সংস্কৃতি যেখানে যেমন

শেষ খেয়া
১ অক্টোবর বিশ্ব প্রবীণ দিবস উদযাপন করল জলপাইগুড়ি টাউন সিনিয়র সিটিজেনস্ ওয়েলফেয়ার ফোরাম। জলপাইগুড়ি রবীন্দ্র ভবনে আলোচনা সভা ও সঙ্গীতানুষ্ঠানের আয়োজন করেন তাঁরা। এই দিনটিতে বিভিন্ন ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অবদানের জন্য প্রবীণদের বাড়ি গিয়ে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। এ বার সংবর্ধিত হন চঞ্চল বসু, কল্যাণী দাশগুপ্ত ও রমেশচন্দ্র দাস। এ দিনের অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথিরা ছিলেন আলিপুরদুয়ারের বিধায়ক দেবপ্রসাদ রায় ও রাজগঞ্জের বিধায়ক শ্রী খগেশ্বর রায়। আলোচনায় অংশ নেন লেখক ও প্রাবন্ধিক উমেশ শর্মা, নাট্যব্যক্তিত্ব সমর চৌধুরী, অজিত বর্মন, সংস্থার সভাপতি শ্রী পরেশ চন্দ্র মন্ডল সহ অনেকেই। বিষয় ছিল, প্রবীণ সমস্যা ও বিকল্প সমাধান। এই মঞ্চে এ দিন সংস্থার বার্ষিক পত্রিকা ‘শেষ খেয়া’-এর প্রথম সংখ্যা প্রকাশিত হয়। আনুষ্ঠানিকভাবে পত্রিকাটি প্রকাশ করেন দেবপ্রসাদ রায়। পায়েল-এর শিশুদের নৃত্যানুষ্ঠান দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। দ্বিতীয় পর্বে সঙ্গীতানুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন প্রকাশ দেব, দেবাশিস সমাদ্দার, বারীন সাহা, অনিমেষ দত্তরায়, কস্তুরি দে ও শীলা দত্ত। বাঁশি বাজিয়ে শোনান কাঞ্চন সরকার। ২০০৮ এ তৈরি হওয়ার পর থেকে সংস্থাটি নানা রকম গঠনমূলক কাজে নিয়োজিত থেকে প্রতি বছর আয়োজন করে চলেছে চক্ষু শিবির, স্বাস্থ্য শিবির প্রভৃতি এবং শীতকালে দরিদ্র প্রতিবন্ধী মানুষের মধ্যে কম্বল বিতরণ অনুষ্ঠান। ওই দিন একটি শোভাযাত্রা শহর পরিক্রমা করে এবং ডিএম মারফত প্রবীণদের সমস্যাকে জাতীয় সমস্যার মর্যাদা প্রদান, দারিদ্র্যসীমার নীচে অবস্থানকারী প্রবীণদের হাসপাতালে সুযোগ সুবিধা, ইন্দিরা আবাস প্রকল্পে অগ্রাধিকার, রেল-বাসের মাসুলে ছাড় প্রভৃতি দাবি সংবলিত দাবিপত্র পাঠান মাননীয় মুখ্যমন্ত্রীর কাছে।

দ্যোতনার আড্ডায় দেবেশ রায়
জলপাইগুড়িতে সাহিত্য ও সংস্কৃতি জগতের মানুষের মুখোমুখি হলেন, তিস্তাপাড়ের বৃত্তান্তের স্রষ্টা দেবেশ রায় ৩০শে সেপ্টেম্বর। সুভাষ ভবনে আয়োজিত হয় ‘আড্ডা’। আয়োজক ৩৪ বছর পেরিয়ে আসা লিট ম্যাগাজিন দ্যোতনা। আড্ডার বিষয় ছিল, সময়ের সাহিত্য, এই সময়ের সংস্কৃতি। শুরু হল সীমা চৌধুরীর গাওয়া গান দিয়ে। পরে পুষ্পস্তবক ও উত্তরীয় দিয়ে সংবর্ধনা জানানো হয় শহরের গর্ব দেবেশ রায়কে। গবেষক দীপক রায়ের রাজবংশী সমাজ সংস্কৃতির কথা বইটি এই মঞ্চে দেবেশ রায় আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রকাশ করেন। আলোচনায় তিনি বলেন, “এই সময়ে আমাদের ভাষা ও সংস্কৃতির শেকড়ের অন্বেষণের প্রয়োজন।” বিনির্মাণ প্রসঙ্গ থেকে ইওরোপীয় নানা সাহিত্য পুরস্কারের সাথে জড়িয়ে থাকা রাজনীতির বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, “বুকার,পুলিতজার প্রভৃতি পুরস্কারের পেছনে আছে ইওরোপীয় বিপণন কৌশলের রাজনীতি। নোবেল ঘোষণার পরে ১৫ বছর বেঁচে থেকেও টলস্টয় কেন তা পাননি সেই প্রসঙ্গও তিনি তুলে ধরেন। শেষে তিনি উত্তরবাংলার লেখক সাহিত্যিকদের আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে কাজ করে যাওয়ার আহ্বান জানান তিনি। এ দিনের সভায় সভাপতিত্ব করেন, লোকসংস্কৃতির গবেষক বিমলেন্দু মজুমদার।।
তথ্য: মৌসুমী মজুমদার

