|
|
|
|
ছাত্রীকে গণধর্ষণ করে খুনের অভিযোগ তপনে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • তপন |
প্রেমের প্রস্তাবে সাড়া না দেওয়ায় গণধর্ষণের পরে খুন করা হয়েছে এক স্কুলছাত্রীকেপরিবারের করা এমনই অভিযোগকে ঘিরে রবিবার তেতে উঠল দক্ষিণ দিনাজপুরের তপন থানার মহকুঁড়ি এলাকা।
পুলিশ জানায়, নিহত মেহেরুন খাতুন (১৮) বালাপুর হাইস্কুলের দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়তেন। শনিবার সন্ধ্যা থেকে তাঁর খোঁজ মিলছিল না। এ দিন তাঁর দেহ মেলে বাড়ি থেকে বড়জোর ১০০ মিটার দূরের পুকুরপাড়ে। পুলিশ ঘটনাস্থলে দেরিতে পৌঁছেছে অভিযোগে ক্ষোভে ফেটে পড়েন এলাকাবাসী। বালুরঘাট থেকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জ্যাকলিন দর্জি বিরাট বাহিনী নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেন।
পুকুরের ধার থেকে এ দিন নিহত ছাত্রীর চুড়িদার, জুতো উদ্ধার করে পুলিশ। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, “নিহতের গলায়, ঘাড়ে এবং ঠোঁটে জখমের চিহ্ন রয়েছে। অত্যাচারের পরে, শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে বলে প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে। ছাত্রীর বাবার অভিযোগক্রমে পড়শি তথা আত্মীয় যুবক আনোয়ার হোসেন মণ্ডলের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও খুনের মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে। ছাত্রীটির বাড়ির পাশে অভিযুক্তের বাড়ি। ঘটনায় কত জন যুক্ত, তা ময়না-তদন্তের রিপোর্ট পেলে স্পষ্ট হবে।”
পুলিশ সূত্রের খবর, আনোয়ার পালিয়ে গিয়েছেন। বাড়িতে তালা মেরে উধাও তাঁর পরিবারের লোকজনও। পুলিশের কাছে করা অভিযোগে নিহত ছাত্রীর বাবা দবিরুল মণ্ডল দাবি করেছেন, আনোয়ার ছাড়াও ঘটনার সঙ্গে আরও কয়েকজন স্থানীয় যুবক জড়িত রয়েছে। তদন্তের স্বার্থে পুলিশ পলাতক ওই অভিযুক্তদের নাম প্রকাশ না করলেও তাদের ধরতে তল্লাশি শুরু করেছে।
কৃষিজীবী দবিরুল মণ্ডলের ছয় মেয়ের মধ্যে চার জনের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। মেহেরুন পঞ্চম। তাঁর বিয়ের জন্য কথাবার্তা চলছিল। পরিবার সূত্রের খবর, মেহেরুন সম্পর্কে অভিযুক্ত আনোয়ারের পিসি। নিহত ছাত্রীর বাড়িতে আনোয়ারের নিয়মিত যাতায়াত ছিল। পুলিশ সূত্রের দাবি, মেহেরুনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়াতে চেয়েছিলেন আনোয়ার। মেহেরুন তাতে রাজি হননি।
ওই ছাত্রীর বোন জেন্নাতুন খাতুন বলে, “শনিবার সন্ধ্যায় দিদি টুথপেস্ট, ব্রাশের মতো কিছু জিনিস নিয়ে বাড়িতে ফিরেছিল। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা নাগাদ মোবাইলে ফোন পেয়ে ও বেরিয়ে যায়।” রাত ৯টা বাজলেও মেয়ে ফিরছে না দেখে দবিরুল লোকজন নিয়ে খুঁজতে বেরোন। তিনি বলেন, “মেয়ের হদিস না পেয়ে মোবাইলে বারবার ফোন করেছি। কিন্তু ওর মোবাইল বন্ধ ছিল। সারারাত উৎকন্ঠায় কেটেছে।” তাঁর অভিযোগ, “আনোয়ার মেহেরুনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি করতে চেয়েছিল। মেয়ে তাতে রাজি হয়নি। তার উপরে ওর বিয়ের কথাবার্তাও চলছিল। সেই আক্রোশেই আমার মেয়ের উপরে এই হামলা হল।”
এ দিন সকালে পুকুরের ধারে উপুড় হয়ে পড়ে থাকা অবস্থায় মেহেরুনের দেহ মেলে। শরীরে কাপড় ছিল না। স্থানীয় বাসিন্দারা কাপড় দিয়ে দেহটি ঢেকে পুলিশে খবর দেন। কাছেই গোয়ালঘরের চালা থেকে মেলে ছাত্রীটির মোবাইল। পুলিশ সূত্রের খবর, মোবাইলের সব কল-লিস্ট ‘ডিলিট’ করা হয়েছে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের আশ্বাস, “তদন্তে আমরা সব বার করব।” |
|
|
|
|
|