ইউনিভার্সিটি ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির (ইউআইটি) আবাসিক ও অনাবাসী ছাত্রদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় জড়িত ছ’জনকে শাস্তি দিল বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়। ইনস্টিটিউটের বার্ষিক অনুষ্ঠান কাদের দখলে থাকবে, তা নিয়ে বিরোধের জেরে প্রায় আড়াই মাসে আগে এই সংঘর্ষ হয়েছিল। এর ফলে অনির্দিষ্ট কালের জন্য ক্লাস বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। বন্ধ হয়ে গিয়েছিল পরীক্ষা ও বার্ষিক অনুষ্ঠানও। নিরাপত্তার খাতিরে এক দিনের নোটিসে হস্টেল খালি করা হয়।
এই ঘটনার তদন্ত করতে একটি কমিটি গঠন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য স্মৃতিকুমার সরকার। কমিটিতে ছিলেন রেজিস্ট্রার শ্রীপতি মুখোপাধ্যায়, কলা বিভাগের ডিন অরূপ চট্টোপাধ্যায় ও বিজ্ঞান বিভাগের ডিন বিষ্ণুচরণ সরকার। ছিলেন ইনস্টিটিউটের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বিভাসকুমার প্রামাণিক, অফিসার অন স্পেশাল ডিউটি অমিয় ঘোষ এবং কয়েক জন প্রবীণ শিক্ষক ও হোস্টেল সুপারেরা। প্রায় এক মাস তদন্তের পরেই তদন্তকারী কমিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মসমিতির কাছে রিপোর্ট পেশ করে। তাতেই ৬ ছাত্রকে নানা শাস্তির সুপারিশ করা হয়েছে বলে বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর। তবে ইউআইটি বা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ, কেউই এই ছাত্রদের নাম জানাতে চাননি। উপাচার্য জানান, কর্মসমিতির বৈঠকে আলোচনার পরে অবিলম্বে ওই সাজা কার্যকর করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার জানান, ছ’জনের মধ্যে চার জন হস্টেলের আবাসিক। বাকিরা অনাবাসী। চার জনকে হস্টেল থেকে বহিষ্কারের নির্দশে দেওয়া হয়েছে। প্রত্যেকেরই অভিভাবককে ডেকে পাঠানো হয়েছে। তাঁদের সামনে ৬ ছাত্রকে জিজ্ঞাসা করা হবে, কেন এমন ঘটনায় তাঁরা জড়িয়ে পড়ল। সদুত্তর না পেলে আরও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ভবিষ্যতে এই ধরনের সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়লে তাঁদের ইনস্টিটিউট থেকে বহিষ্কার করা হবে। দুই শেষ বর্ষের ছাত্রকে মাথা পিছু ২৩ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।
এই ঘটনা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। ওই ছয় ছাত্র ইনস্টিটিউটে তাদের ইউনিটের সদস্য বলে দাবি করে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতি অশোক রুদ্রের অভিযোগ, “বেছে-বেছে আমাদের সদস্যদের কঠোর সাজা দেওয়া হয়েছে।” এসএফআইয়ের জেলা সভাপতি সুব্রত সিদ্ধান্ত পাল্টা বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের সব কিছুই তো তৃণমূলের দখলে। তাই এমন অভিযোগ কেন তোলা হচ্ছে, বুঝতে পারছি না।” বিশ্ববিদ্যালয়েকর বামপন্থী কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি আকাশ চট্টোপাধ্যায়েরও বক্তব্য, “এই তদন্ত বা সাজা ঘোষণা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ব্যাপার। এর মধ্যে রাজনীতি না টানাই উচিত।” |