লন্ডনে এ বার বাংলা।
কলকাতাকে লন্ডন বানানোর পরিকল্পনা নিয়েছিল যে সরকার, তারাই এ বার লন্ডনের মাটিতে তুলে ধরল এক টুকরো বাংলা। সৌজন্যে অবশ্যই বাংলার পর্যটন দফতর।
লন্ডনে আজই শুরু হল এ বছরের বিশ্ব পর্যটন বাজার। আর সেই বিশ্ববাজারে বাংলাকে তুলে ধরতে পশ্চিমবঙ্গের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র অন্যতম অস্ত্র হিসেবে বেছে নিলেন গ্রামবাংলাকে। ঢাক-ঢোল আর বাউল গানে জমে গেল উৎসব। লাল পাড় সাদা শাড়িতে লন্ডনের মাটিতে বাংলা-দর্শন করালেন মেয়েরা।
অমিতবাবুর কথায়, “এত রং আর সুরে সকলে চমকে গিয়েছেন। অসাধারণ লাগছে।” দশ জন শিল্পীকে নিয়ে এসেছেন তিনি। এঁদের মধ্যে বাঁকুড়ার শঙ্খশিল্পী চন্দন দত্ত প্রথমবার ব্রিটেনে এলেন। উচ্ছ্বসিত তিনিও। |
“সাঁই আমার কখন খেলে কোন খেলা,” গান ধরেছিলেন শ্যাম খ্যাপা ও গুলাম খ্যাপা। লালন আর রবি ঠাকুরের গানে তাঁরা মাতিয়ে দিলেন বাংলার স্টল। বললেন, “এখানে এসে আমাদের খুব ভাল লাগছে।” মেদিনীপুরের ময়না চিত্রকর পট আঁকতে আঁকতে গান ধরেছিলেন। তাঁর গ্রামের গান। বস্তুত, তাঁদের এই পটের ছবির সঙ্গেই বাঁধা থাকে গান। তাতে শোনানো হয় কোনও ঐতিহাসিক বা পুরাণের গল্প। বাঁকুড়ার কাঠের ঘোড়া নিয়ে এসেছিলেন বাউল দাস কুম্ভকার। এমন সম্মানে তাঁরা খুব খুশি। “বিশ্ব পর্যটন বাজারে এই প্রথম এমন একটা জায়গা পেল বাংলা। আয়োজক দলের সবাই এসেছিলেন। গান শুনেছেন, শিল্পীদের কাজ দেখেছেন। ওঁরা উচ্ছ্বসিত”, বললেন অমিতবাবু। কলকাতাকে লন্ডন বানানোর প্রচেষ্টায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আরও এক ধাপ এগোলেন বলে মনে করছেন প্রবাসী বাঙালিরা।
দার্জিলিংকেও সাজানোর কথা ভাবছে পর্যটন দফতর। বাগডোগরার কাছে ২০৭ একর জমিতে পাঁচ তারা হোটেল, গল্ফ কোর্স তৈরির কথাও ভাবা হচ্ছে জানালেন অমিতবাবু। বললেন, “মুখ্যমন্ত্রীই জায়গাটা পছন্দ করেছিলেন। ছবি তুলে এনে আমাকে দেখিয়ে বলেছিলেন, এখানে কিছু একটা তৈরি করুন।” সুন্দরবনের ঝড়খালিতে জলের মধ্যে একটা পর্যটন কেন্দ্র তৈরির পরিকল্পনাও রয়েছে। বৈকুণ্ঠপুর জঙ্গলে তিস্তাকে ঘিরে অভয়ারণ্য তৈরির ভাবনা-চিন্তাও চলছে জোর কদমে।
হাতে এখনও চার দিন। এর মধ্যেই আরও দারুণ দারুণ উপহার পেতে চলেছে বাংলা, আশাবাদী অমিতবাবু। বললেন, “খুব শিগগিরি আমরা আন্তর্জাতিক মানচিত্রে একটা বিশেষ জায়গা করে নেব।” |