গত বিধানসভা নির্বাচনের আগে জেলা পরিষদের টাকায় তৈরি হয়েছিল প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র। কিন্তু নজর দেওয়া হয়নি উন্নত পরিকাঠামো গড়ে তোলার দিকে। নীট ফল স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি প্রায় বন্ধ হওয়ার মুখে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙর-১ নম্বর ব্লকের ভাঁটিপোতা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বর্তমানে এমনই অবস্থা। শুধু স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পরিকাঠোমাই নয়, স্বাস্থ্যকেন্দ্রে রোগী নিয়ে আসতে গেলে যে রাস্তা ব্যবহাকর করতে হবে তার অবস্থাও খুবই খারাপ। রাস্তার মধ্যে পড়ে একটি সেতু। কিন্তু সেটিরও ভগ্নদশা হওয়ায় গাড়িতে করে রোগী নিয়ে আসা দুষ্কর হয়ে দাঁড়িয়েছে। স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বেহাল পরিকাঠামো এবং খারাপ রাস্তার জাঁতাকলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে এই এলাকা এবং সংলগ্ন এলাকার মানুষজনকে।
জেলা পরিষদের সভাধিপতি শামিম শেখ বলেন, “জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের টাকায় ভাঁটিপোতা স্বাস্থ্যকেন্দ্র তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু চিকিৎসকের অভাবে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে উপযুক্ত পরিষেবা দেওয়া যাচ্ছে না। সমস্যাটি স্বাস্থ্য দফতরকে জানিয়েছি।” জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শিখা অধিকারীর বক্তব্য, ‘‘যতদূর জানি ওটা একটা আউটডোর ক্লিনিক। তবে সেখানে চিকিৎসা পরিষেবা নিয়ে ক্ষোভের বিষয়টি জানা নেই। এ ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে দেখছি।”
স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় ২ কোটি টাকা খরচ করে ২০১১ সালে বিধানসভা নির্বাচনের তৈরি হয়েছিল ১০ শয্যার এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি। দু’টি ভবন নিয়ে স্বাস্থ্য পরিষেবার দেওয়ার কাজও শুরু হয়েছিল। কিন্তু কাজ শুরু হয়ে যাওয়ার পরে পরিষেবার উন্নতির দিকে আর নজর দেওয়া হয়নি। উল্টে যে টুকু পরিষেবা দেওয়ার ব্যবস্থা ছিল তার অবস্থাও ক্রমশ খারাপ হয়েছে। স্বাস্থ্যকেন্দ্রে একজন মাত্র চিকিৎসক, একজন নার্স ও একজন স্বাস্থ্যকর্মী, এই নিয়েই কোনওরকমে চলছে। চোখ, কান, প্রসূতি, শিশু সমস্ত বিভাগই বন্ধ। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে ভেঙে গিয়েছে ভবনের দরজা, জানলাও। উপযুক্ত পরিষেবা এবং খারাপ রাস্তাঘাটের কারণে রোগীদের আসাও ভীষণভাবে কমে গিয়েছে।
স্থানীয় গ্রামবাসীদের অভিযোগ, একজন চিকিৎসক রয়েছেন বটে। কিন্তু তিনিও অনিয়মিত। রোগীর ভিড় চলতে থাকলেও দুপুরে ২টোর পর তাঁর দেখা পাওয়া যায় না। গ্রামবাসীদের আরও অভিযোগ, স্বাস্থ্যকেন্দ্রটির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বাসন্তী হাইওয়ের সংযোগকারী রাস্তার অবস্থা খুবই খারাপ। স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পৌঁছতে বাগজোলা খালের উপর কাঠের সেতুটিও ভাঙা। ফলে রোগী নিয়ে যাওয়া খুবই ঝুঁকির ব্যাপার।
স্থানীয় বাসিন্দা কানাই মণ্ডল, রীতা কয়ালদের কথায়, “স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পরিকাঠামো ও রাস্তা সারানোর বিষয়ে জয়নগর লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ তরুণ মণ্ডলকে জানিয়েছি।” এ বিষয়ে সাংসদের উত্তর, “সমগ্র বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রীকে জানিয়েছি। তিনি তাঁর সাংসদ তহবিল থেকে ৭ লক্ষ টাকা রাস্তা মেরামতির জন্য দিয়েছেন। শীঘ্রই কাজ শুরু হবে।” |