আইনজীবীদের সঙ্গে এক পুলিশ অফিসারের গোলমালের জেরে মালদহ আদালত চত্বরে উত্তেজনা দেখা দেয়। শুক্রবার বেলা ১১ টা নাগাদ মালদহ আদালত চত্বরে ঘটনাটি ঘটেছে। দুই পক্ষ একে অপরের বিরুদ্ধে মারধর, টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ দায়ের করেছেন। পুলিশ ও আইনজীবীদের এই অভিযোগ ও পাল্টা অভিযোগের জেরে চাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে। জেলা পুলিশ সুপার জয়ন্ত পাল বলেন, “সমস্ত অভিযোগ খতিয়ে দেখে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” ঘটনার সূত্রপাত গত ১৪ সেপ্টেম্বর থেকে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, হবিবপুর থানার একটি মামলায় অভিযুক্ত কুমুদ মণ্ডল আদালতে আত্মসমর্পন করতে এসেছিলেন। তার আগে তাকে পুলিশ আদালত থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে মারধর করে আটকে রাখে বলে অভিযোগ ওঠে। অভিযুক্তের আইনজীবী আদালতে সব জানানোর পর মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট ২৪ ঘন্টার মধ্যে হবিবপুর থানাকে ওই অভিযুক্তকে আদালতে হাজির করার নিদের্শ দেয়। ১৫ সেপ্টেম্বর এবং পরে ২৯ সেপ্টেম্বর আদালতে হাজিরার দিন ঠিক হয়। ওই কুমুদ মণ্ডলের বাবা প্রমথনাথ মণ্ডল আদালতে বামনগোলা ও হবিবপুর থানার ইনচার্জ-সহ চারজন পুলিশ অফিসার এবং এক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানান। আদালত মামলা দায়ের করে পুলিশকে তদন্তের নির্দেশ দেয়। সেই সময় হবিবপুর থানার ওই ঘটনায় অভিযুক্ত এক সাব ইন্সপেক্টর কাজল চট্টোপাধ্যায় আইনজীবীদের আদালতের বাইরে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন বলে আাইনজীবীদের দাবি। এদিন ওই অফিসারের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে তাঁকে আদালতে হাজির করাতে গাজলের সিআই অভিজিৎ সাহা আদালতে আসেন। আদালত চত্বরে পুলিশ অফিসার কাজল চট্টোপাধ্যায়কে দেখে আইনজীবী ক্ষেপে যান। ক্ষুব্ধ আইনজীবীরা ওই পুলিশ অফিসারকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। ইংরেজবাজার থানা থেকে পুলিশ বাহিনী ও কমব্যাট ফোর্স আদালত চত্বরে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। মালদহ বার অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি দেবকিশোর মজুমদার জানান, ওই পুলিশ অফিসারের হুমকিতে আইনজীবীদের মধ্যে অসন্তোষ ছিলই। সবাই এদিন তাঁকে দেখে ক্ষোভে ফেটে পড়েন। তবে কেউ মারধর করেনি। উল্টে ওই অফিসার এক মহিলা আইনজীবীকে কটুক্তি করে টাকা ছিনিয়ে নেন। কয়েকজনকে মারধর করেন। দেবকিশোরবাবুর হুমকি, “মিথ্যা অভিযোগে পুলিশ একজন আইনজীবীকে ধরলেই আদালত অচল করে দেওয়া হবে।” দেবকিশোরবাবুর নামেও পুলিশ অফিসার থানায় অভিযোগ করেছেন। ওই অফিসার কাজলবাবু জানান, সিআই আমাকে আদালতে হাজির করাতে নিয়ে এসেছিলেন। আমাকেই দেখেই আনিজীবীরা তেড়ে আসেন। বেধড়ক মারধর করা হয়। পুলিশের পোশাক ছিঁড়ে দিয়েছে। পকেটে থাকা টাকাও ছিনিয়ে নেওয়া হয়। তিনি বলেন, “ইংরেজবাজার থেকে পুলিশ উদ্ধার করতে না এলে আইনজীবীরা মেরেই ফেলত। মালদহ বারের সহ-সভাপতি ও কয়েকজন আইনজীবীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করছি। আমি কাউকে হুমকি দিইনি।” |