ঋত্বিক-এর স্বাধীনতা
ঋত্বিকের নতুন নাটক ‘স্বাধীনতা’ শিলিগুড়ি দীনবন্ধু মঞ্চে মঞ্চস্থ হল ২৭ সেপ্টেম্বর। মলয় ঘোষের নির্দেশনায় ওই নাটকে ঘুরে ফিরে এসেছে একটি প্রশ্ন, তা হল স্বাধীনতা কি নিছকই ছুটির দিন! অথবা পতাকা-বিস্কুট-জিলিপিতে মোড়া আস্বাদন! গতানুগতিক ওই উদ্যাপনেই তো তৃপ্ত অনেকে। অন্যরকম ভাবনাও আছে। সেই অন্য ভাবনার জগতের দু’জন মানুষ স্বরাজ কুণ্ডু এবং সূর্যকান্ত। প্রথমজনের জন্ম ১৯৪২ সালের ১৫ অগস্ট, তাই স্বাধীনতার সমস্ত অপূর্ণতার জন্য সে নিজেকে দায়ী করে। পরিচিত প্রতিবেশী তাঁকে খ্যাপাটে আখ্যা দিয়ে স্বস্তি পায়। কিন্তু নিজের জন্মদিনে, স্বাধীন ভারতের জন্মদিনে সুস্থির থাকতে পারে না ওই মানুষটি। সেই অস্থিরতা তাঁকে তাড়িয়ে নিয়ে যায় শান্তিনিকেতনের কাছে এক আদিবাসী গ্রামে। স্বাধীনতা কী ভাবে উপভোগ করছে ভারতের অরণ্যচারী আদিম অধিবাসীরা তা নিয়ে নিজের পত্রিকায় ‘স্টোরি’ লেখার জন্যই তাঁর ওই অভিযান। অন্যদিকে সূর্যকান্তকে তাঁর ষোল বছর বয়সে বাবা মধ্যরাতে হাতে তুলে দিয়েছিল জাতীয় পতাকা। সেদিন থেকে প্রতিবছর স্বাধীনতা দিবসে পতাকা তোলা তাঁর অভ্যাস। কিন্তু এ বার স্বাধীন ভারতের পতাকা ওড়ানোর মতো একখন্ড মুক্ত জমি কোথাও পাওয়া যাচ্ছে না। নানা জায়গায় প্রত্যাখ্যাত হয়ে তিনিও এসে উপস্থিত হন সেই আদিবাসী গ্রামে। যেখানে থাকেন হরিহর হাঁসদা, হরিহর মুর্মুরা। একজন হরিহরের মেয়ে দুগ্গার প্রশ্ন, ‘বাবা, স্বাধীনতা মানে কী!’ সেই প্রশ্নের উত্তর সন্ধান এই নাটকের মূল সুর। মানুষ হিসেবে আমরা কোথায় কতটুকু স্বাধীন। এক স্বাধীনতা দিবসকে সামনে কেন্দ্রে রেখে সেই মৌলিক প্রশ্নকে নিয়ে নাড়াচাড়া করেছেন নাট্যকার। ‘শিকড়ের খোঁজে মরিচঝাঁপির’ পরপরই শিলিগুড়ি ঋত্বিকের আরও একটি সাহসী প্রযোজনা। স্বাধীনতা, সুকান্ত গঙ্গোপাধ্যায়ের গল্প এবং শোভন তরফদারের প্রবন্ধ সূত্র অবলম্বনে মলয় ঘোষের এই নির্মাণ বলতে চায়, দিন বদলেও কিছু কিছু অমোঘ অপরিবর্তনীয়তার কথা। এই অপরিবর্তন যেন প্রান্তবাসীদের নির্মম নিয়তি। হরিহর হাঁসদার চরিত্রে অভিনয় করেছেন মলয় ঘোষ। নির্দেশকের অভিনয় নাট্যপ্রেমীদের মুগ্ধ করেছে। ঋত্বিকের এই নবতম প্রযোজনা গালিলিওর জীবন, স্বাদ, শিকড়ের খোঁজে মরিচঝাঁপি, তাদের শ্রেষ্ঠ প্রযোজনাগুলির তালিকায় অন্যতম সংযোজন হয়ে থাকবে।
তথ্য: প্রণব ভট্টাচার্য

