কাশ্যপের দাবি হতাশ হওয়ার মতো এখনও কিছু হয়নি |
প্রথা ভেঙে কোচের পাশে দাঁড়ালেন মোহন-সচিব |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
ফেড কাপ থেকে আই লিগ অভিষেক ম্যাচ। ব্যর্থতায় মোড়া বাগানের উপাখ্যান। রবিবার পড়ন্ত বিকেলে যখন দমদম বিমানবন্দরের ভেতর থেকে একে একে বেরিয়ে আসছিলেন টোলগে, নবি, জুয়েল, সাবিথ, অরিন্দমরা, তখন যেন বর্ষার কালো মেঘ তাঁদের চোখমুখে। একমাত্র ব্যতিক্রম ওডাফা। হাল না ছাড়ার অঙ্গীকার মোহনবাগান অধিনায়কের গলায়। বিমানবন্দরে নেমেই সমর্থকদের উদ্দেশ্যে ওডাফার বার্তা, “একটু ধৈর্য ধরুন।”
তাতে অবশ্য মোহন-কোচকে নিয়ে ময়দানের জল্পনায় খামতি নেই। সন্তোষ কাশ্যপকে কি কোচের দায়িত্বে রাখা হবে, নাকি তাঁর মাথার ওপর বসানো হবে টিডি? রবিবার রাত পর্যন্ত ক্লাব সূত্রের খবর, অন্তত দুর্গাপুজোর আগে কোচ-ছাটাই হচ্ছে না। কেন না মরসুম শুরুর আগে বেশ কিছু ফুটবলার ডেঙ্গি ও অন্যান্য অসুস্থতায় আক্রান্ত হয়ে পড়ায় অনুশীলনে আসতে পারেননি। সেটুকু বাড়তি সময় কোচকে দিতে চাইছেন কর্তারা। সন্তোষের পাশে দাঁড়াচ্ছেন ওডাফাও, “কোচের কী দোষ? মাঠে তো আমরাই পারফর্ম করতে পারিনি। কাশ্যপ যথেষ্ট ভাল কোচ। এই মুহূর্তে কোচ বদলের দরকার আছে বলে মনে করি না।” |
ওডাফারও সার্টিফিকেট কোচকে |
ওডাফার সন্তোষ-প্রীতি নতুন নয়। কিন্তু পান থেকে চুন খসলেই এত দিন যাঁরা কোচের ওপর সমস্ত দায় চাপিয়ে ‘গোল্ডেন হ্যান্ডশেক’ করে তাঁকে বিদায় জানাতেন, সেই মোহন কর্তারাও প্রথা ভেঙে আপাতত সন্তোষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। অঞ্জন মিত্রের বক্তব্য “কাশ্যপের দিকে আঙ্গুল তোলার মানে নেই। আমাদের ফুটবলাররা যে ভাবে গোল নষ্ট করেছে, তাতে কোচ কী করবে? মাঠে নেমে গোল তো আর কোচ করবে না? এখনই কোচ ছাঁটাইয়ের কোনও পরিস্থিতি তৈরি হয়নি।” যদিও তলে-তলে কাশ্যপের পরিবর্তে তিন জনের নাম বাগানে ভাসছে। সদস্য-সমর্থকদের পছন্দ ‘ঘরের ছেলে’ সুব্রত ভট্টাচার্য। কিছু কর্তারা চাইছেন সুভাষ ভৌমিককে। তবে এই মুহূর্তে তাঁর চার্চিল ব্রাদার্স ছেড়ে আসার সম্ভাবনা কম। বেশ কিছু সবুজ-মেরুন কর্তা আবার ঝুঁকে বিদেশি কোচের দিকে। কে সেই বিদেশি কোচ? তা নিয়ে অবশ্য জল্পনা তুঙ্গে।
আসলে কর্তারা কোচের থেকেও বেশি হতাশ কোটি টাকার দুই স্ট্রাইকারের ওপর। ওডাফা-টোলগে জুটি ঘিরে গোলের বন্যার যে স্বপ্ন দেখেছিল সবুজ-মেরুন সদস্য-সমর্থকেরা, তা এখনও অসম্পূর্ণ। লাজংয়ের বিরুদ্ধেও গোল নষ্টের অভিযোগ উঠছে। ওডাফা অবশ্য বললেন, “ভাগ্যের দোষে গোল পেলাম না। ভাল খেলেও আমরা লাজংয়ের কাছে হেরেছি। একটা জয় দরকার। তা হলেই সব কিছু বদলে যাবে। প্রয়াগের বিরুদ্ধে পরের ম্যাচটা আমাদের জিততেই হবে।”
ওডাফা যেমন কাশ্যপের পাশে দাঁড়াচ্ছেন তেমন ওডাফাদের পাশে দাঁড়ালেন কোচও। ওডাফাদের গোল নষ্ট প্রসঙ্গে কাশ্যপ বললেন, “ফুটবলে এ রকম হতেই পারে। আমরা অনেক গোলের সুযোগ নষ্ট করেছি ঠিকই। কিন্তু এত তাড়াতাড়ি হতাশ হওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। আশা করছি, ছেলেরা পরের ম্যাচ থেকেই উঠে দাঁড়াবে।” সমর্থকরা কি এই আশ্বাসে শান্ত হবেন? বোধহয় না। কেন না সোমবারই ময়দানে গোষ্ঠ পালের মূর্তির সামনে থেকে সবুজ-মেরুন তাঁবু পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন করেছেন মোহন সমর্থকেরা। |