জাঁকের লক্ষ্মী দাস পরিবারে
কটা সময় ছিল যখন হাতির পিঠে চড়ে ঘট ডোবাতে যেতেন পুরোহিত। রাস্তার দু’দিকে শত শত মানুষ দাঁড়িয়ে দেখতেন সেই শোভাযাত্রা। বিসর্জনেও তাই। বিসর্জনের শোভাযাত্রার প্রথমেও থাকত সেই হাতি। কখনও কখনও হাতির সঙ্গে ঘোড়াও। এখন অবশ্য সেই ঐতিহ্য নেই। তবে কোজাগরীর লক্ষ্মীপুজোর জৌলুস এতটুকুও কমেনি। হাতির পরিবর্তে ঘোড়া নিয়ে আসা হয়। কখনও আবার ঘোড়া না জুটলে চালিয়ে দেওয়া হয় খচ্চর দিয়েও। পূর্বপুরুষের রীতি তো যতটা সম্ভব ধরে রাখতে হবে। সেই চেষ্টায় চালিয়ে যান মেদিনীপুর শহরের চিড়িমারসাই এলাকার দাস পরিবার। পরিবারের সদস্য মানস দাস, প্রদীপ দাসেরা বলেন, “এখন হাতি নিয়ে বড় কড়াকড়ি। তাই সহজে মেলে না। না হলে পূর্বপুরুষের ঐতিহ্য ধরে রাখতে হাতিই নিয়ে আসতাম। হাতি না মেলায় ঘোড়া দিয়েই চালিয়ে দিই।”
ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল।
দাস পরিবারের এই পুজো ৬৭ বছরে পা দিল। মূলত, ব্যবসায়ী পরিবার। আর ব্যবসায় সমৃদ্ধির লক্ষ্যেই পরিবারে পুজোর প্রচলন। দুর্গাপুজোর মতোই এই পরিবারের পুজো টানা পাঁচ দিনের। যে পুজোর শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত শুধুই আনন্দের। পুজোর দিন পরিবারের সকলে সুসজ্জিত হয়ে ঘট ডোবাতে যাওয়া। শোভাযাত্রায় থাকে নানা ধরনের বাদ্য। তাছাড়াও প্রতিদিনই নানা ধরনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। যে অনুষ্ঠানে পরিবারের সকলেও অংশ নেন। এ বার যেমন পুজোর পরদিন সন্ধেয় যাত্রা। তারপর দিন নাটক। পরিবারের সকলে মিলেই নাটকে অভিনয় করেন। পরদিন রয়েছে অন্নভোগ। যেখানে পরিবার, আত্মীয়স্বজনের বাইরেও বহু মানুষ অন্নভোগ খেয়ে যান। খাওয়াদাওয়া শেষে রয়েছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। স্থানীয় শিল্পী থেকে বহু নাম করা শিল্পীদের নিয়ে আসা হয়। তারপর বিসর্জন। যে বিসর্জনেও থাকে অভিনবত্ব। পরিবারের সকলে মিলে শোভাযাত্রায় অংশ নেন। থাকে বাদ্যযন্ত্র। আর এখন হাতির পরিবর্তে ঘোড়া। তাই পুজোর সময়ে পরিবারের সমস্ত সদস্য তো বটেই আত্মীয় স্বজনেরাও এই আনন্দ উপভোগ করতে হাজির হন পুজোতে।
বাইরের এই আড়ম্বর বাদ দিলে পুজো হয় শুদ্ধাচারেই। প্রতিদিন নিয়ম মেনে পুজো অর্চনা, থাকে চণ্ডীপাঠ, হোম। পরিবারের বর্তমান প্রজন্মও ব্যবসায় প্রতিষ্ঠিত। পরিবারের সদস্য তপন দাস, চিন্ময় দাসদের কথায়, “লক্ষ্মীর আশীর্বাদ ছাড়া ব্যবসায় সফল হওয়া যায় না। পরিবারের সুখ, সমৃদ্ধিও থাকে না। এই লক্ষ্যেই পূর্ব পুরুষেরা বাড়িতে লক্ষ্মীর আসন পেতে ছিলেন। আমরা এখনও সেই প্রথা মেনেই পুজো চালিয়ে যাচ্ছি।” এ পুজোকে ঘিরে কেবল দাস পরিবার নয়, উৎসাহ দেখা যায় এলাকার মানুষের মধ্যেও।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.