মোহনবাগান কর্তাদের বিরুদ্ধে সরাসরি প্রতারণার অভিযোগ আনলেন সালগাওকরের নব নিযুক্ত কোচ ডেভিড বুথ। গোয়া থেকে আনন্দবাজারকে করা ই-মেলে ব্রিটিশ কোচ কার্যত বোমা ফাটিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, কোচ ইস্যুতে মোহনবাগানের কর্তারা তাঁকে শুধুমাত্র ব্যবহার করেছেন। তাঁর দাবি, “আমাকে সামনে রেখে মোহনবাগান কর্তারা একটা ‘খেলা’ খেলেছেন। করিম বেঞ্চারিফাকে না পাওয়া পর্যন্ত ওঁরা আমার নামটা খুব বুদ্ধি করে ব্যবহার করেছিলেন। নিজেদের চাপ কমাতেই আসলে আমার নামটা ভাসিয়ে রাখা হয়েছিল। করিমকে পাওয়ার পরই ছেঁটে ফেলা হয়েছে আমার নাম। এটা তো প্রতারণাই।”
বুথের অভিযোগ শুনে হেসেছেন মোহনবাগান সচিব অঞ্জন মিত্র। বলে দিয়েছেন, “বুথ কোচ হতে পারেননি বলেই এসব বলছেন। এর কোনও গুরুত্ব নেই। কোচ বাছার সময় আমরা বুথ, করিম-সহ অনেকের সঙ্গেই কথা বলেছিলাম। বুথের চেয়ে আমাদের করিমকেই গ্রহণযোগ্য মনে হয়েছে। শেষ পর্যন্ত করিমের সঙ্গেই তাই আমরা কথা চূড়ান্ত করি। এতে প্রতারণার কী হল?”
দীর্ঘ ই-মেলে অঞ্জন মিত্রদের বিরুদ্ধে আরও কিছু গুরুতর অভিযোগ এনেছেন ব্রিটিশ কোচ। “মোহনবাগান তো আমার এজেন্টকে দীর্ঘদিন ঝুলিয়ে রেখেছিল। তাদের চাহিদা কী, সেটাই পরিষ্কার করছিল না। শেষপর্যন্ত এমন প্রস্তাব দেওয়া হল যেটা মেনে নেওয়া আমার পক্ষে সম্ভব ছিল না। এটা আসলে পুরোটাই গেম প্ল্যান।” বলে দিয়েছেন দীর্ঘদিন পর ভারতে কোচিং করতে ফেরা বুথ।
তীব্র চাপের মুখে সন্তোষ কাশ্যপকে সরিয়ে দেওয়ার পর বাগানের নতুন কোচেদের তালিকায় প্রথমে অনেকটাই এগিয়ে ছিলেন বুথ। তাকে পাওয়ার জন্য তাঁর এজেন্টের সঙ্গে কথাবার্তাও চালিয়েছিলেন ক্লাব কর্তারা। করিম শেষ পর্যন্ত সালগাওকর ছাড়তে রাজি হবেন কি না তা নিয়ে সংশয় ছিল সবুজ-মেরুন কর্তাদের। কিন্তু করিমকে ফের বিশাল টাকার প্রস্তাব পাঠানোর পর মরোক্কান কোচ রাজি হয়ে যাওয়ায় বুথকে ছেঁটে ফেলা হয়।
তীব্র ক্ষোভের মেলে বুথ এ দিন জানিয়ে দেন, ভবিষ্যতে মোহনবাগান ডাকলেও আর কোচিং করাতে আসবেন না। “এরকম ঘটনা মোহনবাগান কর্তারা এর আগেও আমার সঙ্গে করেছেন। ওঁদের ওপর আমার আর কোনও বিশ্বাস নেই।” যা শুনে অবশ্য রেগে যাননি মোহন-সচিব। বললেন, “অনেকেই এরকম বলেন। পরে আবার প্রস্তাব পেলে চলেও আসেন।”
পাশাপাশি করিমকেও ঘুরিয়ে বিঁধেছেন বুথ। মাঝপথে সালগাওরকে ডুবিয়ে করিম নতুন দলের দায়িত্ব নেওয়াটা কি পেশাদারিত্বের পরিচয়? জানতে চাওয়া হয়েছিল বুথের কাছে। দায়িত্ব নিয়েই সালগাওকরকে আই লিগের প্রথম ম্যাচ জেতানো কোচ লিখেছেন “আমার কাছে ফুটবলটাই বড়। টাকাটা নয়। ভাল ফুটবলই আমাকে অনুপ্রেরণা জোগায়।”
|