সোনার দাম কমায় খুশি স্বর্ণশিল্পীরা
হাতে নাকছাবিটা নিয়ে অনেকক্ষণ ধরে রেখেছিলেন ফুলবিবি। সংসার থেকে কোনও মতে বাঁচিয়ে ৭০০ টাকা দিয়ে কিনতে পেরেছেন সদ্য। সোনার দোকানের মালিক সুশান্ত দাস বলেন, “দশ দিন আগে হলেও ৭০০ টাকায় সোনার নাকছাবি দিতে পারতাম না।”
লক্ষ্মীপুজোর পরে সোনার দাম হঠাৎই অনেকটা কমেছে। সোনার বাজারও জমে উঠেছে। সামনে ধনতেরাস। তাই উৎসবের মুখে সোনা কারবারি থেকে শিল্পী সকলের মুখেই হাসি। মুর্শিদাবাদের বেলডাঙার স্বর্ণ ব্যবসায়ী সাধন মণ্ডলের কথায়, “বাংলায় ১৪১০ সালে সোনার দাম ছিল ৭ হাজার টাকা। ১৪১৬ সালে হল ১৫ হাজার টাকা, ১৪১৮ বঙ্গাব্দের বৈশাখে সোনার দাম উঠল ২৩ হাজার ৬০০ টাকা। চৈত্রে সেই দাম পৌঁছল ৩২ হাজার টাকায়। সেই সময়ে এক মাসে তিন হাজার টাকার বেশি বৃদ্ধি ঘটে সোনার দামে। সোনার শিল্পীদের প্রান্তিক অবস্থায় এনে ফেলেছিল তা। তার পর এখন সোনার দাম কমায় পরিস্থিতির কিছুটা অন্তত উন্নতি হয়েছে।”
তবে সোনার দাম যে হারে বেড়েছিল, সেই হারে তো কমেনি। তাই সাধারণ ক্রেতারা ঝুঁকছেন একেবারেই ছোট খাট সোনার গয়নার দিকে।
কানের সঙ্গে লেগে থাকা সোনার টপ মিলছে আড়াই হাজার টাকায়। তার চাহিদা তাই বেশ বেশি। শর্মিলা বিবি বলেন, “এক টুকরো সোনা গরিবের ঘরের বড় সঞ্চয়। তাই টপ কিনতে পেরেছি, তা-ই কিনে রেখেছি।” খুব সামান্য সোনার একটা আংটি করতে যখন পুজোর আগে লাগত কম করে চার হাজার টাকার কাছাকাছি, এখন মিলছে তার থেকে দু’শো টাকা কমে। ঝোলা দুল কম করে চার হাজার টাকা। হাতে তৈরি বারো মাসের ব্যবহারের সোনার চেন প্রায় একুশ-বাইশ হাজার। সারাক্ষণ পরার হাতের চুড়ি প্রায় ৫ হাজার টাকা জোড়া। তবে বাউটি ৪৫ হাজার, মগরমুখ বালা ৫৫ হাজার। বেলডাঙার গায়ত্রী সরকার বলেন, “স্বামী দুর্গাপুজোয় বাড়ি এসেছিলেন। কিন্তু সোনার দাম বেশি থাকায় তখন গয়না কেনার কথা ভাবতেই পারিনি। এখন দাম কম। সামনে দীপাবলি ও ধনতেরাস। তাই মেয়েকে নিয়ে দোকানে গিয়েছিলাম। ছোট কানের দুল ও আংটি তৈরি করতে দিয়েছি।” স্থানীয় স্বাস্থ্যকর্মী শাহানাহাজ খাতুন বলেন, “শীতে মেয়ের বিয়ে। পাত্র পক্ষের কোনও চাহিদা নেই। মেয়েকে সাজিয়ে দিতে যা গয়নার প্রয়োজন, দাম কমায় এখনই তা তৈরি করতে শুরু করেছি।” স্বর্ণশিল্পী রুদ্রনীল রায় বলেন, “সাধারণ ক্রেতারা হালকা সোনার ছোট গহনার দিকে ঝুঁকে রয়েছেন। বড়, ভারি গহনার চাহিদা এখনও কমই।”
বেলডাঙায় রাজ্যে প্রথম নিজের জায়গায় বঙ্গীয় স্বর্ণশিল্পী সমিতির ভবনের উদ্বোধন হয়েছে শুক্রবার। সেই অনুষ্ঠানে এসে অখিল ভারত স্বর্ণকার সংঘের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও বঙ্গীয় স্বর্ণশিল্পী সমিতির রাজ্য কমিটির সম্পাদক টগরচন্দ্র পোদ্দার বলেন, “আমরা সরকারকে আমাদের শিল্পীদের স্বচিত্র পরিচয় পত্র ও সরকারি স্তরে প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের দাবি জানিয়েছি।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.