুলে এনে বিক্ষোভ দেখায়। খবর পেয়ে আমিও ওখানে গিয়েছিলাম।”
কাউন্সিলরের পাশাপাশি এ দিন জঙ্গি সিংহ গলিতে ডেকে পাঠানো হয় বালির পুর-চেয়ারম্যান, সিপিএমের অরুণাভ লাহিড়ীকেও। তিনিও খবর পেয়ে সকালেই এলাকায় পৌঁছে যান। তাঁকে এবং জগদীশবাবুকে একই ক্লাবে বসিয়ে কয়েকশো বাসিন্দা বিক্ষোভ শুরু করেন। এলাকা নিয়মিত সাফাই হয় না কেন, প্রশ্ন তোলেন বাসিন্দারা। চেয়ারম্যান অরুণাভবাবু প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে বাসিন্দারা দাবি করেন, বিষয়টি লিখিত দিতে হবে। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। অরুণাভবাবু বলেন, “খবর পেয়ে এলাকায় গিয়েছিলাম। ওখানকার জঞ্জাল সাফাইয়ের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.