মমতা চেয়েছিলেন, পুজোর সময় বা ঠিক তার আগে যে-ভাবেই হোক, নতুন টার্মিনালের উদ্বোধন হয়ে যাক। এই মর্মে কেন্দ্রকে অনুরোধও করেছিলেন তিনি। রাজ্যে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পরে প্রথম আন্তর্জাতিক মানের কিছু একটা চালু হত। মমতার অনুরোধে তখন রাজিও হয়েছিল কেন্দ্র। ২০১১ সালের ডিসেম্বরে বিমান মন্ত্রকের দায়িত্ব নেওয়ার পরে রাষ্ট্রীয় লোকদলের নেতা অজিত সিংহ কলকাতায় এসেছিলেন মমতার সঙ্গে দেখা করতে। রাজনৈতিক মহলের মতে, বিমান ক্ষেত্রে বিদেশি লগ্নির বিষয়ে মমতার সমর্থন পেতেই অজিত কলকাতায় আসেন। মমতা ওই বিনিয়োগে সরাসরি সমর্থনের আশ্বাস দেননি। তবে শর্ত দেন, পুজোর সময় নতুন টার্মিনাল চালু করে দিতে হবে। সে-বার কলকাতা ছাড়ার আগে অজিত বলেন, পুজোর মুখেই চালু হবে টার্মিনাল। তাঁর ঘোষণা অনুযায়ী মহালয়ায় বা তার পরে কাছাকাছি কোনও দিনে টার্মিনালের উদ্বোধন হবে বলে ধরে নিয়ে প্রস্তুতিও শুরু করে দেন বিমানবন্দর-কর্তৃপক্ষ। |
এখন পরিস্থিতি বদলে গিয়েছে। মমতা কেন্দ্রীয় সরকারের উপর থেকে সমর্থন তুলে নেওয়ায় তাঁর শর্ত বা অনুরোধ মানার দায় নেই বিমান মন্ত্রকের। এবং তাঁর সমর্থন ছাড়াই বিমান ক্ষেত্রে বিদেশি বিনিয়োগের বিষয়টি সবুজ সঙ্কেত পেয়ে গিয়েছে। বিমানবন্দরের খবর, কলকাতায় নতুন টার্মিনালের কাজ যতটা এগিয়েছে, তাতে পুজোর মুখেই সেটি চালু করতে গেলে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হত। নতুন টার্মিনাল থেকে উড়ান চালু করার জন্য কোনও একটি বিমান সংস্থাকে অনুরোধ-উপরোধ করতে হত। সমস্যায় পড়ে যেত তারাও। অজিত বলেন, “আশা করছি, সামনের বছর জানুয়ারির মধ্যে টার্মিনালের কাজ শেষ করা যাবে।”
নতুন টার্মিনালে কতটা কাজ বাকি?
বিমানবন্দর সূত্রের খবর, ১৫টি এরোব্রিজ আসার কথা ছিল। একটিও আসেনি। নতুন টার্মিনালের নকশা অনুযায়ী সব বিমানই এসে এরোব্রিজে (বিমান থেকে যে-বারান্দা বরাবর সরাসরি টার্মিনালে পৌঁছনো যায়) দাঁড়াবে। বিমানবন্দর-কর্তৃপক্ষের অফিসারেরা সবে মাত্র সেপ্টেম্বরে নিউজিল্যান্ডে গিয়ে সেই এরোব্রিজ দেখে এসেছেন। চলতি মাসের মাঝামাঝি পাঁচটি এরোব্রিজ এসে যাওয়ার কথা। এরোব্রিজের সমস্যা ছাড়াও বিভিন্ন বিমান সংস্থা, অভিবাসন ও শুল্ক দফতরের জন্য নতুন টার্মিনালে কোথায় জায়গা বরাদ্দ হবে, কে কোন ঘরে বসবে, কোন কাউন্টার কে ব্যবহার করবে ইত্যাদি বিষয়ে কর্তৃপক্ষ এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি। |