দীনবন্ধুতে নাট্যোৎসব
‘ঋত্বিক উৎসব-২০১২’ শুরু হচ্ছে শিলিগুড়ি দীনবন্ধু মঞ্চে। আয়োজক শিলিগুড়ি ঋত্বিক নাট্য সংস্থা। আগামী রবিবার থেকে উৎসব চলবে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত। পাঁচ দিনের উৎসবে রাজ্যের বিভিন্ন নাট্য দল নাটক পরিবেশন করবে। এ ছাড়াও রবিবার রামকিঙ্কর হলে অনুষ্ঠিত হবে ‘বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপটে বাংলা থিয়েটারের অভিমুখ’ শীর্ষক আলোচনা সভা। উপস্থিত থাকবেন বিভিন্ন নাট্য ব্যক্তিত্ব। প্রথম দিন বালুরঘাট নাট্যকর্মী প্রযোজিত ‘ঘরকথা’ ও গোবরডাঙ্গা শিল্পায়ন প্রযোজিত ‘তারাপ্রসন্নের কীর্তি’। পরদিন গোবরডাঙ্গা শিল্পায়নের ‘কর্ণেলকে কেউ চিঠি লেখে না’। ৯ অক্টোবর মালদহ মালঞ্চ প্রযোজিত ‘রাণীঘাটের বৃন্তান্ত’। ১০ অক্টোবর, আয়োজক সংস্থার ‘স্বাধীনতা’। উৎসবের শেষ দিন ১১ অক্টোবর বহরমপুরের ঋত্বিক প্রযোজিত ‘চতুরঙ্গ’ মঞ্চস্থ হবে বলে জানিয়েছেন উদ্যোক্তা সংস্থার সভাপতি মলয় ঘোষ ও সম্পাদক কুশল বসু।

বালুরঘাটের হলে বিদীপের সিনেমা
পূর্ণ দৈর্ঘ্যের ছবি করে সাড়া ফেলে দিলেন বালুরঘাটের বিদীপ লাহিড়ী। শুক্রবার বালুরঘাটের একটি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেল ছবিটি। দক্ষিণ দিনাজপুরের তপন-এর চৌরঙ্গীর বাসিন্দা বিদীপ ছবির প্রযোজক, পরিচালক ও নায়ক। নায়িকার ভূমিকায় চুমকি চৌধুরী রয়েছেন। বিদীপ বলেন, “বালুরঘাট নাটকের শহর। আমাদের কেবল নাটকে আটকে থাকলে চলবে না। বড় আঙ্গিকে পৌঁছতে চলচ্চিত্রকে মাধ্যম করে আরও এগোতে হবে।”

স্মরণ
ছবি: অমিত মোহান্ত।
মোহিত চট্টোপাধ্যায়ের স্মরণে গত বুধবার বালুরঘাট নাট্যতীর্থ মঞ্চে ‘মুখ’ এবং আগামী কোনও দিন’ নামে দুটি নাটক মঞ্চস্থ হল। নির্দেশনায় বালুরঘাটের শিল্পী রবীন্দ্রনাথ সাহা। উচ্চ শিক্ষিত হয়েও চাকরি ও কর্মসস্থানের অভাবে বর্তমান তরুণ প্রজন্ম কি করে সমাজের মুল স্রোত থেকে সরে চোরাবালিতে ডুবে যাচ্ছেন, ‘আগামী কোনও দিন’ নাটকে তা তুলে ধরেছেন নির্দেশক।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.