ভোরের আলো ফোটার আগে থেকেই ভোটগ্রহণ কেন্দ্রগুলির বাইরে লম্বা লাইন। ভেনিজুয়েলার ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করতে আজ ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দিলেন আমজনতা। ভেনিজুয়েলায় পরিবর্তন আসবে কি না, আপাতত সে দিকেই তাকিয়ে গোটা বিশ্ব। উগো চাভেস না এনরিকে ক্যাপ্রিলেস, কাকে বেছে নিলেন দেশবাসী, তা অবশ্য বোঝা যাবে ফল ঘোষণা হওয়ার পরেই।
প্রায় ১৪ বছর ধরে ভেনিজুয়েলাকে সমাজতন্ত্রের আদর্শে দীক্ষিত করার পথে হেঁটেছেন উগো চাভেস। দেশের হতদরিদ্র জনতার মধ্যে তাঁর জনপ্রিয়তা আকাশছোঁয়া। গত ১৪ বছরে কার্যত বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত থেকেছেন। তবে এই বছর এই চেনা ছবি অনেকটাই বদলে দিয়েছেন এনরিকে। রীতিমতো বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচার চালিয়েছেন তিনি। জনমত সমীক্ষা বলছে, সদ্য ক্যানসার সারিয়ে ওঠা চাভেসের ঘাড়ের কাছেই নিঃশ্বাস ফেলছেন এনরিকে। নির্বাচন বিশেষজ্ঞদের মতে, বৈদ্যুতিন ভোটগ্রহণ যন্ত্রে কারচুপি সম্ভব নয়। ভোটের ফলাফল যা-ই হোক না কেন তা মেনে নেবেন, এই মর্মে পাঠানো একটি আবেদন পত্রে সই করেছেন প্রার্থীদের প্রত্যেকেই। তবে চাভেস মনে করছেন যে, তিনি জিতলে সেই ফলাফল মেনে নেবে না ‘অতি-দক্ষিণপন্থী’রা। তাই ডান-বাম সব দলের প্রতি তাঁর আহ্বান, “আমরা একটি পরিণত, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে বাস করি। এখানে নানা প্রতিষ্ঠান সক্রিয়। নির্বাচনে যা ফল হবে তা সবারই মুক্ত মনে মেনে নেওয়া উচিত।” |
তবে মুখে চাভেস যা-ই বলুন না কেন, মারিয়া রডরিগেজ এবং তাঁর বন্ধু জেনি ডিয়াজের মতো অনেকেই মনে করেন, নিজের হার মোটেও বরদাস্ত করতে পারবেন না চাভেস। ভোর সাড়ে তিনটে থেকে ভোট দেওয়ার লাইনে দাঁড়িয়ে দুই বান্ধবী। ডিয়াজ স্পষ্টই বললেন, “চাভেস কখনওই হার মেনে নিতে পারবেন না। তিনি হারলে গুন্ডারা রাস্তায় বেরিয়ে লোকজনকে ভয় দেখাবে।” ৩২ বছরের মিগুয়েল ভিল্লারোয়েলও এ বিষয়ে একমত। তিনি বললেন, “আমি পরিবর্তন চাই। আমি শান্তি চাই। আমি রাস্তায় বেরিয়ে শান্তিতে হাঁটতে চাই।” মিগুয়েল চান ক্ষমতায় আসুন এনরিকে। দেশে যে ভাবে খুন-খারাপি বেড়ে চলেছে, তাঁর জন্য উগো চাভেসই দায়ী মনে করেন তিনি। প্রার্থীদের অনুরোধেই যে সাত-সকাল থেকে পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে ঠায় দাঁড়িয়ে রয়েছেন, সেই কথাও স্বীকার করেছেন এঁদের প্রত্যেকেই।
রবিবার সকালে টুইটারে উগো চাভেস রীতিমতো উত্তেজিত ভাবেই লিখেছিলেন, “সুপ্রভাত! এ বার যুদ্ধ শুরুর পালা।” যুদ্ধে কে জেতেন, সেই উত্তর জানতেই মুখিয়ে রয়েছে বিশ্ব। |