আদালতে বিরল ঐক্য
এবিজি আর রাজ্যের সুর মিলিয়ে দিল সেই বন্দরই
বিজি, আর রাজ্য সরকার। হলদিয়া ঘিরে বিবদমান দু’পক্ষের সুর মিলিয়ে দিল কলকাতা বন্দর। হাইকোর্টে বন্দর-কর্তৃপক্ষের দাখিল করা এক আর্জির গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে সোমবার দু’পক্ষই আপত্তি তুলল এক সুরে।
গত শুক্রবার কলকাতা বন্দরের আর্জি নিয়ে হাইকোর্টে একপ্রস্ত নাটক হয়ে গিয়েছিল। অবকাশকালীন বিচারপতি সম্বুদ্ধ চক্রবর্তীর এজলাসে প্রথম পর্বে বন্দরের কৌঁসুলি বিশ্বরূপ গুপ্তের সম্মতির ভিত্তিতে বন্দরের দায়ের করা মামলাটি খারিজ করে দিয়েছিল হাইকোর্ট। পরে বন্দরের অপর কৌঁসুলি অরুণাভ ঘোষ জানিয়ে দেন, বন্দর-কর্তৃপক্ষের নির্দেশ ছাড়াই মামলা প্রত্যাহারে সম্মতি দেওয়া হয়েছে।
ফলে বন্দরের তরফে নতুন আর্জি পেশের সিদ্ধান্ত হয়। ওই দিন বিকেলে বিচারপতি চক্রবর্তীর এজলাসে নতুন করে আর্জি জানায় বন্দর। তাতে বলা হয়, ‘বন্দর-কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই আইনজীবী মামলা প্রত্যাহারে সম্মতি দিয়েছিলেন। আমরা চাই, মামলা খারিজের নির্দেশটি প্রত্যাহার করে পুরনো আর্জির ভিত্তিতে মামলা চালানো হোক।’ আর্জিটি এ দিন শুনানির জন্য ওঠে অবকাশকালীন বিচারপতি সৌমেন সেনের এজলাসে। বিচারপতি আবেদন গ্রহণ করে জানিয়ে দেন, পূজাবকাশের পরে ১৯ নভেম্বর হাইকোর্ট খুললে সে দিন বিচারপতি দীপঙ্কর দত্তের এজলাসে মামলার শুনানি হবে।
হলদিয়ার জের। শিল্পের দাবিতে পথে নেমে গ্রেফতার হচ্ছেন কংগ্রেস কর্মী। শ্যামবাজারে। —নিজস্ব চিত্র
আর ওই নির্দেশেরই আগে আদালতে দেখা যায় এক বিরল দৃশ্য, যখন এবিজি ও রাজ্য সরকার একযোগে প্রত্যাহৃত মামলার পুনরায় শুনানির আবেদনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে। এবিজি-র কৌঁসুলি সমরাদিত্য পাল বলেন, “যে মামলা এক বার প্রত্যাহার করা হয়েছে, তা ফের চালু করা যায় না।” রাজ্যের কৌঁসুলি সপ্তাংশু বসুও কার্যত সমরাদিত্যবাবুর বক্তব্যকে সমর্থন করে বলেন, “কোনও পরিস্থিতিতেই এই মামলা প্রত্যাহার করা যায় না।”
দু’পক্ষের ‘মতৈক্য’ দেখে বিস্ময় গোপন করেননি বন্দরের আইনজীবী অরুণাভ ঘোষ। “যার বিরুদ্ধে আইন-শৃঙ্খলার অবনতির অভিযোগ এনে এবিজি হলদিয়া ছাড়তে চাইল, সেই রাজ্য সরকারের আইনজীবীই এবিজি-র মতকে সমর্থন করলেন! এটা বিস্ময়ের।” মন্তব্য করেন তিনি। আদালতের বাইরে অরুণাভবাবু বলেন, “লড়াইটা এবিজি-র সঙ্গে রাজ্য সরকারের। বন্দর পড়েছে মাঝখানে। বন্দরের বাইরের গোলমালের জেরে ভিতরে ঢুকতে পারছিলেন না এবিজি-র শ্রমিকেরা। ফলে কাজ হচ্ছিল না, ক্ষতি হচ্ছিল হলদিয়া বন্দরের। আমরা তো এবিজি-র বিরুদ্ধে চুক্তিভঙ্গের অভিযোগ এনেছি। কিন্তু রাজ্য সরকারের কৌঁসুলি যে ভাবে আমাদের আর্জির বিরোধিতা করলেন, সেটাই আশ্চর্যের।” বন্দরের এক সূত্র বলেন, “এবিজি-র যুক্তি পরিষ্কার। আমাদের আর্জি খারিজ হলে এবিজি বিনা বাধায় মালপত্র নিয়ে চলে যেতে পারে। কিন্তু রাজ্য সরকারও কেন তা চাইছে, বুঝতে পারছি না।” রাজ্যের তরফে অবশ্য এর কোনও ব্যাখ্যা মেলেনি।
তবে বন্দর-কর্তৃপক্ষ যে এবিজি-কে সহজে মালপত্র নিয়ে যেতে দেবে না, তা এ দিন তাঁদের বক্তব্যেই পরিষ্কার। এ দিন বন্দরের তরফে বিবৃতি দিয়ে বলা হয়, কর্মী ছাঁটাই করলে যে হলদিয়া বন্দরে আইন-শৃঙ্খলার সমস্যা হতে পারে, সে ব্যাপারে আগে ভাগে এবিজি-কে সতর্ক করা হয়েছিল। এবিজি যাতে হলদিয়া ছেড়ে না-যায়, সে জন্য তিন-তিন বার বৈঠক ডেকেছিল বন্দর।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.